বহু মানুষ এখনো ‘মুভমেন্ট পাস’ নিচ্ছেন

টুইটার থেকে

করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় সাধারণ মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণে পুলিশের ‘মুভমেন্ট পাস’ এখনো বন্ধ হয়নি। তবে ৬ মে থেকে সারা দেশে জেলা শহরের ভেতরে গণপরিবহন চালুর পর এই পাসের প্রয়োজনীয়তা আর রয়েছে কি না, সে প্রশ্ন উঠেছে। অবশ্য কয়েক দিন ধরেই রাস্তায় মানুষের চলাচল বেড়েছে। পুলিশও ‘মুভমেন্ট পাস’ না নিয়ে রাস্তায় বের হওয়া মানুষকে আটকাচ্ছে না।

তবে পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, শপিং মল খুলে দেওয়া এবং গণপরিবহন চললেও বহু মানুষ এখনো ‘মুভমেন্ট পাস’ নিচ্ছেন। ৬ ও ৭ মে—এই দুই দিনে মোট ১ লাখ ৫৪ হাজার ৭০১টি মুভমেন্ট ইস্যু হয়েছে।

‘সর্বাত্মক লকডাউন’ শুরুর প্রথম দিনে গত ১৪ এপ্রিল ১ লাখ ৫৮ হাজার ৪০০টি করে মুভমেন্ট পাস ইস্যু করেছিল পুলিশ। পরদিনও সমপরিমাণ পাস ইস্যু করা হয়। এরপরের ২২ দিনের চিত্র অনেকটাই ভিন্ন।

গত ১৩ এপ্রিল পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ সংবাদ সস্মেলন করে ‘মুভমেন্ট পাসের’ ওয়েবসাইট (https://movementpass.police.gov.bd) উদ্বোধন করেন। ‘লকডাউন’ পরিস্থিতিতে জরুরি প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হলে এই ওয়েবসাইট থেকে পাস নেওয়ার কথা জানান তিনি। উদ্বোধনের পরই প্রতি মিনিটে ১৫ হাজার আবেদন জমা পড়তে থাকে। ওই দিন সন্ধ্যার দিকে তা বেড়ে হয় ২০ হাজার। তখন প্রথম ঘণ্টায় আবেদন জমা পড়ে ১ লাখ ২৫ হাজার। সার্ভারে অতিরিক্ত চাপ থাকায় মুভমেন্ট পাসের ওয়েব ঠিকানায় ঢুকতে সমস্যায় পড়তে হয় মানুষকে। জরুরি প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হওয়া এবং ফিরে আসার জন্য আলাদা মুভমেন্ট পাস নিতে হবে বলে তখন পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়।

রাজধানীর কাফরুলের বাসিন্দা মিজানুর রহমান গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, মাঝেমধ্যে তাঁকে মতিঝিলের কর্মস্থলে যেতে হয়। প্রথম দিকে পুলিশ মুভমেন্ট পাস দেখতে চাইলেও এখন আর দেখতে চায় না। তিনিও ঘর থেকে আর মুভমেন্ট পাস নিয়ে বের হন না।

অবশ্য পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (গণমাধ্যম ও জনসংযোগ) মো. সোহেল রানা প্রথম আলোকে বলেন, মানুষের চলাচলে মুভমেন্ট পাস শিথিলের কোনো নির্দেশনা এখনো দেওয়া হয়নি।

পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানায়, গত ১৩ এপ্রিল থেকে ৭ মে (গতকাল) বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত ‘মুভমেন্ট পাসের’ ওয়েবসাইটে মোট ২২ কোটি ৭৫ লাখ ২৮ হাজার বার ‘হিট’ হয়েছে। আর এ পর্যন্ত ২০ লাখ ৩৩ হাজার ১৩৩টি পাস ইস্যু করেছে।

পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-অপারেশনস) মোহাম্মদ আয়ুব গতকাল বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, এখনো চলাচলের জন্য মানুষ পুলিশের মুভমেন্ট পাস নিচ্ছেন। এই পাস ব্যবহার করা ব্যক্তিদের মধ্যে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন শহর অঞ্চলের মানুষ বেশি। অনেকে জরুরি কাজে বের হন, তাঁদের সঙ্গে পাস না থাকলেও মাঠপর্যায়ের পুলিশ সদস্যরা বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বিবেচনায় নেন।

পুলিশ সদর দপ্তরের এই কর্মকর্তা বলেন, সামনের দিনগুলোতে করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য আবারও কঠোর বিধিনিষেধ দেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। তখন চলাচলের জন্য মুভমেন্ট পাস লাগবেই। এ কারণে এই কার্যক্রম পুলিশ চালু রাখবে।