বিমানবন্দরে নওশাদকে শ্রদ্ধা, আবেগাপ্লুত সহকর্মীরা

বিমানবন্দরে নওশাদ আতাউল কাইয়ুমের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়
ছবি: আহমেদ দীপ্ত

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পাইলট ক্যাপ্টেন নওশাদ আতাউল কাইয়ুমের মরদেহ ভারত থেকে দেশে আনা হয়েছে। তাঁর মরদেহ বহনকারী বিমানের ফ্লাইটটি আজ বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকায় এসে পৌঁছায়। বিমানবন্দরে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। এ সময় আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তাঁর শোকার্ত সহকর্মীরা।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের উপমহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) তাহেরা খন্দকার প্রথম আলোকে বলেন, ক্যাপ্টেন নওশাদের মরদেহ বহনকারী ফ্লাইটটি আজ সকাল ৯টা ১০ মিনিটের দিকে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসে।

বিমান সূত্র জানায়, বিমানের দোহাগামী বোয়িং ৭৩৭-৮০০ ময়ূরপঙ্খী ফ্লাইট দেশে ফেরার পথে ভারতের নাগপুরে থামে। সেখান থেকে ফ্লাইটটি ক্যাপ্টেন নওশাদের মরদেহ নিয়ে দেশে আসে।

ফ্লাইটটি অবতরণের আগেই নওশাদের সহকর্মীরা বিমানবন্দরে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলেন। বিমান অবতরণের পর সহকর্মীরা তাঁর কফিনটি কাঁধে করে নামান। পরে একটি মঞ্চে সেটি রাখা হয়। সেখানে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, বিমানের এমডি ও সিইও আবু সালেহ মোস্তফা কামাল শ্রদ্ধা জানান। বাংলাদেশ পাইলট অ্যাসোসিয়েশন, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসসহ অন্যদের পক্ষ থেকেও শ্রদ্ধা জানানো হয়।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পাইলটরা নিজেদের টুপি খুলে নওশাদকে শ্রদ্ধা জানান। এ সময় পাইলটরা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। তাঁদের অনেককেই অশ্রু মুছতে দেখা যায়। সেখানে নওশাদের মেয়ে ও বোন উপস্থিত ছিলেন।

শ্রদ্ধা জানানো শেষে প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী সাংবাদিকদের বলেন, ‘পাইলট নওশাদের অকালমৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। তাঁর মৃত্যু আমাদের বিমান পরিবারের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় তাঁর মৃত্যু একটা ভিন্নমাত্রা বহন করে।’

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের পাইলটরা নিজেদের টুপি খুলে নওশাদকে শ্রদ্ধা জানান
ছবি: আহমেদ দীপ্ত

বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে নওশাদের কফিন একটি ফ্রিজিং ভ্যানে তোলা হয়। পরে ভ্যানটি তাঁর উত্তরার বাসার উদ্দেশে রওনা দেয়।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আজ বাদ জোহর বিমানের বলাকা ভবনে নওশাদের মরদেহ আনা হবে। সেখানে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরে তাঁকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে।

ভারতের নাগপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত সোমবার বাংলাদেশ সময় বেলা ১১টার দিকে নওশাদের মৃত্যু হয়। নওশাদ সবশেষ নাগপুরের কিংসওয়ে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ছিলেন।

গত শুক্রবার সকালে বিমানের একটি ফ্লাইটে ওমানের মাসকট থেকে ১২৪ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকায় ফিরছিলেন নওশাদ। ভারতের আকাশসীমায় থাকা অবস্থায় ৪৪ বছর বয়সী এই পাইলট হৃদ্‌রোগে (হার্ট অ্যাটাক) আক্রান্ত হন। এ সময় বিমানটিকে মহারাষ্ট্রের নাগপুরের বাবা সাহেব আম্বেদকর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করানো হয়। পরে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

ক্যাপ্টেন নওশাদ ২০১৬ সালের ২২ ডিসেম্বর বিমানের আরেকটি ফ্লাইট জরুরি অবতরণ করিয়ে ১৪৯ জন যাত্রীর জীবন বাঁচিয়েছিলেন।