বেঁচে থাকলে মেয়ের তৈরি কেক কাটতেন শিল্পী মুর্তজা বশীর

মুর্তজা বশীর

দেশের আধুনিক চারুকলাচর্চার পথিকৃৎ শিল্পীদের অন্যতম মুর্তজা বশীর অতীত হয়েছেন মাত্র দুই দিন আগে। বেঁচে থাকলে আজ সোমবার ৮৮ বছরে পা রাখতেন এই ভাষাসৈনিক। জন্মদিনে অবশ্য তেমন আনুষ্ঠানিক আয়োজন–আড়ম্বর তাঁর পছন্দ ছিল না। তবে মেয়ের হাতে তৈরি কেক কাটতেন নিশ্চয়ই।

শিল্পী মুর্তজা বশীর ১৯৩২ সালের ১৭ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন। অনেক দিন থেকে শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া, ফুসফুস, কিডনি ও হৃদ্‌যন্ত্রের সমস্যায় ভুগে গত শনিবার ১৫ আগস্ট তিনি পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে যান। এভারকেয়ার হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন ছিলেন, সেখানে শেষ পরীক্ষায় তাঁর করোনা পজিটিভ এসেছিল।

ফার্মগেটের মণিপুরীপাড়ায় শেল্‌টেক্‌ মনিহার আবাসনে শিল্পী মুর্তজা বশীর ও তাঁর বড় মেয়ে মুনীরা বশীর পাশাপাশি ফ্ল্যাটে থাকেন। গতকাল রোববার মুনীরা বশীর প্রথম আলোকে বললেন, তিনি ভেবেছিলেন জন্মদিনে নিজে হাতে কেক তৈরি করে বাবার কাছে নিয়ে যাবেন। তিনি কেক কাটবেন। তা আর হলো না। আজ তিনি নিজেই ১০০ জনের রান্না করবেন। দুপুরে এসব খাবার সুবিধাবঞ্চিতদের মধ্যে বিতরণ করা হবে। বাদ আসর পারিবারিকভাবেই তাঁরা দোয়া করবেন।

মুনীরা জানালেন, গতকাল সকালে বনানী কবরস্থানে গিয়ে তিনি বাবার কবর জিয়ারত করে এসেছেন। তাঁর ছোট বোন মুনিজা বশীর চট্টগ্রামে তাঁর বাড়িতে ফিরে গেছেন। ভাই মেহরাজ বশীর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কপ্রবাসী। তিনি আসতেই পারেননি।

শিল্পী মুর্তজা বশীরের স্মৃতি রক্ষার জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে এশিয়াটিক সোসাইটিতে একটি ফান্ড করা হবে। মুর্তজা বশীর বেঁচে থাকতেই প্রয়াত স্ত্রীর নামে আমিনা বশীর ফাউন্ডেশন করেছিলেন। মুনীরা জানালেন, তাঁরা এখন মুর্তজা বশীর ও আমিনা বশীরের যৌথ নামে এশিয়াটিক সোসাইটিতে একটি ফান্ড তৈরি করবেন। চারুকলার দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্যও আর্থিক সহায়তার বিষয়টি তাঁরা বিবেচনা করছেন।

এ ছাড়া শিল্পী মুর্তজা বশীর যে ফ্ল্যাটে থাকতেন, সেটিকে স্মৃতি জাদুঘর হিসেবে সংরক্ষণেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে তাঁর পরিবার। এখানে তাঁর শিল্পকর্ম, গ্রন্থ এবং তথ্য–উপাত্ত থাকবে।