বৃষ্টি উপেক্ষা করে রাতভর বশেমুরবিপ্রবির শিক্ষার্থীদের আন্দোলন

ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা গতকাল রোববার রাতভর বৃষ্টি উপেক্ষা করে আন্দোলন চালিয়ে গেছেন। আজ সোমবারও উপাচার্যের (ভিসি) পদত্যাগের দাবিতে তাঁদের আন্দোলন অব্যাহত আছে। এ নিয়ে ভিসি খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের পদত্যাগের দাবিতে চলমান আন্দোলন পঞ্চম দিনে পড়ল।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র সবুজ রায়হান বলেন, ভিসি পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। শুধু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশ্বাস দিলেই তাঁরা আন্দোলন বন্ধ করবেন, নইলে নয়।

গতকাল রোববার থেকে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা এবং তার আগের দিন থেকে হল বন্ধে প্রশাসনের নির্দেশে বিপাকে পড়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্র ইনজারুল হক বলেন, হলে খাবারদাবারের কোনো ব্যবস্থা নেই। শিক্ষার্থীদের শুকনা খাবার খেয়ে থাকতে হচ্ছে।

এদিকে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে সহকারী প্রক্টরের পদ থেকে পদত্যাগ করা হুমায়ুন কবির অভিযোগ করেছেন, ভিসিপন্থী শিক্ষক ও প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা গতকাল রোববার তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করেছেন। তিনি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এ বিষয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার কথা ভাবছেন তিনি।

গত শনিবার আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ভিসির লোকজনের হামলার ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন স্বয়ং ভিসি। উপাচার্য খোন্দকার নাসিরউদ্দিন গতকাল রাতে এক বিজ্ঞপ্তিতে ‘ক্যাম্পাস থেকে দুই কিলোমিটার দূরের এই হামলার ঘটনায়’ নিন্দা জানান।

বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে ফেসবুকে লেখার জেরে ১১ সেপ্টেম্বর আইন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও ক্যাম্পাস সাংবাদিক ফাতেমা-তুজ-জিনিয়াকে সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উপাচার্যের বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় ওঠে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের চেয়ারম্যানসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপাচার্য বরাবর জিনিয়ার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার চেয়ে একটি লিখিত আবেদন করেন। উপাচার্য বহিষ্কারাদেশ তুলে নেন। তবে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে জোর আন্দোলন গড়ে তোলেন।

১৯ সেপ্টেম্বর সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা ভিসি পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমরণ অনশনের ঘোষণা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অনশন শুরু করেন। আন্দোলনের মুখে কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয়।