বাংলাদেশের জাহাজ এবার যাচ্ছে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে

ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডে‘কিল লেইং’ অনুষ্ঠানে অতিথিরা।
ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডে‘কিল লেইং’ অনুষ্ঠানে অতিথিরা।

বাংলাদেশের ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড এবার জাহাজ নির্মাণ করতে যাচ্ছে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্য।নিউজিল্যান্ডের পররাষ্ট্র ও বাণিজ্যবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জন্য একটি যাত্রীবাহী জাহাজ নির্মাণ করতে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রাম শিপইয়ার্ডে ১৩০তম ‘কিল’ স্থাপনের মাধ্যমে নতুন এই উদ্যোগের সূচনা হয়।

জাহাজ নির্মাতাপ্রতিষ্ঠানে ‘কিল লেইং’ অনুষ্ঠান, জাহাজ নির্মাণের শুভসূচনা পর্বের একটি ঐতিহ্যগত আনুষ্ঠানিকতা।অতিথিদের উপস্থিতিতে নির্মিতব্য জাহাজের তলদেশের একটি পাটাতনের অংশবিশেষ হাতুড়ি পেটানোর মাধ্যমে এর আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিউজিল্যান্ডের অনারারি কনসাল নিয়াজ আহমেদ।

নিউজিল্যান্ড মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি হ্যারি স্ট্রোনাচ এই প্রকল্পের সার্বিক সাফল্য কামনা করেন এবং ইয়ার্ড থেকে যথাসময়ে নির্মিত জাহাজ হস্তান্তরের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।জাহাজটির চুক্তিমূল্য ৬ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৫২ কোটি টাকা)।এটির নির্মাণকাজ ২০১৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হবে বলে শিপইয়ার্ড কর্তৃপক্ষ আশা প্রকাশ করে।

প্রধান অতিথি আনিসুল ইসলাম মাহমুদ তাঁর বক্তৃতায় ওয়েস্টার্ন মেরিনের কর্মকাণ্ডের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, এই নির্মাণশিল্প বৃহদায়তন ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তিসমৃদ্ধ জাহাজ রপ্তানির মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে যেমন অবদান রাখছে, তেমনি বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ব্যাপক পরিচিতি ও স্বীকৃতি লাভ করেছে।

শিপইয়ার্ডের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম বলেন, সবার সহযোগিতায় জাহাজ নির্মাণশিল্পে বাংলাদেশ এই কার্যাদেশ পেয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাখাওয়াত হোসেন এই আনুষ্ঠানিকতাকে ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ডের মুকুটে আরও একটি মুক্তার সংযোজন হিসেবে উল্লেখ করেন।তিনি আরও উল্লেখ করেন, এটি এই শিপইয়ার্ডে নির্মিত ১৩০তম নৌযান, যা প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্য বাংলাদেশে নির্মিত প্রথম যাত্রীবাহী জাহাজ।

ওয়েস্টার্ন মেরিন জানিয়েছে, জাহাজটি যুক্তরাজ্যভিত্তিক লয়েডস রেজিস্ট্রারের তত্ত্বাবধানে নির্মিত হবে। জাহাজটিতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা-ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে, যা সমুদ্রে সম্ভাব্য সব ধরনের বিপদ ও ঝুঁকি মোকাবিলায় সক্ষমতা অর্জন করবে। জাহাজটি ৬০ জন যাত্রীসহ ৫০ টন পণ্য ও সামগ্রী পরিবহন করতে পারবে। সমুদ্রে প্রতিকূল অবস্থা ও পরিস্থিতি মোকাবিলায় এবং সমুদ্রযাত্রার স্থায়িত্ব বিবেচনায় ৪৩ মিটার দীর্ঘ জাহাজটিতে যাত্রীদের সার্বিক আরাম আয়েশ ও নিরাপত্তার দিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি এই জাহাজের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। তাই জ্বালানি ব্যবহারের তীব্রতা নিয়ন্ত্রণের জন্য আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে।