ব্লগার নাজিমউদ্দিন হত্যা: পাঁচ জঙ্গিকে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির নির্দেশ

ব্লগার নাজিমুদ্দিন সামাদ
ছবি: সংগৃহীত

ব্লগার নাজিমউদ্দিন সামাদ হত্যা মামলায় অভিযুক্ত আনসার আল ইসলামের সামরিক শাখার প্রধান চাকরিচ্যুত মেজর সৈয়দ জিয়াউল হকসহ পাঁচজনকে হাজির হওয়ার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান আজ মঙ্গলবার এ আদেশ দেন।

২০১৬ সালের ৬ এপ্রিল রাতে হত্যা করা হয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নাজিমউদ্দিনকে।

ট্রাইব্যুনালের বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) গোলাম ছারোয়ার খান জাকির প্রথম আলোকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। অপর যে চারজনকে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তাঁরা হলেন মো. ওয়ালি উল্লাহ ওরফে ওলি, সাব্বিরুল হক চৌধুরী ওরফে কনিক, মাওলানা জুনেদ আহম্মেদ ওরফে জুনায়েদ ও আকরাম হোসেন।

পিপি গোলাম ছারোয়ার খান বলেন, এই মামলায় পলাতক রয়েছেন সৈয়দ জিয়াউল হকসহ পাঁচজন। ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী, আদালত এর আগে জিয়াউলসহ পাঁচজনের সম্পদ ক্রোকের আদেশ দেন। আর আজ (গতকাল) তাঁদের হাজির হয়ে বিচারের মুখোমুখি হওয়ার জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন। আগামী ১৬ জুন মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক করা হয়েছে।

সৈয়দ জিয়াউল হকসহ নয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে পুলিশ।

২০১৬ সালের ৬ এপ্রিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্র নাজিমউদ্দিন ক্লাস শেষে গেন্ডারিয়ার মেসে ফেরার পথে লক্ষ্মীবাজারের একরামপুর মোড়ে হামলার শিকার হন। পাঁচ-ছয়জন দুর্বৃত্ত চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে তাঁকে হত্যা করে। হত্যার পর দুর্বৃত্তরা দুটি মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যায়। ওই ঘটনায় সূত্রাপুর থানায় মামলা হয়।

কারাগারে থাকা চার আসামিই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

ওই মামলায় ২০২০ সালের ২০ আগস্ট সৈয়দ জিয়াউল হকসহ নয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ। এ মামলায় রশিদ উন নবী, মোজাম্মেল হোসাইন সায়মন, আরাফাত রহমান ও মো. শেখ আবদুল্লাহ নামের চারজন গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। চার আসামির সবাই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

তাঁরা বলেছেন, অনলাইনে লেখালেখির কারণে তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ২০১৬ সালের অক্টোবরে রশিদ উন নবী গ্রেপ্তারের পর ঢাকা মহানগর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) তৎকালীন প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেছিলেন, নাজিমউদ্দিনকে হত্যার আগে তিন মাস ধরে পরিকল্পনা সাজান আনসার আল ইসলাম। নাজিমউদ্দিন মেসে থাকতেন। তাই তাঁকে বাসায় গিয়ে খুন করা সম্ভব নয় বলে যাওয়া-আসার পথে খুন করার সিদ্ধান্ত নেয় জঙ্গিগোষ্ঠীটি। ওই বছরের ৬ এপ্রিল রাতে পাঁচজন মিলে তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করে।