বৃদ্ধাশ্রম: যেখানে মানুষ নিজের মধ্যে ভীষণ একা

বৃদ্ধাশ্রমে এসব মানুষ বড় একা। ছবি: লেখক
বৃদ্ধাশ্রমে এসব মানুষ বড় একা। ছবি: লেখক

কোনো এক বৈশাখের পর গিয়েছিলাম গাজীপুরে একটি বৃদ্ধাশ্রমে। সেখানকার কথাই আজ বলব। বৃদ্ধাশ্রমের গিয়ে মনে হয়েছে, নিঃসঙ্গতাও মানুষের ঠিকানা হতে পারে। মানুষ কি আদতে এমন নির্জনতা চায় মনে মনে? আসলে মানুষ নিঃসঙ্গতা ছাড়া আর কীই–বা পায় জীবনে। একলা মানুষেরও কোনো ঠিকানা আছে পৃথিবীতে, ভাবতেই অবাক লাগে।

বৈশাখ চলে গেলেও তার আমেজ একটুও কমতি থাকে না প্রকৃতিতে। কয়েক দিন টানা বৃষ্টির পর আজ সকাল থেকেই বেশ ঝলমলে রোদ আকাশে। সকাল সাতটায় রওনা দেওয়ায় ঢাকা থেকে গাজীপুরের বশিয়া কুড়িবাড়ী এসে পৌঁছাতে পৌঁছাতে সকাল ১০টা বেজে গেল। একটা পুরোনো লাল রঙের লোহার গেটের সামনে গাড়িটা এসে থামল। গাড়ির হর্ন বাজতেই খাকি পোশাক পরা একজন মধ্যবয়সী গেট খুলে দিলেন। গাড়ি থেকে নেমে পায়ে পায়ে হাঁটতে থাকলাম কিছুটা পথ, ভেতরে ঢুকতেই হৃদয়টা কেমন মর্মরিয়ে উঠল, অনেকটা শুকনো পাতায় পা পড়লে যেমনটা হয়। মনে হলো, ইট–কাঠের সভ্যতা পেরিয়ে যেন নিজের গ্রামে ফিরে এলাম, চারপাশে সারি সারি আম–লিচু–কাঁঠালগাছ, শুকনো খড়ের পালা, কতশত পাখির মধুর ডাক, হৃদয় জুড়িয়ে যায় একেবারে। এরই মধ্যে একটা কাঁচা-পাকা পথ ভেতরের দিকে নিয়ে যাচ্ছে আমায়। সঙ্গে থাকা কেয়ারটেকার পাশ থেকে বললেন, ‘আগে কোথায় যাবেন ভাই, বাবাদের ঘরে না মায়েদের ঘরে?’ আমি থমকে গেলাম, কয়েক সেকেন্ড চুপ থাকার পর গলা থেকে অজান্তেই বেরিয়ে এল মা, ‘বেশ চলুন...’

হাঁটার জন্য ইট বিছানো একটা সবুজ শেওলা ধরা সরু রাস্তা, কিছুক্ষণ হাঁটার পর কাচারি ঘরটার পাশে এসে থামলাম। বেশ কয়েকটা বকুলগাছ; চারপাশটা বকুল ফুলের ঘ্রাণে ম-ম করছে। একটু দূরে তাকালেই চোখে পড়ে বেশ বড় কুমড়োর মাচা, শত শত হলুদ কুমড়ো ফুল ফুটে আছে যেন পাতায় পাতায়, মাচার শুকনো কঞ্চের ওপর বেশ কয়েকটা ভেজা সাদা শাড়ি রোদে শুকাতে দেওয়ায় বাতাসে দুলছে। পাশ দিয়ে হেঁটে আসছেন বয়সের ভারে ন্যুব্জ একজন বৃদ্ধা। সোজাসুজি আকারের বেশ লম্বা একতলাবিশিষ্ট আধা পাকা ঘর, খোলা বারান্দায় পায়চারি করছেন কেউ কেউ। কারও কণ্ঠে কোরআন শরিফ তিলাওয়াতের মধুর সুর কানে আসছে, কেউ গীতা পাঠ করছেন আবার কেউবা বারান্দার খুঁটিতে ভর করে এক ধ্যানে দূরে তাকিয়ে আছেন শালবনের দিকে কারও অপেক্ষায়।

