বাসযোগ্য ঢাকা শুধু কাগজেই

বুড়িগঙ্গা নদীর পাশের এই এলাকা (ঢাকা উদ্যান) ড্যাপে বন্যাপ্রবাহ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত। সে অনুযায়ী এখানে ভবন নির্মাণের সুযোগ নেই। কিন্তু বাস্তবে এই ভবনসহ শত শত বহুতল ভবন হয়েছে এ এলাকায়, নির্বিকার রাজউক। গত শুক্রবার তুরাগ নদ–সংলগ্ন মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যানে
ছবি: জাহিদুল করিম

পরিকল্পিত নগরায়ণের মাধ্যমে ঢাকাকে বাসযোগ্য করা হবে—এমন স্বপ্ন দেখিয়েই ২০১০ সালে বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) পাস করে সরকার। কিন্তু ড্যাপ পাসের পর আবাসন ব্যবসায়ীসহ প্রভাবশালীদের চাপে এটি চূড়ান্ত করতে মন্ত্রিসভা কমিটি গঠন করতে বাধ্য হয় সরকার। এই কমিটি গত ১০ বছরেও ড্যাপ চূড়ান্ত করতে পারেনি। তবে এই সময়ে কমিটি ড্যাপে দুই শতাধিক সংশোধনী আনে। এসব সংশোধনীর মাধ্যমে কার্যত জলাভূমি ভরাটের বৈধতা দেওয়া হয়েছে প্রভাবশালীদের।

নগর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ড্যাপের কার্যকারিতা কাগজ-কলমেই। শুধু ভবন তৈরির সময় ড্যাপ অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট জমির ব্যবহার দেখা ছাড়া এর কোনো কার্যকারিতা আসলে নেই। ড্যাপ বাস্তবায়নের উদ্যোগ না থাকায় ঢাকার জীববৈচিত্র্য রক্ষার যে সুযোগ ছিল, সেটিও নষ্ট হয়ে গেছে।

২০১০ সালে ড্যাপ পাসের সময় বাসযোগ্যতার বিচারে বিশ্বের ১৪০টি বড় শহরের মধ্যে ঢাকার অবস্থান ছিল একেবারে তলানিতে, ১৩৯তম। ঢাকার আগের অবস্থানে ছিল জিম্বাবুয়ের হারারে। তালিকাটি করেছিল যুক্তরাজ্যের প্রভাবশালী সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্ট-এর গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইকোনমিক ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (ইআইইউ)। তাদের সর্বশেষ প্রতিবেদন (২০১৯ সাল) অনুযায়ী, খারাপ অবস্থার দিক থেকে ঢাকার অবস্থান ১৩৮তম। ঢাকার পরের দুটি শহরের একটি নাইজেরিয়ার লাগোস অন্যটি যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ার দামেস্ক।

রাজধানীর সমস্যা নিয়ে ১৩ আগস্ট স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ড্যাপ বাস্তবায়ন না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ফজলে নূর তাপস। রাজউকের উদ্দেশে তিনি বলেন, ডিটেইল এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) করেছেন, আজ পর্যন্ত বাস্তবায়ন করতে পারেননি। কীভাবে রাজধানীকে গড়ে তুলতে হবে, সেই পরিকল্পনা দেন।

পাঁচ বছর মেয়াদি ড্যাপ প্রণয়ন করতেই লেগেছে ছয় বছর। এটি প্রণয়নের কাজ শুরু হয়েছিল ২০০৪ সালে। এর প্রথম খসড়া তৈরি হয় ২০০৭ সালে। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ড্যাপ পর্যালোচনার জন্য অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীকে (প্রয়াত) আহ্বায়ক করে ছয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দেয়। এই কমিটি মোট ৩৭টি সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দেয়।

