ভারতে যাওয়া হলো না রাজেশ্বর অধিকারীর

শেষ পর্যন্ত আর ভারতে যাওয়া হলো না রাজেশ্বর অধিকারীর (৭৫)। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে বার্ধক্যজনিত রোগে তিনি মারা যান। আর মাত্র তিন দিন পরই বিলুপ্ত ছিটমহল দাসিয়ারছড়া থেকে তাঁর ভারতে যাওয়ার কথা ছিল।
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অভ্যন্তরে সদ্য বিলুপ্ত ছিটমহল দাসিয়ারছড়ার ছোট কামাত গ্রামের বৃদ্ধ রাজেশ্বর অধিকারী। ছিটমহল বিনিময়ের পর পরিবারের ১০ সদস্যসহ ভারতের নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন তিনি। ২৪ নভেম্বর দাসিয়ারছড়া থেকে ভারতে যাওয়ার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে পরিবারটি। তার আগেই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে বার্ধক্যজনিত রোগে না ফেরার দেশে চলে যান রাজেশ্বর অধিকারী। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে দাসিয়ারছড়ায় নিজ বাড়ির পেছনে তাঁর দেহ সৎকার করা হয়। এ সময় গ্রামের শতাধিক মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
পরিবারের সদস্যরা জানান, রাজেশ্বরের মৃত্যুতে এখন পরিবারটির নয় সদস্য ভারতে যাবেন। তাঁদের মধ্যে আছেন রাজেশ্বরের স্ত্রী একাদশী অধিকারী ও তাঁদের তিন ছেলে কৃষ্ণ অধিকারী, শ্রীরাম অধিকারী ও সুমন অধিকারী। এ ছাড়া আছেন দুই ছেলের স্ত্রী ও সন্তানেরা। তবে রাজেশ্বরের একমাত্র মেয়ে মালঞ্চ অধিকারী ভারতে যাবেন না। কারণ, তাঁর বিয়ে হয়েছে কুড়িগ্রামের নাজিমখাঁ ইউনিয়নের ঘড়িয়ালডাঙ্গা গ্রামে। স্বামী পলাশ অধিকারী।
রাজেশ্বরের মৃত্যুতে কাতর হয়ে পড়েছেন তাঁর স্ত্রী একাদশী অধিকারী। তিনি বিলাপ করছিলেন, ‘অ্যালা ওমাক অ্যাটে থুইয়া মুই কেমন করি ভারত যাইম।’
ছেলে কৃষ্ণ বলেন, ‘বাবারই খুব ইচ্ছা আছিল ভারত যাবার। সেই জন্য সবার আগত ভারত যাওয়ার জন্য রেজিস্ট্রেশন করছে। মা যাবার চায় নাই। তাও এলা যাওয়া নাগবে। থাকপার চাইলেও পারব না।’