বারান্দায় পা রাখতেই ‘বয়স্ক পুনর্বাসন কেন্দ্র বশিয়া, কুড়িবাড়ী, মনিপুর-গাজীপুর’ লেখাটি চোখে পড়ে এখানে আগত অতিথিদের। সত্যি বলতে, বারান্দায় প্রথম পা ফেলতেই আবার শিউরে উঠলাম আমি। পুরো শরীর যেন অসাড় হয়ে যাচ্ছিল বারবার—এ আমি কোথায় এলাম? মলিন, অথচ আয়নার মতো চকচকে ত্বক, বিবর্ণ ধূসর চোখের এসব মানুষ মুখে একটা আলতো হাসি গুঁজে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন। আমিও এক মুহূর্তের জন্য দৃষ্টি ফেরাতে পারছি না কারও চোখ থেকে। আমার মায়ের ঠোঁটে আজন্মই একটা শুকনো হাসি লেগে থাকে। বারান্দার টিনের চাল ঘেঁষে দুটি শিউলি ফুলের গাছ, সব ফুল ঝরে মাটিতে লুটিয়ে আছে। আমি কাঁপা কাঁপা পায়ে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছি প্রতিটা কক্ষ আর বারান্দায় বসে থাকা মায়াভরা এসব মানুষকেও; ৮ নম্বর কক্ষের কাছে আসতেই একটা চাপা বিলাপের আওয়াজ শুনতে পেয়েই থমকে দাঁড়ালাম। ঘর জুড়ে সুনসান নীরবতা, ৭-৮টি বিছানা খুব সুন্দর পরিপাটি করে সাজানো, কয়েকটা বিছানায় ভাঁজ করা জায়নামাজের ওপর তসবিহ আছে। দখিনের জানালাটা খোলা, জানালার গ্রিল বেয়ে সকালবেলার আলোর মেদুর পুরো ঘরটাকে আবছা আলোময় করে রেখেছে। পাশে গিয়ে বসতেই, কান্নাভেজা চোখ দুটো আমার দিকে দৃষ্টি ফেরাল এবার, খুব মৃদু কণ্ঠে, অনেকটা আত্মসংকোচ নিয়েই জানতে চাইলাম, আপনি কাঁদছেন কেন মা? তিনি কিছুই বলছেন না। পাশ থেকে তত্ত্বাবধায়ক (কেয়ারটেকার) বললেন, ‘উনি কথা বলতে পারেন না, ৭ বছর আগে তাঁর ছেলেরা এখানে রেখে গেছেন আজও নিতে আসেননি। তাঁর সন্তানেরা কোথায় আছেন, আমরা তা–ও জানি না, সন্তানদের জন্য কাঁদতে কাঁদতে তাঁর চোখ এখন অন্ধ হওয়ার পথে...।’

এসব শুনে আমার গলাটা শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাচ্ছিল, আমি আসলে কী বলব, কী বলা উচিত আমার এই মাকে। আমি ভেবে পাচ্ছিলাম না। আমার নিষ্ঠুর চোখের ওপর অজান্তেই জলের আস্তরণ জমে উঠল। এমন সময় তাঁর হাতটা আমার কপালে রাখতেই অবশেষে কেঁদেই ফেললাম। বিড়বিড় করে অনেক কিছুই বলছিলেন, আমি হয়তো তাঁর সব কথাই পড়তে পারছিলাম। আজ ৭টি বছর পার করে দিলেন ২ সন্তানের মা বিক্রমপুরের জরিনা বেগম, একবারের জন্যও দেখতে আসেননি তাঁর কলিজার টুকরো ছেলে, ছেলের বউ ও নাতি–নাতনিরা।

