ভারত থেকে আসা ৪ ব্যক্তির করোনা শনাক্ত

করোনাভাইরাস
প্রতীকী ছবি

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম ইউনিয়নের সীমান্ত দিয়ে অবৈধ পথে ভারত থেকে আসা ২৩ বাংলাদেশি নাগরিকের মধ্যে চার ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে ও আজ বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাব থেকে পাওয়া পরীক্ষায় করোনাভাইরাস শনাক্তের ওই বিষয়টি জানা যায়।

তবে তাঁদের শরীরে ভারতীয় ভেরিয়েন্ট করোনাভাইরাস কি না, তা এখনো জানা যায়নি। তবে বৃহস্পতিবার করোনা পজিটিভ ওই চার ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে বলে পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ঢাকায় পরীক্ষার পর জানা যাবে ভারতীয় ভেরিয়েন্ট করোনাভাইরাসে তাঁরা আক্রান্ত কি না।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, গত ১৭ মে উপজেলার দহগ্রাম ইউনিয়নের সরকারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ও মানব পাচারকারী (দালাল) আশরাফুল ইসলামের (৩৫) মাধ্যমে ওই দিন ভোরে সীমান্ত দিয়ে অবৈধ পথে ভারত থেকে ২৩ জনের একটি বেদে সম্প্রদায়ের দল বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এতে পাঁচজন পুরুষ, নয়জন নারী ও নয়জন শিশু রয়েছে। পরে দালাল আশরাফুল ইসলাম ওই দিন সকাল ১০টার দিকে দুটি ইজিবাইকে ওই ২৩ ব্যক্তিকে নিয়ে পাটগ্রামে আসার পথে তিনবিঘা করিডর ফটকে বিজিবি সদস্যরা অবৈধভাবে দেশে প্রবেশের অভিযোগে তাঁদের আটক করেন। পরে তিনবিঘা করিডর বিজিবি ক্যাম্পে নিয়ে তাঁদের আটকে রাখা হয়। আটক ২৩ ব্যক্তির বাড়ি ঢাকার সাভারে।

পরে স্থানীয় উপজেলা থানা প্রশাসন, বিজিবিসহ আলোচনা করে মানবিক দৃষ্টিতে তাদের ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রেখে করোনা নমুনা পরীক্ষার পর বাড়িতে ফেরত পাঠানোর কথা বলা হয়।

স্থানীয় দালাল আশরাফুলকে থানা–পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরবর্তী সময়ে আশরাফুলের স্যাম্পল পরীক্ষা করে নেগেটিভ পাওয়া গেলে তাঁকে কোর্টে চালান করা হয়।

তবে আটক বেদে সম্প্রদায়ের কয়েকজন জানান, তাঁরা জীবিকার তাগিদে দালালের মাধ্যমে দেশে বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে অবৈধ পথে ভারতে প্রবেশ করেন। ভারতে বিভিন্ন প্রদেশে ঘুরে আবারও সীমান্তপথ দিয়ে অবৈধ পথে দেশে ফেরার চেষ্টা করেন।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, গত ১৮ মে সকালে স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশে তাঁদের ওই ইউনিয়নের দহগ্রাম-আঙ্গারপোতা ১০ শয্যা হাসপাতালে ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়। গত সোমবার ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিন শেষে ওই ২৩ ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করে ওই দিনই রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পিসিআর ল্যাবে পাঠানো হয়। বৃহস্পতিবার নমুনা পরীক্ষায় এঁদের মধ্যে চার ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। বর্তমানে তাঁদের ওই হাসপাতালেই আইসোলেশনে রেখে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। অন্য ১৮ ব্যক্তিকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।

রংপুর ৫১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের পানবাড়ি বিজিবি কোম্পানি সদরের কমান্ডার নজরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।