২০১০ সালের ২১ জুন অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ড্যাপ অনুমোদন করে গেজেট প্রকাশের জন্য গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে ড্যাপ পর্যালোচনার জন্য একটি মন্ত্রিসভা কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী ২০১০ সালের ২২ জুন গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ড্যাপ অনুমোদনের প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করে। এরপর ওই বছরের ২৯ জুন আরেকটি প্রজ্ঞাপনে স্থানীয় সরকারমন্ত্রীর নেতৃত্বে মন্ত্রিসভা কমিটি ঘোষণা করা হয়। এই প্রজ্ঞাপনে কমিটির কাজ সম্পর্কে বলা হয়, ড্যাপ আরও বিশদভাবে পর্যালোচনা করে ‘চূড়ান্তকরণের’ জন্য এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন এই কমিটি আজও ড্যাপ চূড়ান্ত করার সিদ্ধান্ত জানায়নি।

ড্যাপে আনা সংশোধনীর বিষয়ে মন্ত্রিসভা কমিটির সদস্য ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে প্রথম আলো। এর মধ্যে তাজুল ইসলাম ২৩ আগস্ট জানান, তিনি মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর কমিটির যে দুটি সভা হয়েছে, এর কোনোটিতেই তিনি উপস্থিত ছিলেন না। ড্যাপ চূড়ান্ত না করে শুধু সংশোধন করা বিধি সম্মত কি-না জানতে চাইলে বলেন, এ ব্যাপারে তিনি অবগত নন।

অন্যদিকে ২১ আগস্ট সন্ধ্যায় প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদকে ফোন করা হলে তিনি এক ঘণ্টা পরে অথবা পরদিন সকালে ফোন করতে বলেন। প্রতিমন্ত্রীর কথা মতো এক ঘণ্টা পরে ফোন করলে তিনি কেটে দেন। পরের দুই দিন (২২ ও ২৩ আগস্ট) একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।

ড্যাপ আছে, নাকি নেই

২০১০ সালে পাস হওয়া ড্যাপের মেয়াদ ছিল ২০১৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। কথা ছিল, ২০১৬ সালের মধ্যে সংশোধিত নতুন আরেকটি ড্যাপ প্রণয়ন করা হবে, তখন আর আগের ড্যাপের প্রয়োজন থাকবে না। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নতুন ড্যাপ করা সম্ভব হয়নি। এমন অবস্থায় ২০১৬ সালের মার্চ মাসে ড্যাপের মেয়াদ ২০১৭ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। এরপর ড্যাপের মেয়াদ বাড়িয়ে নতুন করে আর কোনো প্রজ্ঞাপন হয়নি, নতুন কোনো ড্যাপও হয়নি। এই বিবেচনায় তিন বছর আগেই ২০১০ সালের ড্যাপের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে।

তবে রাজউকের নগর পরিকল্পনাবিদ ও সংশোধিত নতুন ড্যাপের (প্রক্রিয়াধীন) প্রকল্প পরিচালক আশরাফুল ইসলামের দাবি, ড্যাপ এখনো কার্যকর আছে। তিনি বলেন, নিয়ম অনুযায়ী, নতুন পরিকল্পনা না হওয়া পর্যন্ত আগের পরিকল্পনা বলবৎ থাকে।

জলাশয় ও কৃষিজমি ভরাটের বিষয়টি জায়েজ করার জন্যই ড্যাপকে জিইয়ে রাখা হয়েছে বলে মনে করেন স্থপতি ইকবাল হাবিব। তিনি বলেন, আন্তমন্ত্রণালয় কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে জলাশয় ভরাট কাজের বৈধতা দেওয়া হচ্ছে। রাজউক এলাকায় কোনো ভবন তৈরি করতে গেলে ড্যাপের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হয় সেখানকার ভূমি ব্যবহারটি কেমন। এর বাইরে ড্যাপের আর কোনো কার্যকারিতা নেই।

