বাংলাদেশের জার্সি নিয়ে ফেসবুকে তোলপাড়

বিশ্বকাপের জার্সি গায়ে বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা। ছবি: প্রথম আলো
বিশ্বকাপের জার্সি গায়ে বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটাররা। ছবি: প্রথম আলো

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের বিশ্বকাপ জার্সি উন্মোচন করা হয় গতকাল সোমবার বিকেলে। এর পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সরব হয়ে ওঠে জার্সি নিয়ে আলোচনায়। প্রথম আলোর ফেসবুক পেজে বিষয়টি নিয়ে পাঠকদের মতামত জানতে চাওয়া হয়েছিল। তিন ঘণ্টায় সেখানে প্রায় ১০ হাজার পাঠক তাদের মতামত জানিয়েছেন। জার্সির রং ও ডিজাইন সন্তুষ্ট করতে পারেনি বেশির ভাগ পাঠককে। তবে অনেকে আবার জার্সির এই ডিজাইনটাকেই সুন্দর বলেছেন।

মাহবুবুর রহমান মাহবুব লিখেছেন, ‘হঠাৎ করে দেখলে অনেক সময় আয়ারল্যান্ড জাতীয় ক্রিকেট দল, আবার অনেক সময় সাউথ আফ্রিকা জাতীয় ক্রিকেট দল, আবার অনেক সময় পাকিস্তান জাতীয় ক্রিকেট দল মনে হয়!’

শেখ আবদুল্লা লিখেছেন, ‘এই সবুজ আমাদের না। এটা কি বাংলার সবুজ? সবুজের মাঝে লাল কোথায়! আমাদের পতাকার রং নেই, আমার দেশের ঘ্রাণ নেই।’

মিজানুর রহমান লিখেছেন, ‘আমার মতামত হচ্ছে, দুই দশক ধরে বিভিন্ন বড় ধরনের টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ জার্সি পরিবর্তন করে আসছে, আসবে, এটা স্বাভাবিক। তবে বাংলাদেশের সঙ্গে লাল-সবুজ না থাকলে ফাঁকা ফাঁকা লাগে। আমাদের সার্বিক ঐতিহ্য মুক্তিযুদ্ধ এবং সার্বভৌমত্বের প্রতীক এই লাল–সবুজ। তাই জার্সির কালার যেমনই হোক, লাল–সবুজ থাকতেই হবে। লাল–সবুজ ছাড়া বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের জার্সি নিতান্তই বেমানান।’

মাহবুব হাসান লিখেছেন, ‘সাধারণ জনগণের সেন্টিমেন্টে লাগে—এমন কাজ না করাই ভালো। আর এটা সংশোধনের সময় এখনো আছে যখন, আগের ডিজাইনারকে বাদ দিয়ে নতুন কোনো ডিজাইনার দিয়ে কাজ করানো হোক।’

ফারজানা ববি লিখেছেন, ‘জার্সি মারাত্মক ভালো। যেহেতু সবার অভিযোগ লাল নিয়ে, তাই মাঠে খেলোয়াড়দের লাল জুতো, লাল ক্যাপ, লাল রুমাল, লাল রঙের পানির বোতল সরবরাহ করা যেতে পারে।’

জার্সির এই ডিজাইন নিয়ে সন্তুটি জানিয়ে রাসেল ইমরান লিখেছেন, ‘আমার খুব ভালো লেগেছে। আর যারা পাকিস্তান পাকিস্তান করছে, তাদের বলি কী, পাকিস্তানের পতাকা সবুজ হওয়ার পরও বাংলাদেশের পতাকায় সবুজ কেন? আবেগী বাঙালি!’

মো. সাইফুর রহমান লিখেছেন, ‘জার্সির রং যদি কোনো দেশকে প্রতিনিধিত্ব করে, তবে টেস্ট ক্রিকেটে সাদার পরিবর্তে তারা নিজ নিজ দেশের পতাকার রং ব্যবহার করে না কেন? একটা দেশকে তার পতাকার রং কেবল হাইলাইট করতে পারে, প্রতিনিধিত্ব নয়। প্রতিনিধিত্ব করে তাদের দেশের নাম এবং তাদের খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স।

রিংকু লিখেছেন, ‘বাংলাদেশের জার্সিতে লাল রং নেই বলে যাদের চেতনায় লাগছে, তাদের উদ্দেশে বলছি, ১৯৯৯ বিশ্বকাপের সময় আপনাদের চেতনা কোথায় ছিল? সেই জার্সিতে তো লাল রং ছিল না! পতাকার সঙ্গে তাল মিলিয়ে জার্সি তৈরি করতেই হবে, এটার কেন নিয়ম নেই। ২০১৯ বিশ্বকাপের জার্সিটা এক কথায় অসাধারণ। বাংলাদেশের ক্রিকেটারের মতামত নিয়েই এ জার্সি সিলেক্ট করা হয়েছে।’

মাসুম ইসলামও রায় দিয়েছেন বর্তমান জার্সির পক্ষে। তিনি লিখেছেন, ‘খুবই ভালো লাগছে। অনেক দিন পরে নতুনত্ব পেয়েছি। সব দেশই তাদের জার্সিতে বিভিন্ন কালার আনে। তারা কেবল জাতীয় পতাকা নিয়ে পড়ে থাকে না। আশা করি, বোর্ড সামনে আরও অসাধারণ কিছু কালার দেখাবে। ধন্যবাদ পাপন স্যার।’

শেখ সাদেক পরামর্শ দিয়ে লিখেছেন, ‘শুধু বাংলাদেশ লেখাটা লাল কালি দিয়ে লেখা হোক। দেখবেন কত সুন্দর লাল–সবুজের বাংলাদেশ হয়।’

আরিফ তালুকদার লিখেছেন, ‘রঙে কোনো সমস্যা নেই। সবুজ হোক, লাল হোক, তাতে কী। পাকিস্তানের পতাকার রং বা জার্সি সবুজ হলে সেটা তো সবুজের দোষ না। কথা হচ্ছে, জার্সিটা দেখতেই ভালো লাগছে না। সবাইকে মরা মরা লাগছে। জার্সিতেই যদি সাহসিকতা প্রকাশ না পায়, মাঠেও তার প্রভাব পড়বে, যদিও অনেকেই বলবে, জার্সি দিয়ে তো খেলে না।’

তবে জার্সির চেয়ে ভালো খেলাটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ—এমনটাই মনে করেন নাজনীন সুলতানা। তিনি লিখেছেন, ‘সুন্দর হয়নি। কিন্তু জার্সির চেয়ে জরুরি তাদের ভালো খেলা। ম্যাশদের জন্য দোয়া আর ভালোবাসা থাকবে ইফতারের আগে আর জায়নামাজে।’

রকি খানও তেমনটাই মনে করেন। তিনি লিখেছেন, ‘জার্সি যেমন হয় হোক, সেমিফাইনালে ওঠার সম্ভাবনা কতটুকু—এইটা নিয়ে আলোচনা করা উচিত। খেলোয়াড়দের প্র্যাকটিস কেমন হচ্ছে? খেলোয়াড়দের নিরাপত্তার কী অবস্থা—এসব নিয়ে একটুও মাথাব্যথা নেই কারও।’

জিল্লুর রহমান লিখেছেন, ‘সবুজে লাল নেই কেন, সেই তর্ক অনর্থক। মাঠে খেলে যদি প্রতিপক্ষকে লাল বানিয়ে দিতে পারে, সেইটাই সার্থকতা। জার্সির লালে কী আসে–যায়!’