রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশগুলো আরও বেশি সম্পৃক্ত হবে বলে আশা করছে যুক্তরাষ্ট্র। আর বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের দ্রুত রাখাইনে ফেরত পাঠাতে চায়। তাই রোহিঙ্গাদের জন্য দীর্ঘমেয়াদি মানবিক সহায়তার পরিকল্পনা নিয়ে আগ্রহী নয়।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম সফররত মার্কিন উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী স্টিফেন বিগানের সঙ্গে আলোচনার পর সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
তিন দিনের সফরে মার্কিন উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী আজ ঢাকায় এসেছেন। সফরের প্রথম দিনে তিনি রাজধানীর একটি হোটেলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করেন।
রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে প্রতিবেশী দেশগুলো আরও বেশি করে সম্পৃক্ত হবে বলে আশা করেছেন মার্কিন উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী। ২২ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে যৌথ সহযোগিতা কর্মসূচির আয়োজন রয়েছে। স্বাভাবিকভাবে বাংলাদেশ এতে অংশগ্রহণ করবে। তবে আমরা বলেছি, আমরা দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনায় যেতে চাই না। আমাদের মূল লক্ষ্য রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানো।’
প্রতিমন্ত্রী জানান, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা প্রসঙ্গে মার্কিন উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী মিয়ানমারের ওপর বিভিন্ন অবরোধ আরোপের বিষয়টি মনে করিয়ে দেন। স্টিফেন বিগান বলেছেন, তাঁরা অপেক্ষা করছেন মিয়ানমারের ৮ নভেম্বরের নির্বাচন পর্যন্ত। এরপর যুক্তরাষ্ট্র সরকার আবার নতুন করে রাখাইনে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার ও প্রত্যাবাসন নিয়ে যোগাযোগ করবে।
মার্কিন উদ্যোগ ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজিতে (আইপিএস) বাংলাদেশের যোগদানের বিষয়টি স্টিফেন বিগান তুলেছেন কি না, জানতে চাইলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ইন্দো-প্যাসিফিক নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো আলোচনা হয়নি। এ বিষয়ে বাংলাদেশের অবস্থান হচ্ছে, সবার জন্য সমৃদ্ধিশালী একটি উন্মুক্ত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ইন্দো-প্যাসিফিক চাই। তবে ইন্দো-প্যাসিফিকে যোগ দেওয়ার কোনো বিষয় নেই।’
শাহরিয়ার আলম বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের আইপিএসের মতো আরও অনেক উদ্যোগ আছে এবং বাংলাদেশ কখনোই মনে করে না এগুলো সাংঘর্ষিক। শান্তিপূর্ণ ইন্দো-প্যাসিফিকের প্রত্যাশা বাংলাদেশও করে। বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রকে জানিয়েছি এবং তারা এ নিয়ে সন্তুষ্ট।’
বঙ্গবন্ধুর খুনি রাশেদ চৌধুরীকে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, এটি একটি স্পর্শকাতর বিষয়—এ বিষয় নিয়ে গণমাধ্যমের সামনে কথা বলাটা ঠিক হবে না।
বাংলাদেশের শিক্ষার্থীসহ অনেকে ভিসা পাচ্ছেন না। এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভিসা জটিলতা সমাধানে চেষ্টা করছেন তাঁরা।
কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন বিষয়ে শাহরিয়ার আলম বলেন, যদি যুক্তরাষ্ট্র আগে বের করতে পারে তবে ওই ভ্যাকসিন যাতে বাংলাদেশ কিনতে পারে, সে বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সহায়তা করবে।
বিল্ড আইনের অধীনে বাংলাদেশকে সহায়তা করার বিষয়ে অনীহা আছে যুক্তরাষ্ট্রের এবং বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার ও অন্যান্য বিষয় বিবেচনা করে যুক্তরাষ্ট্র একটি মুক্ত অঞ্চল গঠনের বিষয়ে উৎসাহিত করেছে বলে জানান শাহরিয়ার আলম।