তবু নিজের ভিটেমাটিতে ফিরে যেতে চান মা জরিনা বেগম; ফিরতে চান ছেলে, ছেলের বউ আর নাতিদের কাছে। কিন্তু আপনজন দূরের কথা, মৃত্যুর পর নিজের লাশটা স্বামীর ভিটায় যাবে কি না, এমন নিশ্চয়তা কেউই দিতে পারেন না জরিনা বেগমকে। শুনেছি এখানে অনেকের জীবনের শেষ ইচ্ছা, মৃত্যুর পর অন্তত তাঁর লাশটা যাতে প্রিয় সন্তানদের কাছে তুলে দেওয়া হয়। তবে সন্তানদের কাছে লাশ পাঠানোর ঠিকানা না থাকায় মৃত্যুর পর দাফন করা হয় বৃদ্ধাশ্রম কবরখানায়। দুই সপ্তাহ আগে বার্ধক্যের কারণে মারা যান বৃদ্ধাশ্রমের দীপক সাহা নামের ৯০ বছরের এক ব্যক্তি। মৃত্যুর আগে দীপক সাহা তাঁর সন্তানদের দেখার জন্য আহাজারি করেন। সন্তানদের খবর পাঠানো হয় কয়েক দফায়, তাঁরা কেউ আসেননি। এমনকি মৃত্যুর সংবাদ জানানোর পরেও বাবার লাশটা একবারও দেখতে আসেননি দীপক সাহার প্রিয় সন্তানেরা।

এবারে কথা হয় ৫ নম্বর কক্ষের শরীয়তপুরের জাহানারা বেগমের সঙ্গে। ৩০ বছর আগে মারা গেছেন স্বামী। ৩ মাসের দুধের শিশুকে কোলে নিয়ে এক কাপড়ে ফিরে আসেন বাবার বাড়িতে।

‘আমি আর পরে বিয়া বহি নাই; মাইনসের বাড়িত কাম কইরা, পোলা মনিরুল রে লেখাপড়া করাইছি, বড় করছি, বিয়াও করাইয়া দিছি ভালা বাড়ি দেইখা। পোলায় গার্মেন্টসে সুপারভাইজারের চাকরি পায়া বউ নিয়া ঢাকায় চইলা গেল। কয়েক বছর পরে আমার নাতির জন্ম হইছে। খুশিতে মনিরুল আমারে ঢাকায় নিয়া আইল, ভালাই আছিলাম কয়ডা দিন। তারপর বউয়ের চক্ষের বিষ হয়া গেলাম। ঘরের বেবাক রান্দনের কাম আমি করতাম। রান্দন খারাপ হয়লেই বউ আমারে মাইরধর করত। আমার নামে পোলারে এইডা–অইডা কইত, কিন্তু একদিন পোলায় আমারে নিয়া বউয়ের সঙ্গে ঝগড়া কইরা বউরে মারল, বউ রাগ কইরা চইলা গেল বাপের বাড়ি। বুঝলাম, আমার লাইগাই পুলার সংসারটা ভাইঙ্গা জাইতাছে। একদিন পোলারে ডাইকা কইলাম, “বাবা কই জানি মা রাহনের জায়গা আছে, আমারে তুই হেই জায়গায় রাইখা অ্যায়, হুনছি হেরা ভালা মানুষ, টেকাপয়সা ছাড়াই থাকতে দেয়, খাওন-পরন দেয়। তুই ভালা থাকবি, সুখে থাকবি বাপ।” হের পর মনিরুল আমারে এইখানে হেই রাইখা গেল। আইজ ৮ বছর। নাতিডারে খুব দ্যাখতে ইচ্ছা করে আর আমার মনিরুল এখন ভালা আছে, আমার মনিরুল আমারে নিতে আইব...’, বলেই শ্বাস নিলেন জাহানারা বেগম।

