ফজলি আম কার, জানা যাবে বিকেল ৪টার পর

ফজলি আম
ফাইল ছবি

ফজলি আমের মালিকানা নিয়ে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের মধ্যে শুনানি হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর মতিঝিলে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, ডিজাইন অ্যান্ড ট্রেডমার্ক অধিদপ্তরে এ বিষয়ে শুনানি হয়। অধিদপ্তরের রেজিস্ট্রারের সভাপতিত্বে বেলা ১১টায় শুনানি শুরু হয়। বেলা দেড়টা পর্যন্ত শুনানি চলে।

শুনানি শেষে অধিদপ্তরের রেজিস্ট্রার ও অতিরিক্ত সচিব জনেন্দ্রনাথ সরকার প্রথম আলোকে বলেন, শুনানিতে উভয় পক্ষ তাদের দাবির সপক্ষে প্রয়োজনীয় তথ্য ও দলিলাদি উপস্থাপন করেছে। এখনো কোনো সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়নি। আজ বিকেল সাড়ে চারটার পর সিদ্ধান্ত জানা যাবে।

গত ৬ অক্টোবর আমটির জিওগ্রাফিক্যাল ইনডিকেশন বা ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) নাম হয় ‘রাজশাহীর ফজলি আম’। রাজশাহী ফল গবেষণাকেন্দ্রের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ স্বীকৃতি দেওয়া হয়। শিল্প মন্ত্রণালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব পেটেন্ট, ডিজাইন অ্যান্ড ট্রেডমার্ক তাদের ‘দ্য জিওগ্রাফিক্যাল ইনডিকেশন (জিআই)’-এর ১০ নম্বর জার্নালে নিবন্ধন ও সুরক্ষা আইন-২০১৩-এর ১২ ধারা অনুসারে তা প্রকাশ করে। এই স্বীকৃতির জন্য ২০১৭ সালের ৯ মার্চ আবেদন করা হয়েছিল।

কিন্তু চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে গত নভেম্বরে ফজলি আমকে চাঁপাইনবাবগঞ্জের দাবি করে রাজশাহীর জিআইয়ের বিরোধিতা করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে শিল্প মন্ত্রণালয়ের পেটেন্ট, ডিজাইন অ্যান্ড ট্রেডমার্ক অধিদপ্তর এ শুনানির আয়োজন করে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের পক্ষে চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মুনজের আলমের নেতৃত্বে সাত সদস্যের প্রতিনিধিদল শুনানিতে অংশ নেয়।

মুনজের আলম প্রথম আলোকে বলেন, উৎপত্তি, ঐতিহ্য, উৎপাদন ও বিপণনের ভিত্তিতে জিআই দেওয়া হয়। ফজলি আমের সবকিছু চাঁপাইনবাবগঞ্জের পক্ষে। ১৯২৮ থেকে ১৯৩৫ সালে করা ভারতের ‘সার্ভে অ্যান্ড সেটেলমেন্ট অপারেশনস ইন দ্য ডিস্ট্রিক্ট অব মালদা’ বইয়ে লেখা আছে, ফজলি আম চাঁপাইনবাবগঞ্জে হতো। এ ছাড়া দেশের মোট উৎপাদনের অর্ধেকের বেশি ফজলি আম উৎপাদন করা হয় চাঁপাইনবাবগঞ্জে। তাঁরা এসব বিষয় শুনানিতে উপস্থাপন করেছেন।

অন্যদিকে, রাজশাহীর পক্ষে চার সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন রাজশাহী ফল গবেষণাকেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আলীম উদ্দীন।

আলীম উদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ফজলি মূলত ভারতের মালদহের ফজলি। কিন্তু তা রাজশাহীর ফজলির সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। তবে তা সম্পূর্ণ আলাদা। রাজশাহীর বাঘা উপজেলায় অবস্থিত প্রায় ৫০০ বছরের পুরোনো ঐতিহাসিক বাঘা মসজিদের অভ্যন্তরীণ দেয়ালের টেরাকোটায় ফজলি আমের প্রতিকৃতি রয়েছে। এ ছাড়া প্রায় ২০০ বছর আগে থেকে রাজশাহীর বাঘা এলাকার ফজলি আম ‘বাঘা ফজলি’ নামে কলকাতার বাজারে সমাদৃত ছিল। তাঁরা এই বিষয়গুলো শুনানিতে তুলে ধরেছেন।