বিমর্ষ আসামির স্বজনেরা

রায় ঘোষণার পর এনএসআইয়ের মাঠ কর্মকর্তা আকবর হোসেন খানের স্ত্রী সেলিমা সুলতানা তিনতলার এজলাস কক্ষ থেকে স্বামীর পাশাপাশি হেঁটে হেঁটে নিচে নেমে আসেন। পুলিশ, সাংবাদিক ও আইনজীবীদের ধাক্কাধাক্কির মধ্যেও তিনি স্বামীর পাশাপাশি থাকতে চেয়েছেন।
আকবর হোসেন প্রিজন ভ্যানে উঠে যাওয়ার পর গ্রিলের দিকে এলে সেলিমা আদালত ভবনের ফটকের পাশে একটি উঁচু দেয়ালের ওপর দাঁড়িয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন। একপর্যায়ে প্রিজন ভ্যান চালু হলে আকবর হোসেন গ্রিলের ফাঁক দিয়ে ডান হাত বের করে দেন। সেলিমা বাইরে থেকে তাঁর ডান হাত বাড়িয়ে কয়েক সেকেন্ডের জন্য ধরেন। একসময় চলে যায় প্রিজন ভ্যানটি। স্বামীর চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়েছিলেন সেলিমা। তাঁর চোখ দিয়ে টপটপ পানি ঝরছিল। এরপর এক স্বজনসহ তিনি আদালত প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন।
এ সময় সেলিনা সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার স্বামী একজন মুক্তিযোদ্ধা। আমরা ন্যায়বিচার পাইনি। আমার স্বামী এ ঘটনায় জড়িত নয়। আমরা উচ্চ আদালতে যাব।’
ফাঁসির আসামি দ্বীন মোহাম্মদ অস্ত্র খালাসের জন্য ট্রলার ও শ্রমিক সরবরাহকারী ছিলেন। রায় শোনার পর থেকে হাউমাউ করে কান্না করছিলেন দ্বীন মোহাম্মদের স্ত্রী মিনু আরা বেগম। কাঁদতে কাঁদতে তিনি স্বামীর পেছন পেছন তিনতলা থেকে নিচে নেমে আসেন। তিনি বারবার বলছিলেন ‘আল্লাহ, এটা কী হলো’।
সাংবাদিকদের মিনু আরা বলেন, ‘আমার স্বামী দিনমজুর। তাঁকে শুধু শুধু এই মামলায় ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। আমার স্বামী নির্দোষ। আমরা গরিব মানুষ। আমার পরিবার এখন পথে বসার উপক্রম হয়েছে। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই বিচার দিলাম।’
অপর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আবদুস সোবাহানের বড় ছেলে ওসমানও রায় ঘোষণার সময় উপস্থিত ছিলেন।
ওসমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার বাবা নির্দোষ। আমরা ন্যায়বিচার পাইনি। উচ্চ আদালতে যাব।’
একইভাবে হাফিজুর রহমানের ভাই ওয়াসিউর রহমান ফাঁসির রায় শুনে কান্নায় ভেঙে পড়েন। এ ছাড়া উপস্থিত ছিলেন উইং কমান্ডার সাহাব উদ্দিনের স্ত্রী ও কন্যা।
রায় ঘোষণার পর সাহাবকে জড়িয়ে কান্না করেন স্ত্রী-কন্যা। সাংবাদিকদের তাঁরা কোনো মন্তব্য করেননি।