লক্ষ্মী রানী (৭০) এ আশ্রমের একমাত্র মধ্যমণি। যেমন তাঁর শিক্ষাদীক্ষা, তেমনি তাঁর গুণাবলি। ছোটবেলায় স্বপ্ন ছিল গায়িকা হবেন। গানের ভালো গলা তাঁর, আশ্রমের কাউকে কাঁদতে দেখলেই গান শুনিয়ে মন ভালো করার চেষ্টা করেন তিনি। প্রায় ৪ বছর আগে এই জননীকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে গেছেন তাঁর বড় মেয়ে। দুই মেয়ের জন্মের বেশ কয়েক বছর পর স্বামীকে হারান লক্ষ্মী রানী। শরীরের রক্ত পানি করে মেয়েদের মানুষ করেছেন তিনি। শুধু তা–ই নয়, নিজের ভিটেমাটি বিক্রি করে বিয়ে দেন সন্তানদের। অথচ এই মেয়েরাই তাঁকে রেখে গেলেন বৃদ্ধাশ্রমে।

সন্তানেরা মা–বাবাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে যান, কিন্তু আর খোঁজ নেন না। ছবি: লেখক
সন্তানেরা মা–বাবাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে যান, কিন্তু আর খোঁজ নেন না। ছবি: লেখক

লক্ষ্মী রানী বলছিলেন, ‘মেয়ে দুটোকে খুব ভালো জায়গায় বিয়ে দিয়েছি, ভেবেছিলাম আমি আর ঘরবাড়ি দিয়ে কী করব? মেয়ে দুটো আমাকে ছাড়া আবার একদম থাকতে পারে না। তাই ভেবেছিলাম ওদের এখানেই হরিনাম জপে বাকি জীবন কাটিয়ে দেব। নিজের বাড়ি বিক্রি করে মেয়েদের বিয়ে দিলাম। কিন্তু মেয়েদের ঘরে আর থাকা হলো না আমার, আমার ঠিকানা হলো এই বৃদ্ধাশ্রমে। বড় মেয়ে আমাকে এখানে দিয়ে গেছে, ছোট মেয়েটা মাঝেমধ্যে আমাকে দেখতে আসে। বলে মা, “আমি আর কিছুদিন পরে এসে তোমাকে নিয়ে যাব আমার বাসায়।” আমি হাসি, বোকা মেয়ে, আমি কি আর বুঝি না; তোরা কোনো দিন নিবি না আমারে; আমৃত্যু এইটাই আমার ঠিকানা। একটা পাখি যেমন তার ঘরবাড়ি ছাড়া যাযাবর, তেমনি একজন মা তার স্বামী সংসার পোলাপান ছাড়া খুব নিঃসঙ্গ। পৃথিবীর কোনো সন্তান যেন তার মা–বাবাকে বৃদ্ধাশ্রমে না দেয়। আমি যাই, আমি ঘুমাব এখন বাবা...।’

দুপুর প্রায় শেষ, লক্ষ্মী রানী ঘুমাতে চলে গেলেন। আমি আর কারও সঙ্গে কথা বলার সাহস পেলাম না; আমার বুকটা ভারী হয়ে আসছিল, ঠিক পাথরের মতন ভারী। বৃদ্ধাশ্রম থেকে বেরিয়ে কয়েকটা বকুল ফুল কুড়িয়ে শুকতে শুকতে আবার শেওলা ধরা রাস্তা ধরে হাঁটতে লাগলাম। পেছন থেকে কে যেন ডাক দিলেন, তাকাতেই দেখি লক্ষ্মী রানী।
‘কিছু বলবেন?’
‘আবার কবে আসবেন বাবা?’
আমি চুপচাপ নিথর দাঁড়িয়ে আছি, ‘আসব খুব তাড়াতাড়ি...’
‘সবাই বলে আসব, পরে আর কেউ আমাদের দেখতে আসে না, আপনি আসবেন বাবা!’
‘নিশ্চয় আসব!’

