বন্যায় ৩৫ লাখ বাংলাদেশি শিশু নিরাপদ পানির সংকটে: ইউনিসেফ

ফাইল ছবি

ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ভয়াবহ বন্যার শিকার বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল। এ অঞ্চলের ৩৫ লাখ শিশু নিরাপদ খাওয়ার পানির সংকটে রয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে এ পরিস্থিতি সামাল দিতে শিগগিরই প্রয়োজন ২৫ লাখ ডলার। গতকাল শুক্রবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় এক ভিডিও বার্তায় সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন জাতিসংঘের শিশু তহবিল–ইউনিসেফের বাংলাদেশ প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট।

বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, গত সপ্তাহে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়। আটকে পড়া মানুষকে উদ্ধারে উপদ্রুত এলাকায় মোতায়েন করা হয় সেনাবাহিনী।

শেলডন ইয়েট বলেন, এই অঞ্চলে ৩৫ লাখ শিশুর জরুরিভাবে নিরাপদ খাওয়ার পানির প্রয়োজন। মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই এ সংখ্যা ২০ লাখ বেড়েছে। বিশাল এলাকা পানির নিচে পুরোপুরি তলিয়ে গেছে। লোকজন খাবার ও পানি পাচ্ছে না। শিশুদের এখনই সাহায্য প্রয়োজন।

বন্যার কারণে পানিবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে বলে মনে করছেন ইউনিসেফের এই প্রতিনিধি। তাঁর ভাষ্যমতে, বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে ৪০ হাজারের বেশি পানির উৎস ও প্রায় ৫০ হাজার শৌচাগার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উপায় না পেয়ে লোকজনকে দূষিত পানি পান করতে হচ্ছে। এতে করে খুব দ্রুত পানিবাহিত রোগগুলো ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এরই মধ্যে ডায়রিয়াসহ অন্যান্য রোগ বাড়তির দিকে।

সিলেট শহরের আশপাশের ৯০ শতাংশ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। এ অঞ্চলের পাঁচ হাজারের বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেরও একই অবস্থা বলে জানান শেলডন ইয়েট। তিনি বলেন, বন্যার কারণে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া হয়েছে। সেখানে গাদাগাদি করে লোকজন অবস্থান করছে। নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা জন্য আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে পর্যাপ্ত সরঞ্জামের অভাব রয়েছে।

জাতিসংঘের এই কর্মকর্তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বন্যার কারণে গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সিলেট বিমানবন্দর বন্ধ ছিল। তখন ট্রাকে করে সহায়তা পাঠিয়েছে ইউনিসেফ। ইতিমধ্যে সংস্থাটি ১৭ লাখ ৫০ হাজার পানি বিশুদ্ধ করার ট্যাবলেট, ৯ হাজার পানির ড্রাম এবং নারী ও কিশোরীদের জন্য কয়েক হাজার পরিচ্ছন্নতার সরঞ্জাম পাঠিয়েছে। এ ছাড়া দুর্যোগের মধ্যে আলাদা হয়ে যাওয়া শিশুদের পরিবারের কাছে পৌঁছে দিতে কাজ করছে ইউনিসেফ।