বিতর্কে সৃজনশীলতা বাড়ে

রাঙামাটিতে গতকাল অনুষ্ঠিত বিতর্ক প্রতিযোগিতার চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দলের সদস্যদের সঙ্গে অতিথিরা ষ ছবি: প্রথম আলো
রাঙামাটিতে গতকাল অনুষ্ঠিত বিতর্ক প্রতিযোগিতার চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দলের সদস্যদের সঙ্গে অতিথিরা ষ ছবি: প্রথম আলো

বিতর্ক লেখাপড়ারই অংশ। বিতর্কে শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটে। আগামীর কর্ণধার গড়ে তুলবে বিতর্ক। সুষ্ঠু ও যুক্তিনির্ভর সমাজ গঠনে বিতর্কচর্চার কোনো বিকল্প নেই। গতকাল রোববার দিনাজপুর, বরিশাল ও রাঙামাটি অঞ্চলে অনুষ্ঠিত পেপসোডেন্ট-প্রথম আলো বিতর্ক উৎসবে অতিথিরা এসব কথা বলেন। গত ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে দেশব্যাপী শুরু হয়েছে পেপসোডেন্ট-প্রথম আলো জাতীয় স্কুল বিতর্ক উৎসব-২০১৩। অঞ্চলভিত্তিক প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের নিয়ে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় উৎসব ও বিতর্ক ক্যাম্প।

দিনাজপুর অঞ্চলের চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দলের সঙ্গে অতিথিরা ষ ছবি: প্রথম আলো
দিনাজপুর অঞ্চলের চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দলের সঙ্গে অতিথিরা ষ ছবি: প্রথম আলো

দিনাজপুর অঞ্চল: সকাল নয়টা ৩০ মিনিটে দিনাজপুর জিলা স্কুল প্রাঙ্গণে দিনাজপুর জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. শাহীন আকতার জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে উৎসবের উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি বলেন, বিতর্ক লেখাপড়ারই অংশ। বিতর্কে শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটে।
উৎসবের প্রধান অতিথি হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক বলরাম রায় বলেন, যুক্তির মাধ্যমে বুদ্ধিদীপ্ত তর্কবাগীশরা একদিন দেশের হাল ধরবে।
বিতর্কে দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও ও পঞ্চগড় জেলার ১৬টি স্কুল অংশগ্রহণ করে। চূড়ান্ত পর্বে বিজয়ী হয়েছে ঠাকুরগাঁও জিলা স্কুল এবং রানার্সআপ হয়েছে পঞ্চগড় বিপি সরকারি উচ্চবিদ্যালয়। সেরা বিতার্কিক হয়েছে দিনাজপুর কলেজিয়েট বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর রাবেয়া বশরী। এদের হাতে ট্রফি তুলে দেন অতিথিরা। চাঁদগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের সহকারী অধ্যাপক মারুফা বেগম, দিনাজপুর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক ভূপেন্দ্রনাথ মুখার্জি, অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. সফিকুল ইসলাম প্রমুখ সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন।

বরিশাল সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের বিতার্কিকেরা অতিথিদের কাছ থেকে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি গ্রহণ করছে ষ ছবি: প্রথম আলো
বরিশাল সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের বিতার্কিকেরা অতিথিদের কাছ থেকে চ্যাম্পিয়ন ট্রফি গ্রহণ করছে ষ ছবি: প্রথম আলো