চূড়ান্ত না করে শুধুই সংশোধনী

২০১০ সালের ২৯ জুনের প্রজ্ঞাপনে গঠিত মন্ত্রিসভা কমিটির মূল দায়িত্ব ছিল ড্যাপ চূড়ান্ত করা। কিন্তু ড্যাপ চূড়ান্তকরণের পরিবর্তে এই কমিটি গত ১০ বছরে দুই শতাধিক সংশোধনী এনেছে। ১৯১টি প্রজ্ঞাপন প্রকাশের মাধ্যমে সংশোধনীগুলোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এসব সংশোধনীর মাধ্যমে ড্যাপের সুপারিশের বিপরীতমুখী সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। একরের পর একর বন্যাপ্রবাহ এলাকা ও জলাভূমি ভরাটের বৈধতা দেওয়া হয়েছে। এমনকি ড্যাপ যেসব আবাসন প্রকল্প বাতিলের সুপারিশ করেছে সেসব প্রকল্পও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

সর্বশেষ গত ফেব্রুয়ারি মাসেও ২২টি সংশোধনীর প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করা হয়। এই ২২টি সংশোধনীর মধ্যে ১৪টি সংশোধনীতে বন্যাপ্রবাহ এলাকা ও জলাধার ভরাট করে আবাসিক, শিল্প ও বাণিজ্যিক এলাকা গড়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

মন্ত্রিসভা কমিটির এমন সংশোধনীকে বেআইনি বলে মন্তব্য করেছেন ড্যাপের পর্যালোচনা কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করা বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, যে আইনে মহাপরিকল্পনাটি করা হয়েছে, সেই আইন অনুযায়ী মহাপরিকল্পনাটি সংশোধনের ক্ষমতা রাজউক চেয়ারম্যানকে দেওয়া হয়েছে। আন্তমন্ত্রণালয়ের কোনো কমিটিকে এই ক্ষমতা দেওয়া হয়নি। এই অর্থে কমিটির সংশোধনীগুলো বেআইনি।

বন্যাপ্রবাহ এলাকায় অবৈধ স্থাপনা

২০১০ সালের ড্যাপে রাজউকের আওতাধীন ৩৭ লাখ ৭ হাজার ৫৭৭ একর জায়গার মধ্যে বন্যাপ্রবাহ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত জায়গার পরিমাণ ছিল ৭৪ হাজার ৫৭১ একর। এর ১০ বছর পর রাজউকেরই এক জরিপ বলছে, ড্যাপ নির্ধারিত বন্যাপ্রবাহ এলাকায় ৭২ হাজার ১৮১টি ছোট-বড় স্থাপনা রয়েছে। এর ৯৯ দশমিক ৯৮ শতাংশই অবৈধ।

বন্যাপ্রবাহ এলাকায় অবৈধ স্থাপনা সম্পর্কে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, এসব এলাকা রক্ষার মূল দায়িত্ব রাজউকের। পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষা এবং ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ধরে রাখতে বন্যাপ্রবাহ এলাকা সংরক্ষণ করা জরুরি।

শিল্পকারখানা স্থানান্তর

অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা ২ হাজার ৭২৪টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান সরিয়ে নেওয়ার সুপারিশ করেছিল ড্যাপ। এতে বলা হয়, বন্যাপ্রবাহ এলাকায় এমনভাবে কিছু শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়েছে, যা কোনোভাবেই নগর পরিকল্পনায় স্থান দেওয়া যায় না। এসব শিল্পকারখানার মধ্যে টঙ্গী, গাজীপুর, তারাব, রূপগঞ্জ, কালীগঞ্জে ছিল ১৫২টি। নারায়ণগঞ্জ সদর, বন্দর, কদমরসুল, সোনারগাঁ, ডিএনডি এলাকায় ছিল ২ হাজার ১৩৫টি। কেন্দ্রীয় বা মূল ঢাকা শহরে ছিল ১৭টি, সাভার, গাজীপুর, আমিনবাজার এলাকায় ছিল ২৯৪টি, কেরানীগঞ্জে ১৪টি ও সাভার-আশুলিয়ায় ছিল ৬৫টি।

কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, এর বেশির ভাগই আগের জায়গাতেই আছে। উল্টো ক্ষেত্রে আগের জায়গাতেই কারখানা রাখার পক্ষে মত দিয়েছে ড্যাপ চূড়ান্তকরণসংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।

জলাভূমি ভরাট

নগর পরিকল্পনার দৃষ্টিকোণ থেকে একটি মহানগর বাসযোগ্য হতে গেলে এর মোট ভূমির ১০-১৫ শতাংশ জলাভূমি থাকতে হয়। ঢাকায় এটি আছে মাত্র ৩-৪ শতাংশ, যা আছে সেগুলোও ভরাট হচ্ছে। রাজউক এলাকায় জলাভূমি ভরাটের চিত্র নিয়ে গত বছর একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল নগর পরিকল্পনাবিদদের সংগঠন বিআইপি। স্যাটেলাইট ইমেজ বিশ্লেষণের মাধ্যমে তাদের গবেষণায় বলা হয়েছে, রাজউক এলাকায় প্রতিবছর গড়ে আড়াই হাজার একর জলাভূমি ভরাট হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ভরাট হয়েছে জলধারণ অঞ্চল (ওয়াটার রিটেনশন এরিয়া)। এরপরই রয়েছে বন্যাপ্রবাহ এলাকা।

এ বিষয়ে বিআইপির সাবেক সহসভাপতি মোহাম্মদ ফজলে রেজা বলেন, ঢাকার জলাভূমি ভরাট হয়ে যাচ্ছে। গত ১০ বছরে যে পরিমাণ জলাভূমি ভরাট হয়েছে, সেগুলো রক্ষা করা গেলে ঢাকায় জলাবদ্ধতার মাত্রা এতটা প্রকট হতো না।

বিআইপির গবেষণা অনুযায়ী, ২০১০ সালে যখন ড্যাপ করা হয়, তখন মূল ঢাকা শহরে জলাভূমি (বন্যাপ্রবাহ এলাকা, জলধারণ অঞ্চল ও জলাশয়) ছিল ৯ হাজার ৫৫৬ একর। ২০১৯ সালে এটি কমে হয়েছে ৬ হাজার ৭৩ একর। ৯ বছরে ভরাট হয়েছে মোট জলাভূমির ৩৬ শতাংশ। এই সময়ে সাভারে মোট জলাভূমির ১৫ শতাংশ, গাজীপুরে ১৭ শতাংশ, রূপগঞ্জে ৪১ শতাংশ ও কেরানীগঞ্জে ২১ শতাংশ ভরাট হয়েছে। এই হিসাবে ড্যাপে নির্ধারিত ১ লাখ ৯৩৭ একর জলাভূমির মধ্যে ২০১৯ সাল নাগাদ ভরাট হয়েছে ২২ হাজার ৫১৬ একর, যা মোট জলাভূমির প্রায় ২২ শতাংশ।

জলাভূমি ভরাট না করাসহ ঢাকাকে বাসযোগ্য করার উদ্দেশ্যেই ড্যাপের পর্যালোচনা কমিটি ৩৭টি সুপারিশ করেছিল বলে জানান নগর বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক নজরুল ইসলাম। তিনি ড্যাপের পর্যালোচনা কমিটির অন্যতম সদস্য ছিলেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, কোন এলাকায় বাণিজ্যিক ভবন হবে, কোন এলাকায় আবাসন গড়ে উঠবে বা কোথায় শিল্প কারখানা থাকবে, তার কিছু নিয়ম–নীতি রয়েছে। এসব মেনেই নগর পরিকল্পনা করতে হয়। ড্যাপের সুপারিশে তাই ছিল। এসব সুপারিশ বাস্তবায়নের দায়িত্ব ছিল রাজউক অথবা সরকারের। কিন্তু ১০ বছর পরে এসে দেখা যাচ্ছে, যে উদ্দেশ্যে সুপারিশগুলো করা হয়েছিল তা সফল হয়নি।