‘বিশেষ শিশুদের সুপ্ত প্রতিভা জাগিয়ে তুলে মূলধারায় আনতে হবে’

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারপারসন নাছিমা বেগম বলেছেন, বিশেষ শিশুদের (অটিজম) সক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে তাদের বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও কারিগরি প্রশিক্ষণ দিতে হবে। এর মাধ্যমে তাদের দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।

এসব বিশেষ শিশুর সুপ্ত প্রতিভা জাগিয়ে তুলে মূলধারায় ফিরিয়ে আনতে হবে।
শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিকেশন ডিজঅর্ডারস বিভাগের উদ্যোগে বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবসের আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে নাছিমা বেগম এ কথা বলেন।

অটিজম নিয়ে সমাজের কুসংস্কারের কথা উল্লেখ করে নাছিমা বেগম বলেন, অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের অনেক মা-বাবা সন্তানদের প্রকৃত অবস্থা লুকিয়ে রাখেন। তাঁরা মনে করেন, তাঁদের কোনো কৃতকর্মের ফল সন্তান ভোগ করছে। কিন্তু বিষয়টি কখনোই এমন নয়। সমাজের এসব গোঁড়ামি ভেঙে অটিজম–সংক্রান্ত সঠিক তথ্য সব জায়গায় ছড়িয়ে দিতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, উন্নত দেশের তুলনায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোয় প্রতিবন্ধী ও অটিজমে আক্রান্তদের প্রয়োজনীয় সেবা প্রদানের সুযোগ কম। এসব মানুষকে হেয় না করে রাষ্ট্র, সমাজ ও পরিবারের দায়িত্ব তাদের মানবিক সেবা প্রদান সুনিশ্চিত করা।

আলোচনায় নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনোয়ার উল্লাহ্ অটিজমে আক্রান্ত সব শিশু ও মানুষের প্রয়োজনীয় চাহিদা পূরণে আইন প্রয়োগের ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, অটিজমে আক্রান্তদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে ২০১৩ সালে নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল ডিজঅ্যাবিলিটি প্রটেকশন অ্যাক্ট প্রণয়ন করা হয়েছে। এই আইনের ১৭টি ধারার ২৪ ধরনের কাজের কথা বলা হয়েছে। আইনটির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন প্রয়োজন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিকেশন ডিজঅর্ডারস বিভাগের চেয়ারপারসন তাওহিদা জাহান বলেন, অটিজম বিষয়ে বৈশ্বিক সচেতনতা ছড়িয়ে পড়ার একটি উপলক্ষ হিসেবে অটিজম সচেতনতা দিবসটি অধিকতর গুরুত্বের দাবিদার।

২০০৭ সাল থেকে বিশ্বজুড়ে অটিজম সচেতনতা দিবস পালিত হয়ে আসছে। এবারের প্রতিপাদ্য ‘কর্মক্ষেত্রে একীভূতকরণ: মহামারি–পরবর্তী বিশ্বের বাধা ও সুযোগসমূহ’।

দিবসটি উপলক্ষে এই আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিকেশন ডিজঅর্ডারস বিভাগের অধ্যাপক হাকিম আরিফ, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন আহমেদ, তরী ফাউন্ডেশন ও এসসিজির পরিচালক মারুফা হোসেন, কমিউনিকেশন ডিজঅর্ডারস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সোনিয়া ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।