ভাঙা সড়কে নালা উপচানো ময়লা

রাজধানীর দক্ষিণখান ইউনিয়ন পরিষদের কসাইবাড়ী বাজার থেকে সওদাগরপাড়া পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার সড়কটি ভাঙাচোরা। পানিনিষ্কাশনের নালা উপচে আসা ময়লা পানিতে সয়লাব হয়ে থাকে সড়কটি। চলাচলের প্রধান এই সড়কটির দুরবস্থার কারণে দুর্ভোগে পড়ছে ইউনিয়নের লাখো বাসিন্দা।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উল্টো দিকে উত্তরা দক্ষিণখানের সীমানা শুরু। বিমানবন্দর স্টেশন ঘেঁষেই সড়কটি কসাইবাড়ী রেলক্রসিং হয়ে দক্ষিণখান পর্যন্ত চলে গেছে। গতকাল মঙ্গলবার দেখা যায়, সড়কটির মোল্লারটেক, প্রেমবাগান, গাওয়াইর, কাজীবাড়ী, সওদাগরপাড়া এলাকায় ঢালাই উঠে গিয়ে জায়গায় জায়গায় গর্ত তৈরি হয়েছে।
সড়কের সবচেয়ে খারাপ অবস্থা পূর্ব গাওয়াইর, আমতলা বক্স কালভার্ট ও নোয়াপাড়া এলাকায়। এবড়োখেবড়ো আর খানাখন্দের কারণে এই সড়ক যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। জায়গাটুকু পার করাতে চালকদের রিকশা থেকে নেমে ঠেলতে হচ্ছে। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালকেরা গতি কমিয়ে সাবধানে পার হচ্ছেন।
প্রতিদিন এ সড়ক দিয়েই বনানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়া-আসা করেন আমিনুল ইসলাম। ব্যাটারিচালিত রিকশায় উঠতে উঠতে বললেন, দক্ষিণখান বাজার থেকেই কাদাপানি মাড়িয়ে গাড়িতে উঠতে হয়। ভাঙা রাস্তায় যেভাবে হেলেদুলে গাড়ি চলে, সারাক্ষণ মনে হয় এই বুঝি উল্টাবে।
জাতীয় তথ্য বাতায়ন অনুযায়ী, প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ লোকের বসবাস এই দক্ষিণখান ইউনিয়নে। এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সড়কটি কয়েক বছর আগে সংস্কার করা হয়েছিল। এবারের বর্ষায় সড়কগুলোর অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। গর্তগুলোতে এলাকার লোকজন স্থানীয়ভাবে ইট-সুরকি ফেলেছিল। কিন্তু বৃষ্টিতে সেগুলো সরে গিয়ে আগের অবস্থা তৈরি হয়েছে।
ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালক খালেক মিয়া বলেন, এবার কয়েকটি রিকশা ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা উল্টে পড়ার ঘটনা ঘটে। শুকনো দিনেও গর্তগুলোর কারণে দুর্ঘটনা ঘটে।
দক্ষিণখান ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এস এম তোফাজ্জল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, কসাইবাড়ী থেকে দক্ষিণখানের পূর্ব সীমানা পর্যন্ত সড়ক সংস্কারের জন্য প্রায় আড়াই কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী দুই মাসের মধ্যে সড়ক সংস্কারের কাজ শেষ হবে।
দেখা যায়, সড়কের পাশের পানি নিষ্কাশনের নালাগুলো ময়লা-আবর্জনা জমে বন্ধ হয়ে আছে। ময়লা, দুর্গন্ধময় পানি নালা উপচে সড়কে চলে এসেছে। ফুটপাত না থাকায় লোকজনকে ময়লা পানি মাড়িয়েই চলতে হচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আরিফ হোসেন বলেন, ড্রেনগুলোর সংস্কার করা অতি জরুরি। এক ঘণ্টার বৃষ্টিতে রাস্তায় হাঁটুপানি জমে যায়। ড্রেনের ময়লা পানিতে সড়ক ডুবে থাকে। রাস্তার পাশের ড্রেনগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করা হলে পানি জমে থাকত না।
চেয়ারম্যান তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ছয় কিলোমিটার পানি নিষ্কাশনের নালা করতে পারলে পুরো সড়কের জলাবদ্ধতার সমস্যা থাকত না। এবারই সড়ক ও নালা একসঙ্গে করতে পারলে ভালো হতো। চেষ্টা করেও টাকা না পাওয়ায় শুধু সড়কটি সংস্কার করতে হচ্ছে।