বরিশাল অঞ্চল: সকাল ১০টায় সরকারি বালিকা বিদ্যালয় মিলনায়তনে দিনব্যাপী বিতর্ক উৎসবের উদ্বোধন করেন শিশু সংগঠন খেলাঘরের জেলা সভাপতি জীবনকৃষ্ণ দে। তিনি বলেন, ‘আমাদের সহশিক্ষা কার্যক্রমের দিকে নজর বাড়াতে হবে। আগামীর কর্ণধার গড়ে তুলবে বিতর্ক।’ বিকেলে বিতর্কের চূড়ান্ত পর্বে বিজয়ী হয় বরিশাল সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় এবং রানার্সআপ হয় বরিশাল জিলা স্কুল। সেরা বিতার্কিক হয়েছে ব্যাপ্টিস্ট মিশন বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের এলিন বিশ্বাস। সমাপনী অনুষ্ঠানে এদের হাতে মেডেল ও ট্রফি তুলে দেন অতিথিরা। এ ছাড়া অংশগ্রহণকারী সবাইকে সনদপত্র ও টিশার্ট দেওয়া হয়। সমাপনী অনুষ্ঠানে সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহবুবা হোসেন বলেন, বিতর্ক শিক্ষার্থীদের সৃষ্টিশীল মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। বরিশাল জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, সত্যিকার দেশপ্রেমিক নাগরিক হতে বিতর্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। সেরা বিতার্কিক হয়ে এলিন বিশ্বাস জানায়, ‘মনে করিনি সেরা হব। এখন আমার বিশ্বাস আরও দৃঢ় হয়েছে। আমি পারি, পারব।’ উৎসবে বরিশাল ও ঝালাকাঠি জেলার ১৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিতর্কের দল অংশ নেয়। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো: ঝালকাঠি সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, ঝালকাঠি সরকারি হরচন্দ্র বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, তালুকদার হাট স্কুল অ্যান্ড কলেজ, বরিশাল মহিলা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, কলেজিয়েট মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আছমত আলী খান ইনস্টিটিউশন, হালিমা খাতুন বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ব্যাপ্টিস্ট মিশন বালক উচ্চবিদ্যালয়, ব্যাপ্টিস্ট মিশন বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, বরিশাল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, অক্সফোর্ড মিশন হাইস্কুল, উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বরিশাল জিলা স্কুল ও বরিশাল সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়।

রাঙামাটি অঞ্চল: গতকাল সকাল সাড়ে নয়টায় রাঙামাটি সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে উৎসবের উদ্বোধন করে প্রধান শিক্ষক সরিৎ কুমার চাকমা বলেন, ‘সুষ্ঠু ও যুক্তিনির্ভর সমাজ গঠনে বিতর্কচর্চার কোনো বিকল্প নাই। এ ক্ষেত্রে প্রথম আলোর অগ্রণী ভূমিকা প্রশংসনীয়।’ বিকেল চারটায় সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধা অতিথি রাঙামাটি সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মো. সদরুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘দেশব্যাপী অনুষ্ঠিত পেপসোডেন্ট-প্রথম আলো স্কুল বিতর্ক প্রতিযোগিতা সুনাগরিক সৃষ্টিতে অবদান রাখবে।’ উৎসবে আরও বক্তব্য দেন রাঙামাটি শাহ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মঈনুদ্দিন মিন্টু, বাংলাদেশ টেলিভিশনের অনুষ্ঠান সম্পাদক জাফর সাদিক প্রমুখ। প্রতিযোগিতায় খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি ও বান্দরবান জেলার ১৪টি স্কুল অংশ নেয়। দিনব্যাপী বিতর্ক প্রতিযোগিতায় চূড়ান্ত পর্বে ওঠে বান্দরবান জেলার ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ এবং সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। বিজয়ী হয় বান্দরবান ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল ও কলেজ। শ্রেষ্ঠ বক্তা হয়েছে বিজয়ী দলের দলনেতা মঈন উদ্দিন আহমদ।

আরও অংশগ্রহণ করে রাঙামাটি সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, রাঙামাটি সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, শাহ বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয়, রাঙামাটি লেকার্স পাবলিক স্কুল ও কলেজ, মুজাদ্দেদ-ই আলফেসানী একাডেমী উচ্চবিদ্যালয়, মোনঘর আবাসিক বিদ্যালয়, সাপছড়ি উচ্চবিদ্যালয়, কাপ্তাই ওয়াগ্গা উচ্চবিদ্যালয়, রাঙামাটি সিনিয়র মাদ্রাসা, বান্দরবান ডনবক্স উচ্চবিদ্যালয়, বান্দরবান টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ এবং বান্দরবান সরকারি উচ্চবিদ্যালয়।

প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন: আসাদুল্লাহ্ সরকার, দিনাজপুর, হরি কিশোর চাকমা, রাঙামাটি এবং সাইফুর রহমান, বরিশাল                

৭ অক্টোবর, সোমবার

গাজীপুর ও নরসিংদী

স্থান: নরসিংদী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়

//