ভিওআইপি যাচাইয়ের জন্য পাঁচ কোম্পানির ৫২ হাজার সিম কার্ড চিহ্নিত

voip
voip

অবৈধ ভিওআইপির (ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রটোকল) সঙ্গে যুক্ত কি না, যাচাইয়ের জন্য পাঁচ মুঠোফোন অপারেটর কোম্পানির ৫২ হাজার ৩৪৪টি সিম কার্ড চিহ্নিত করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। ব্যাখ্যা চেয়ে শিগগিরই কোম্পানিগুলোর কাছে চিঠি পাঠাবে সংস্থাটি।বিটিআরসি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সংস্থাটি গত তিন দিনে মুঠোফোন কোম্পানিগুলোর কার্যালয়ে নিরীক্ষা চালিয়ে এ সিম কার্ড চিহ্নিত করে।এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ ৩৬ হাজার সিম কার্ড চিহ্নিত হয়েছে সরকারি কোম্পানি টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের। এ ছাড়া রয়েছে এয়ারটেলের ছয় হাজার ৪০০টি, রবির পাঁচ হাজার ৯০০টি, গ্রামীণফোনের তিন হাজার ৮০০টি এবং সবচেয়ে কম বাংলালিংকের ২৪৪টি।বিটিআরসি সূত্র জানায়, কল আসার পর মুঠোফোনে যখন আননোন, প্রাইভেট লেখা; ৮৮৮, ৯৯৯ ইত্যাদি সংখ্যা এবং *** চিহ্ন দেখা যায়, তখন বুঝতে হবে, এগুলো অবৈধ ভিওআইপি কল।বিটিআরসি চেয়ারম্যান সুনীল কান্তি বোস প্রথম আলোকে বলেছেন, ভিওআইপি রোধে মুঠোফোন অপারেটর কোম্পানিগুলোর নিজেদের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় এখনো দুর্বলতা রয়েছে। যেসব সিমকার্ডের মাধ্যমে ভিওআইপি হয়, কোম্পানিগুলো তা বন্ধ না করলে বিটিআরসি নিজেই বন্ধ করে দেবে।অবৈধ ভিওআইপিতে মুঠোফোন কোম্পানিগুলোর সঙ্গে ইন্টারন্যাশনাল গ্যাটওয়ে (আইজিডব্লিউ) এবং ইন্টারকানেকশন এক্সচেঞ্জ কোম্পানিগুলোও (আইসিএক্স) জড়িত বলে জানা গেছে। বিটিআরসি পরের দফায় এই কোম্পানিগুলোতেও নিরীক্ষা চালাবে। আন্তর্জাতিক কল আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে তিনটি স্তর রয়েছে। বিদেশ থেকে কল আসার ক্ষেত্রে (ইনকামিং) প্রথম স্তর হলো আইজিডব্লিউ, দ্বিতীয় স্তর আইসিএক্স এবং সর্বশেষ স্তর হলো মুঠোফোন অপারেটর কোম্পানি। মুঠোফোন অপারেটর কোম্পানিগুলোকে বলা হয় এক্সেস নেটওয়ার্ক সার্ভিস (এএনএস)। এর বাইরে গ্রাহক পর্যায়ে তথ্য বা ডাটা পরিবহনের জন্য রয়েছে ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি)।

গ্রামীণফোন ও বাংলালিংকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এই অভিযান বিশেষ কোনো পদক্ষেপ নয়, বরং বিটিআরসির নিয়মিত কাজ। এর আগেও বহুবার বিটিআরসি এ রকম নিরীক্ষা করেছে।

জানা গেছে, নিয়মানুযায়ী প্রতি সিমকার্ডের জন্য বিটিআরসি ৫০ ডলার করে জরিমানা করতে পারে। সে হিসাবে এই অবৈধ ভিওআইপিতে ব্যবহূত সিমের জরিমানার অঙ্ক দাঁড়াবে ২৬ লাখ ১৭ হাজার ২০০ ডলার (প্রায় ২১ কোটি টাকা)।তবে বিটিআরসি সূত্রে জানা গেছে, এর আগে জরিমানা করেও বিটিআরসি অপারেটরগুলোর কাছ থেকে কোনো টাকা আদায় করতে পারেনি। এ দফায় জরিমানা করা হবে কি হবে না, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বিটিআরসির কমিশন বৈঠকে।দেশের ছয় মুঠোফোন অপারেটরের মধ্যে বিটিআরসির নিরীক্ষার বাইরে রয়েছে সিটিসেল। এর কারণ জানতে চাইলে বিটিআরসির একজন শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, কোড ডিভিশন মাল্টিপল এক্সেস (সিডিএমএ) প্রযুক্তি ব্যবহারের কারণে সিটিসেলের মাধ্যমে খুব বেশি ভিওআইপি করার সুযোগ নেই।যোগাযোগ করলে অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিফোন অপারেটরস অব বাংলাদেশের (অ্যামটব) মহাসচিব টি আই এম নূরুল কবীর প্রথম আলোকে বলেন, এটি মূলত বিটিআরসির প্রযুক্তিগত নিরীক্ষা। বিটিআরসি চিহ্নিত করছে, কলগুলো কোত্থেকে এল বা কোথায় গেল।কমপ্লায়েন্সের দিক বিবেচনায় সংস্থাটি তা করতেই পারে উল্লেখ করে নূরুল কবীর আরও বলেন, পাশাপাশি মুঠোফোনশিল্প খাতকে সুরক্ষা দেওয়ারও দায়িত্ব বিটিআরসির। কারণ, এ খাতের একমাত্র অভিভাবকও এই সংস্থাটিই।: