দিনাজপুরে ইতালির নাগরিক চিকিৎসক ও ধর্মযাজক পিয়েরো পিচমকে (৬৪) হত্যাচেষ্টার ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা হয়েছে। মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে পুলিশের গোয়েন্দা শাখাকে (ডিবি)। তবে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এ ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
গত বুধবার সকালে দিনাজপুর শহরে দুর্বৃত্তদের গুলিতে আহত হন পিয়েরো পিচম। গুলি তাঁর কাঁধ ভেদ করে বেরিয়ে যায়। দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার পর ওই দিনই বিকেলে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স করে তাঁকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে পাঠানো হয়।
দিনাজপুরের জেলা প্রশাসক মীর খায়রুল আলম গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পিয়েরো পিচমের অবস্থার উন্নতি হয়েছে। তবে তিনি তলপেটে ব্যথার কথা জানিয়েছেন। চিকিৎসকেরা তাঁকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন।
দিনাজপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খালেকুজ্জামান বলেন, বুধবার রাত ১১টার দিকে থানায় মামলা করেছেন কসবা মিশনের দায়িত্বে নিয়োজিত ফাদার সিলাস কুজুর। মামলায় অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসীদের আসামি করা হয়েছে। পুলিশ সুপারের নির্দেশে গতকাল মামলাটি তদন্তের জন্য ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়েছে।
দিনাজপুরের পুলিশ সুপার মো. রুহুল আমিন গতকাল বলেন, ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা দুর্বৃত্তদের কাউকে চিনতে পারেননি। দুর্বৃত্তদের খুঁজে বের করতে মাঠে নেমেছে পুলিশ। শহরজুড়ে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। তবে কোনো নিরীহ মানুষ যেন হয়রানির শিকার না হয়, পুলিশ সেদিকে নজর রাখবে।
গতকাল বেলা ১১টার দিকে ফাদার পিয়েরো পিচমের মূল কর্মস্থল দিনাজপুর শহরের সুইহারী নাভারা মিশনে গিয়ে দেখা যায়, প্রবেশপথে কড়া পুলিশি পাহারা। সেখানে আসা-যাওয়া করা লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। মিশনের ইনচার্জ ফাদার জন বাপ্তিস্তা জাংকি প্রথম আলোকে বলেন, ‘বুধবারের ঘটনার পর থেকে আমাদের সবার মন খারাপ। আমরা এই দেশের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর সেবা করতে নিরলসভাবে কাজ করতে এসেছি।’
জন বাপ্তিস্তা বলেন, ১৯৮৭ সাল থেকে ফাদার পিয়েরো চিকিৎসাসেবা শুরু করেন। বর্তমানে যক্ষ্মা ছাড়াও ক্যানসার রোগে আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবায় কাজ করছেন তিনি।
নাভারা মিশন ক্যাম্পাসে ফাদার পিয়েরোর কর্মস্থল ক্যাথলিক চ্যারিটেবল ডিসপেনসারিতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে কাজ করছেন দীপ্তি নামের একজন সিস্টার। তিনি বলেন, ফাদার রোগী দেখে চিকিৎসা এবং ব্যবস্থাপত্র দিতেন। তাঁর অবর্তমানে রোগীদের কেবল প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বেশি অসুস্থ হলে রোগীদের হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।