বান্দরবানে যুক্তরাষ্ট্রের আম ‘রেড পালমার’
বান্দরবানের বিভিন্ন বাগানে এখন আম পাকতে শুরু করেছে। জেলায় আম্রপালি, রুপালি, রাঙ্গুয়াইসহ কয়েকটি জাতের আমের চাষ হয়। তবে এসবের ভিড়ে এখন দেখা মিলছে যুক্তরাষ্ট্রের ‘রেড পালমার’ জাতের আম। দেখতে গাঢ় লাল রঙের ও মিষ্টি স্বাদের এ আম প্রতি কেজি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মৌসুমের শুরুতে অনলাইন বাজারে প্রতি কেজি এক হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন কোনো কোনো বাগানি। উৎসুক ও শৌখিন আমপ্রেমীরা দাম বেশি হলেও কিনছেন এই আম।
বাগানি পাসেন বম ১২টি অঙ্গজ (গ্রাফটিং) চারা চার বছর আগে লাগিয়েছেন। এ বছর থেকে ফলন শুরু হয়েছে। শুরুতে অনলাইনে প্রতি কেজি বিক্রি করেছেন ১ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত। ১২টি গাছের আম বিক্রি করে প্রায় পৌনে দুই লাখ টাকা পেয়েছেন তিনি।
চিম্বুক পাহাড়ে (বান্দরবান-থানচি সড়ক) গিয়ে দেখা যায়, কয়েকজন বাগানি পরীক্ষামূলকভাবে রেড পালমার চাষ করছেন। ম্রো ও বম বাগানিরা বলেছেন, এখনো এ প্রজাতির আম পাহাড়ে ও সমতলে তেমন পরিচিত নয়। চারাও সহজলভ্য নয়। দামও বেশি। এ জন্য তাঁরাও খুব বেশি চারা সংগ্রহ করতে পারেননি।
জেলা শহর থেকে আট কিলোমিটার দূরে ফারুকপাড়ার বাগানি পাসেন বমের বাগানে দেখা গেল রেড পালমার জাতের আম। টুকটুকে লাল আমের দিক থেকে নজর ফেরানো দায়। হৃষ্টপুষ্ট একেকটি আম ৪০০ থেকে ৭০০ গ্রাম পর্যন্ত হয়ে থাকে। সম্পূর্ণ আঁশমুক্ত আমটি খুব মিষ্টি। আঁটি খুব ছোট। গাছে থোকায় থোকায় নয়, একটি একটি করে ধরে।
এ আম যেকোনো পরিবেশে অভিযোজন করতে পারে। আমটি দেখতে সুন্দর হওয়ায় শৌখিন ভোক্তাদের আকৃষ্ট করে। তবে স্বাদে আম্রপালি, ল্যাংড়া, গোপালভোগের সমপর্যায়ের।
বাগানি পাসেন বম বলেন, তিনি ১২টি অঙ্গজ (গ্রাফটিং) চারা চার বছর আগে লাগিয়েছেন। এ বছর থেকে ফলন শুরু হয়েছে। অন্য আমের আগে ফলন হওয়ায় বিক্রিও ভালো হয়েছে। শুরুতে অনলাইনে বিক্রি করেছেন তিনি। প্রতি কেজির দাম রেখেছেন ১ হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত। ১২টি গাছের আম বিক্রি করে প্রায় পৌনে দুই লাখ টাকা পেয়েছেন তিনি।
বান্দরবান সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা ওমর ফারুক জানিয়েছেন, রেড পালমারকে রেড কুইনও বলা হয়। এটি বিদেশি প্রজাতির নতুন আম হওয়ায় পাহাড়ে ও সমতলে সীমিতসংখ্যক বাগানির কাছে পৌঁছেছে। বান্দরবানে পাঁচ-সাতজন বাগানির কাছে কিছু গাছ আছে। এ আম যেকোনো পরিবেশে অভিযোজন করতে পারে। আমটি দেখতে সুন্দর হওয়ায় শৌখিন ভোক্তাদের আকৃষ্ট করে। তবে স্বাদে আম্রপালি, ল্যাংড়া, গোপালভোগের সমপর্যায়ের।
খাগড়াছড়ির পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মুন্সি রাশিদ আহমেদ বলেছেন, রেড পালমার আমের মিষ্টতা ১৮ থেকে ২০ টিএসএস। এটি পাহাড়ি ও আর্দ্র পরিবেশের উপযোগী নয়। তবে বাগানিরা কেউ কেউ নিজের উদ্যোগে কিছু গাছ লাগিয়েছেন।