প্রিয়াঙ্কার মৃত্যু নিয়ে ধোঁয়াশা

প্রিয়াঙ্কা
প্রিয়াঙ্কা

রাজধানীতে প্রিয়াঙ্কা দত্ত নামের এক ছাত্রীর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। ছিনতাইকারীর হামলা নাকি বাসের ধাক্কায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে, সে বিষয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করেছে তাঁর পরিবার।
গত শনিবার সকালে কাঁটাবন মোড় থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক তরুণীর নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁকে মৃত ঘোষণা করা হয়। বিকেলে স্বজনেরা হাসপাতালে এসে তাঁর লাশ শনাক্ত করেন। তবে তাঁর মৃত্যুর কারণ নিয়ে রহস্য থেকে যায়।
পরিবার জানায়, প্রিয়াঙ্কা (২২) রাজধানীর ধানমন্ডির ভূঁইয়া একাডেমির বিবিএ ষষ্ঠ সেমিস্টারের শিক্ষার্থী ছিলেন। এ ছাড়া তিনি ধানমন্ডিতে ল্যাবএইড হাসপাতালের কলসেন্টারে খণ্ডকালীন কাজ করতেন। সপ্তাহে তিন দিন তিনি সেখানে কাজ করতেন। তিন ভাইবোনের মধ্যে প্রিয়াঙ্কা ছিলেন দ্বিতীয়। প্রিয়াঙ্কার মা ডায়ানা দত্ত প্রথম আলোকে বলেন, ঘটনার দিন সকাল সাতটার দিকে প্রিয়াঙ্কা বাসা থেকে বের হয়ে যান। এরপর পৌনে একটার দিকে তাঁর এক সহকর্মী এসে জানান যে প্রিয়াঙ্কা কর্মস্থলে যাননি। তাঁর মুঠোফোনও বন্ধ রয়েছে। এর পরপরই তাঁরা বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়স্বজনের কাছে খোঁজখবর নেওয়া শুরু করেন। পরে এক সাংবাদিক প্রিয়াঙ্কার এক বান্ধবীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একটি অজ্ঞাতনামা লাশ রয়েছে জানালে পরিবারের সদস্যরা সেখানে গিয়ে তাঁকে শনাক্ত করেন।
কর্মস্থলে যাওয়ার পথে প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হয় তাঁর সহকর্মী মোশাররফ হোসেনের। তিনি বলেন, ‘সকাল সাড়ে সাতটা থেকে প্রিয়াঙ্কার কাজ শুরু হয়। সাতটা ২০ মিনিটে প্রিয়াঙ্কাকে ফোন করে জানতে চাই তিনি এসেছেন কি না। তখন প্রিয়াঙ্কা জানান, তিনি বাসে পল্টন এলাকায় রয়েছেন। তবে প্রতিদিন যে বাসে আসেন, সে বাস পাননি। ফার্মগেটগামী একটি বাসে উঠেছেন। শাহবাগ নেমে রিকশায় করে তিনি আসবেন বলে জানান। এরপর সাড়ে আটটা পেরিয়ে গেলেও প্রিয়াঙ্কা না আসায় আবারও ফোন দিই। কিন্তু ফোন বন্ধ পাই। এরপর কাজ শেষে প্রিয়াঙ্কার খোঁজে তাঁর বাসায় যাই।’
শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক শফিয়ার রহমান বলেন, ওই দিন সকাল থেকেই প্রচণ্ড বৃষ্টি হচ্ছিল। প্রিয়াঙ্কার দেহ শাহবাগ থেকে কাঁটাবনগামী রাস্তায় কাঁটাবন সেন্ট্রাল মসজিদের উত্তর ফটক থেকে একটু সামনে পড়ে ছিল। কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য বাসা থেকে বের হওয়া এক নারী ডাক্তার এবং একজন রিকশাচালক তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
শাহবাগ থানার ওসি আববুকর সিদ্দিক বলেন, উদ্ধারকারী ডাক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তিনি বলেছেন, প্রিয়াঙ্কা রিকশায় করে এসেছিলেন কি না, তা তিনি জানেন না। ওই রিকশাচালককেও তিনি তা জিজ্ঞেস করেননি।
প্রিয়াঙ্কার বাবা নারায়ণ দত্ত একজন স্বর্ণ ব্যবসায়ী। তিনি বলেন, ‘প্রিয়াঙ্কা কীভাবে মারা গেছেন, তা আমরা জানতে চাই। ঘটনাটি সম্পর্কে জানা গেলেই তবে মামলা করব।’