বাজারে বেহাল রাস্তায় দুর্ভোগ
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার বড়হিত ইউনিয়নের প্রধান বাজার হচ্ছে নশতি বাজার। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, চিকিৎসাসেবা কেন্দ্র ও ইউনিয়ন পরিষদে যেতে হলে এই বাজার অতিক্রম করে যেতে হয়। বাজারের প্রধান সড়কগুলো বেহাল হওয়ার কারণে ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থীসহ এলাকার মানুষকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি জমে সড়কটি কাদায় ভরে যায়। পানি না শুকানো পর্যন্ত সড়কটি ব্যবহারের অনুপযোগী থাকে। পথচারীরা সড়কের পাশ ঘেঁষে ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের বারান্দা দিয়ে চলাচল করেন। সড়ক বেহাল হওয়ার কারণে দুই পাশের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে বেচাকেনা কমে যায়।
সড়কটি সংস্কার না হওয়ায় জনপ্রতিনিধিদের ওপর ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) ইউনিয়ন যুগ্ম সম্পাদক মো. আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, ‘স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচনের সময় প্রার্থীরা নশতি বাজারে এসে সড়ক সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়ে যান। আমরা সেই প্রতিশ্রুতির কথা শুনি। কিন্তু প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন দেখতে পাই না।’
নশতি বাজারের পল্লি চিকিৎসক মো. ফজলুল হক বলেন, তাঁরা চরম দুর্ভোগের মধ্যে আছেন। চারপাশে কেবল উন্নয়নের জোয়ারের কথা শোনেন, কিন্তু নশতি বাজারে সেই জোয়ারের ঢেউ এসে পৌঁছায়নি।
বড়হিত ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের কৃষকেরা উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করতে নশতি বাজারে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়েন। বাজারের লোকজন জানান, হাটের দিন কৃষকেরা সড়কের পাশে নানা পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসে বেচাকেনা করে বাড়ি চলে যান। গ্রাম্য বাজারের এটাই রীতি। কিন্তু সড়কগুলো কর্দমাক্ত থাকায় লোকজন চলাচল করতে পারে না। এতে কৃষকের পণ্য বিক্রিও বাধাগ্রস্ত হয়।
বাজারের পাশেই রয়েছে ইউনিয়নের একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কর্দমাক্ত সড়ক অতিক্রম করতে গিয়ে অনেক সময় শিক্ষার্থীদের পোশাক নষ্ট হয়ে যায়। ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে রোগী ও তাঁদের স্বজনদেরও। চিকিৎসাসেবা নিতে ইউনিয়ন পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে যেতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয় তাঁদের।
জানতে চাইলে বড়হিত ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. শাহজালাল দাবি করেন, তিনি ইট বিছিয়ে বাজারের সড়কটি সংস্কার করেছিলেন। কিন্তু শক্তিশালী সড়ক না হলে বাজারের সড়ক টেকসই হবে না। এ ধরনের সড়ক নির্মাণ বা সংস্কার করার মতো তহবিল ইউনিয়ন পরিষদের হাতে নেই। তিনি বলেন, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) তহবিল থেকে মাত্র ১ লাখ ২০ হাজার টাকা পেয়েছে বড়হিত ইউপি। এই অল্প টাকা দিয়ে নশতি বাজারের বেহাল সড়ক সংস্কার বা নির্মাণকাজ চালানো সম্ভব নয়। তবে স্থানীয় সরকার সহায়তা প্রকল্পের (এলজিএসপি) মাধ্যমে আপাতত সড়কে বালু ও খোয়া ফেলে সংস্কার করবেন বলে জানান তিনি।
ইউপি চেয়ারম্যানের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, চেয়ারম্যান তো বাজারে এসে মানুষের দুর্ভোগ দেখেন না। নির্বাচনের পর তিন বছর পার হতে চলল। এই তিন বছরে মানুষের দুর্ভোগ দূর করার কোনো চেষ্টা করেননি চেয়ারম্যান।