বরগুনায় নৌকার কর্মী-সমর্থকদের ওপর স্বতন্ত্র প্রার্থীর নেতৃত্বে হামলা

স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী–সমর্থকদের হামলায় আহত নৌকার এক কর্মীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ১২ জুন বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে। ছবি: প্রথম আলো

বরগুনায় ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় প্রায় ৩০ জন আহত হয়েছেন। আজ শনিবার বেলা ১টার দিকে সদর উপজেলার আয়লা পাতাকাটা ইউনিয়নের নয়াবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আহত লোকজনের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁদের বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, সদর উপজেলার আয়লা পাতাকাটা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যানকে সঙ্গে নিয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মজিবুল হক কিসলু ওই ইউনিয়নের রামরা বাজারের দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় তাঁরা নয়াবাজার এলাকায় পৌঁছালে ওত পেতে থাকা আইলা পাতাকাটা ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে তাঁর লোকজন নৌকার কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা চালান। এ সময় তাঁরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে প্রায় ৩০ জনকে আহত করেন। ১৩টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর, দুটি মোটরসাইকেলে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেন ও ৯টি মোটরসাইকেল ছিনতাই করে নিয়ে যান। হামলায় নৌকার সমর্থক মজনুর শরীরে ও হেলাল শরীফের মাথায় এলোপাতাড়ি কোপানো এবং মাথায় টেঁটা নিক্ষেপ করা হয়। মজনু ও হেলালকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। দুজনের অবস্থাই আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মজিবুল হক । বেলা তিনটার দিকে সদর থানা-পুলিশের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

স্থানীয় বাসিন্দা কামাল আহমেদ জালাল বলেন, ‘আমরা নৌকার প্রার্থীর সঙ্গে প্রচারণা চালাচ্ছিলাম। এমন সময় স্বতন্ত্র প্রার্থীর নেতৃত্বে তিনিসহ তাঁর কর্মী-সমর্থকেরা আমাদের ওপর দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে অতর্কিতে হামলা চালান। হামলা থেকে বাঁচতে আমরা এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করি। সে সময় দুটি গুলি করা হয়।’

আওয়ামী লীগের প্রার্থী মজিবুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইউনিয়নের স্বতন্ত্র প্রার্থী মোশাররফ হোসেন ও তাঁর লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছেন। আমরা আমাদের গ্রামের বাড়ি থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করে কিছু দূর এগোলে স্বতন্ত্র প্রার্থীর নেতৃত্বেই আমাদের ওপর এই হামলা চালানো হয়। এতে আমার কর্মী-সমর্থকেরা গুরুতর আহত হন। কয়েকজনকে চিকিৎসার জন্য শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মোশাররফ হোসেন বরগুনা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেনের ছোট ভাই। দেলোয়ারের ইন্ধনে তাঁর ছোট ভাই বারবার আমাদের ওপর হামলা চালাচ্ছেন।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোশাররফ হোসেন ফোন কেটে দেন।

বরগুনা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শহিদুল ইসলাম খান প্রথম আলোকে বলেন, নৌকার কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটছে। এতে কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।