বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির সার্বিক উন্নতি হয়নি

যুক্তরাজ্যের ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস
ছবি: টুইটার

যুক্তরাজ্য বলছে, ২০২০ সালে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির সার্বিক উন্নতি হয়নি। গতকাল বৃহস্পতিবার প্রকাশিত যুক্তরাজ্যের বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদনে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে এই মন্তব্য করা হয়েছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, করোনা মোকাবিলা নিয়ে সরকারের সমালোচনা ঠেকাতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োগসহ গণমাধ্যমের ওপর আরও বিধিনিষেধ এবং নারী ও কন্যাশিশুদের ওপর অব্যাহত সহিংসতা যুক্তরাজ্যের উদ্বেগের বড় জায়গা।

২০২০ সালেও বাংলাদেশের গণমাধ্যম চাপের মধ্যে ছিল বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার-হয়রানির কথাও প্রতিবেদনে স্থান পেয়েছে।

হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেমোক্রেসি: দ্য ২০২০ ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস রিপোর্ট’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বলা হয়, রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সূচকে ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ ১৫১তম স্থানে নেমে এসেছে, যা এ পর্যন্ত বাংলাদেশের সর্বনিম্ন অবস্থান।

‘আর্টিকেল ১৯’ নামের একটি বেসরকারি সংস্থাকে উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে বলা হয়, ৪৫১ জনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে। ৪১টি মামলায় ৭৫ জন সাংবাদিককে অভিযুক্ত করা হয়েছে। ৩২ জন সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত বছরের মার্চ মাসে সরকার খালেদা জিয়ার কারাদণ্ডাদেশ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে বাসায় থেকে চিকিৎসা নেওয়া ও বিদেশে না যাওয়ার শর্তে তাঁকে কারামুক্তি দেয়। গত সেপ্টেম্বর মাসে তাঁর কারাদণ্ডাদেশ স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানো হয়। ২০২০ সালজুড়ে তিনি ‘হাউস অ্যারেস্ট’ ছিলেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্বাধীনতা সীমিত। গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিরোধী প্রার্থীদের ওপর হামলা ও ভোটারদের ভয়ভীতি দেখানোর ব্যাপক অভিযোগ ছিল। গত নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে ভোটারদের হয়রানি, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও সহিংসতার আরও ঘটনা ঘটে।

হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেমোক্রেসি: দ্য ২০২০ ফরেন, কমনওয়েলথ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অফিস রিপোর্ট
ছবি: টুইটার

বাংলাদেশের মানবাধিকার সংগঠনগুলোর বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ক্রসফায়ার, নির্যাতনসহ ২২৫টি বিচারবহির্ভূত হত্যার জন্য আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো দায়ী। গত বছরের আগস্ট মাসে পুলিশের হাতে একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা নিহত হওয়ার পর বিচারবহির্ভূত হত্যার বিষয়টি জনগণের কাছে নজিরবিহীন গুরুত্ব পায়। এরপর বিচারবহির্ভূত হত্যার সংখ্যা কমেছে। অন্তত ৩১টি গুমের তথ্য রয়েছে ওই প্রতিবেদনে।

চলতি বছর যুক্তরাজ্য কূটনৈতিক সম্পৃক্ততা ও উন্নয়ন কর্মসূচির মাধ্যমে বাংলাদেশে সুশাসন ও গণতন্ত্র ইস্যুতে কাজ করা অব্যাহত রাখবে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।