বিশ্ববিদ্যালয় লেখাপড়ার জায়গা, টাকা রোজগারের নয়: রাষ্ট্রপতি

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তনে কৃতী শিক্ষার্থীদের পদক প্রদান করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। কুমিল্লা, ২৭ জানুয়ারি। ছবি: পিআইডি
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম সমাবর্তনে কৃতী শিক্ষার্থীদের পদক প্রদান করেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। কুমিল্লা, ২৭ জানুয়ারি। ছবি: পিআইডি

শিক্ষার্থীদের বিবেকের কাছে পরাজিত না হওয়ার আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় লেখাপড়া ও জ্ঞানার্জনের স্থান, টাকাপয়সা রোজগারের জায়গা নয়। মা–বাবা অনেক কষ্ট করে তোমাদের লেখাপড়ার খরচ জোগায়। তাই খেয়ালের বশে বা লোভ-লালসায় পড়ে নিজেদের জীবন নষ্ট করবে না।’

আজ সোমবার কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) প্রথম সমাবর্তনে যোগ দিয়ে নিজের ভাষণে এসব কথা বলেন রাষ্ট্রপতি।

গ্র্যাজুয়েটদের শুধু নিজের স্বার্থের কথা চিন্তা না করার পরামর্শ দিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘পরিবার, সমাজ ও জাতির কল্যাণে নিজেকে নিযুক্ত করো। রাষ্ট্রের বিবেকবান নাগরিক হিসেবে তোমাদের কাছে জাতির প্রত্যাশা, তোমরা কখনো অর্জিত ডিগ্রির মর্যাদা, ব্যক্তিগত সম্মানবোধ ও নৈতিকতাকে ভূলুণ্ঠিত করবে না। অতীতকে মনে রেখে ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখবে। জীবনের চড়াই-উতরাই পথে হতাশ হবে না;বরং সাহসের সঙ্গে মোকাবিলা করবে।’

মাদকের অপব্যবহারের বিরুদ্ধে বিপ্লব করতে শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য বলেন, শিক্ষার্থীদেরই মাদকের বিরুদ্ধে নীরব সামাজিক বিপ্লব শুরু করতে হবে। মাদকের বিরুদ্ধে প্রেরণামূলক প্রচার চালিয়ে সমাজে পরিবর্তন আনতে হবে, না হলে দেশ ধ্বংস হয়ে যাবে।

হেরোইন, ইয়াবাসহ এক ডজনেরও বেশি নিষিদ্ধ ড্রাগসের নাম উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘কুমিল্লা দেশে মাদক পাচারের অন্যতম রুটগুলোর একটি। তাই তোমাদের অবশ্যই সজাগ থাকতে হবে।’

শিক্ষকদের পেশা ও মর্যাদা সমুন্নত রাখার আহ্বান জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, একজন শিক্ষক জাতির পথপ্রদর্শক। একজন শিক্ষকই কেবল জাতিকে সঠিক দিকনির্দেশনা দিতে পারেন। একজন শিক্ষকের কাজ শুধু শ্রেণিকক্ষে পাঠদানেই সীমাবদ্ধ নয়; তিনি জাতির বুদ্ধি ও বিবেককে জাগ্রত করে অন্তরে জ্ঞানের মশাল প্রজ্বলিত করেন। তাই একজন শিক্ষককে আদর্শ ও ন্যায়নীতির প্রতীক হতে হবে।

অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। সমাবর্তনে ৩ হাজার ৫৬১ জন স্নাতককে ডিগ্রি প্রদান করা হয়েছে। এ ছাড়া শিক্ষায় অসাধারণ অবদানের জন্য ১৪টি স্বর্ণপদক ও ৫২টি ডিন অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়।

সমাবর্তনে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান কাজী শহিদুল্লাহ এবং কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এমরান কবির চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।