প্রত্যেকটি মানুষ নিজের মধ্যে ভীষণ একলা
কখনো কি এমন নিঃসঙ্গতা মানুষের ঠিকানা হতে পারে, মানুষ কি আদতে এমন নির্জনতা চায় মনে মনে, আসলে মানুষ নিঃসঙ্গতা ছাড়া আর কীই–বা পায় জীবনে? প্রত্যেকটি মানুষ সে তার নিজের মধ্যে ভীষণ একলা। আর এসব একলা মানুষেরও কোনো ঠিকানা আছে পৃথিবীতে, ভাবতেই অবাক লাগে। আদতে আব্বার কাছেই আমি প্রথম শুনি বৃদ্ধাশ্রম শব্দটি। শহুরে এলিটদের ভাষায় যার নাম ওল্ড হোম। আব্বা সরকারি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পর রাতারাতি তাঁর স্বভাব পুরোটাই বদলে গেল। তিনি শহুরে জীবন থেকে আমাদের নিয়ে ফিরে এলেন তাঁর জন্মভূমি, তাঁর শৈশব–কৈশরের বেড়ে ওঠা নিজ গ্রাম ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায়। আব্বা ভীষণ রাগী স্বভাবের মানুষ, এত রাগী মানুষ আমি আমার জীবনে দেখিনি। আমরা ৬ ভাই ১ বোন। জীবন আর জীবিকার তাগিদে সবাই প্রায় ছিন্নভিন্ন, কয়েক মাস পরপর কিংবা বছরের বিশেষ দিন ছাড়া আব্বা–আম্মা তাঁর ছেলেমেয়ে, ছেলের বউ ও নাতিদের কাছে পেতেন না। কিন্তু তিনি মনে মনে খুব চাইতেন সবাই তাঁর কাছে থাকুক। কাউকে ফোন করে না পেলেই অভিমান করতেন, এক–দুদিন না খেয়েও থাকতেন। একেবারে শিশুর মতো হয়ে যায় আচরণ। কী যেন লিখে সেই লেখা আবার হলুদ খামে ভরে রাখতেন। মাঝেমধ্যে আমাকে ডেকে কয়েকটা চিঠি ধরিয়ে দিয়ে বলতেন, ‘যা, চিঠিগুলো আজকেই পোস্ট করবি—তোরা থাক আমি আর তোদের সঙ্গে থাকব না।’ রাস্তা দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে খামটা বের করে দেখি, খামের ওপর বৃদ্ধাশ্রমের ঠিকানা, বাংলায় টানা আখরে লেখা, আমার আব্বার হাতের লেখা খুব সুন্দর ছিল। পাকিস্তান আমলের ডিপ্লোমা করা চিকিৎসক তিনি। যা–ই হোক, লেখাটা দেখেই মনটা খারাপ হয়ে গেল, খামটা খুলে চিঠিটা পড়ার সাহস ধরল না বুকে। মনে হয় নানা অভিমানের কথা লিখেছেন তাদের কাছে, সবার অজান্তেই চিঠিগুলো নদীতে ভাসিয়ে দিতাম। নিজেকে খুব অপরাধী মনে হতো তখন, কিন্তু এ ছাড়া আমার কী করার ছিল? এরপর যখনই আব্বা রাগারাগী করতেন, তখনই আমাকে ডেকে বলতেন, ‘কী রে বৃদ্ধাশ্রম থেকে কোনো উত্তর এল রে? তোদের সঙ্গে আর থাকব না, আমি চলে যাব।’

আব্বা আমাদের নেই প্রায় ১০ বছর। আব্বার কথাটুকু রাখা জরুরি ছিল। আজকাল প্রায় স্বপ্ন দেখি, আমার মা আব্বার মতো রাগ করে কোথায় যেন চলে গেছেন, আমরা কোথাও খুঁজে পাচ্ছি না মাকে...।