ভুক্তভোগী-মানবাধিকারকর্মীদের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসা বন্ধ করুন

হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)
ছবি: টুইটার

র‍্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়ায় ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের স্বজন, মানবাধিকারকর্মী, তাঁদের পরিবার ও মানবাধিকার সংস্থার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের প্রতিশোধমূলক আচরণের অভিযোগ তুলেছে ১২টি আন্তর্জাতিক সংগঠন। গতকাল বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের (এইচআরডব্লিউ) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়।

বিজ্ঞপ্তিটি এইচআরডব্লিউর ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বর র‍্যাব ও তার কিছু বর্তমান-সাবেক কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্যাতন, গুমসহ গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিশ্বাসযোগ্য ও ব্যাপক অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।

এইচআরডব্লিউর বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নিষেধাজ্ঞার পর থেকে র‍্যাব ও এনএসআই ভুক্তভোগী ও মানবাধিকারকর্মীদের ফোনে হুমকি দিচ্ছে, স্থানীয় অফিসে তাঁদের ডেকে পাঠাচ্ছে, তাঁদের কর্মস্থল ও বাড়িতে মধ্যরাতে হানা দিচ্ছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে।

একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, চলতি বছরের মধ্য ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চের শুরুর দিক পর্যন্ত র‍্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থা এক মানবাধিকারকর্মীর আত্মীয়কে হয়রানি করেছে। গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারকে সমর্থন করায় তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকার মানবাধিকার সংগঠনগুলোকেও নিশানা করছে। মানবাধিকারকর্মীদের তাঁদের কাজের জন্য হয়রানি করতে সরকার কঠোর আইন ও আদালতকে ব্যবহার করছে বলেও অভিযোগ করা হয়।

এইচআরডব্লিউর বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ১৪ মার্চ জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষজ্ঞরা একটি বিবৃতি দেন। বিবৃতিতে তাঁরা এই বিশ্ব সংস্থার প্রক্রিয়ার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর সঙ্গে সক্রিয়তা-সহযোগিতার কারণে গুমের শিকার ব্যক্তিদের আত্মীয়স্বজন ও মানবাধিকারকর্মীদের বিরুদ্ধে প্রতিহিংসামূলক কর্মকাণ্ড দ্রুত বন্ধে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

এইচআরডব্লিউর বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১২টি আন্তর্জাতিক সংগঠন বলেছে, বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের অবিলম্বে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ভুক্তভোগী, মানবাধিকারকর্মী ও তাঁদের পরিবারের বিরুদ্ধে হয়রানি ও প্রতিশোধমূলক কার্যক্রম বন্ধ করা উচিত। এর পরিবর্তে দেশটিতে অব্যাহত গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে পূর্ণ জবাবদিহি নিশ্চিতে সরকারকে তার প্রচেষ্টায় মনোযোগ দেওয়া উচিত।

১২টি আন্তর্জাতিক সংগঠন হলো অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, অ্যান্টি-ডেথ পেনাল্টি এশিয়া নেটওয়ার্ক, এশিয়ান ফেডারেশন অ্যাগেইনস্ট ইনভলান্টারি ডিসঅ্যাপেয়ারেন্সেস, এশিয়া ফোরাম ফর হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, এশিয়ান নেটওয়ার্ক ফর ফ্রি ইলেকশন্স, ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট জাস্টিস প্রজেক্ট, সিভিকাস, ইলিওস জাস্টিস, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন ফর হিউম্যান রাইটস, রবার্ট এফ কেনেডি হিউম্যান রাইটস ও ওয়ার্ল্ড অর্গানাইজেশন অ্যাগেইনস্ট টর্চার।