বাংলাদেশের দুই নারী পাইলট এখন রোল মডেল

ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তামান্না-ই-লুৎফী (বাঁয়ে) ও ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট নাইমা হক (ডানে)। ছবি: জাতিসংঘ
ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তামান্না-ই-লুৎফী (বাঁয়ে) ও ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট নাইমা হক (ডানে)। ছবি: জাতিসংঘ

বাংলাদেশের প্রথম দুই নারী হেলিকপ্টার পাইলটের সুনাম এখন আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ছড়িয়ে পড়েছে। তাঁরা হলেন ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট নাইমা হক ও ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তামান্না-ই-লুৎফী। এক বছরের বেশি সময় হলো তাঁরা কঙ্গোতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে (মনুস্কো) কাজ করছেন। খোদ জাতিসংঘ বলেছে, এই দুই নারী পাইলট এখন কঙ্গোর নারীদের কাছে রোল মডেলে পরিণত হয়েছেন।

নাইমা ও তামান্নাকে নিয়ে জাতিসংঘ গত রোববার একটি বিশেষ ভিডিও প্রকাশ করেছে। ওই ভিডিওতে তাঁরা শান্তিরক্ষা মিশনে নারী পাইলট হিসেবে নিজেদের চ্যালেঞ্জিং কাজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেছেন। বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রথম দুই নারী হেলিকপ্টার পাইলট তাঁরা। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে তাঁরা বিমানবাহিনীর সামরিক পাইলট হিসেবে প্রথম স্বীকৃতি পান। এরপর ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে তাঁরা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের কাজে কঙ্গোতে যান। শান্তিরক্ষা মিশনে কাজ করা প্রথম বাংলাদেশি নারী পাইলটও তাঁরাই।

বাংলাদেশের জন্য তো বটেই, সাব-সাহারা অঞ্চলের যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ কঙ্গোর নারীরাও এখন এই দুই বাংলাদেশি নারীকে অনুপ্রেরণা মানছেন। জাতিসংঘ তাঁদের সম্পর্কে বলেছে, ‘কঙ্গোর নারীদের রোল মডেল হতে এই দুই নারী পাইলটকে অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এই অবস্থানে আসতে হয়েছে। এখনো প্রতিদিন তাঁদের অনেক বিপজ্জনক বাধা ডিঙোতে হয়। তবে তাঁরা সব কাজই সফলভাবে শেষ করেন।’

>নাইমা ও তামান্নাকে নিয়ে জাতিসংঘ একটি বিশেষ ভিডিও প্রকাশ করেছে
ভিডিওতে শান্তিরক্ষা মিশনে নিজেদের চ্যালেঞ্জিং কাজের অভিজ্ঞতা বর্ণনা
বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর প্রথম দুই নারী হেলিকপ্টার পাইলট তাঁরা
২০১৪ সালে তাঁরা বিমানবাহিনীর সামরিক পাইলট হিসেবে প্রথম স্বীকৃতি পান
২০১৭ সালের ডিসেম্বরে তাঁরা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে কঙ্গোতে যান

ভিডিওতে তামান্না বলেন, ‘আমি নিজেকে নারী হিসেবে দেখি না। আমি একজন শান্তিরক্ষী—এটাই আমার পরিচয়।’ নিজের পেশা নিয়ে তিনি বলেন, যন্ত্র নারী-পুরুষে ভেদ করে না। এ জন্যই পুরুষ আধিপত্যশীল সমাজে নারী হয়েও এই পেশায় আসতে পেরেছেন তিনি। তামান্না বলেন, দেশের প্রথম নারী সামরিক পাইলট হিসেবে যখন বিমানবাহিনীতে নিয়োগ পেয়েছিলেন, তখন তাঁর উত্তেজনা আকাশ ছুঁয়েছিল। নারীরাও এগোচ্ছে ভেবে ভীষণ গর্ব হয়েছিল।

নাইমা বলেন, ‘কঙ্গোর নারীরা আমাদের দেখে অনুপ্রেরণা পান। কিশোরীরা আমাদের দেখে তাদের লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার সংকল্প দৃঢ় করে। নিজেদের অধিকারের জন্য নিজেকেই লড়তে হবে—এটা নারীদের বুঝতে হবে। ভালো কিছু অর্জন করতে চাইলে তাদের কঠোর পরিশ্রম করতে হবে।’

এই দুই নারী পাইলট ভিনদেশে শান্তিরক্ষা কাজকে ‘মহৎ’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এর মাধ্যমে মানুষের সেবায় নিয়োজিত থাকতে পেরে তাঁরা গর্বিত। নারীদের এই পেশায় প্রতিষ্ঠা পাওয়ার পথ সুগম করতে তাঁরা যা যা প্রয়োজন, সব করবেন বলে জানান।