‘ভুয়া আগাম জামিন’ আদেশ তৈরি, ৩০ জনকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ

হাইকোর্ট
ফাইল ছবি

মারপিট ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে করা বগুড়ার এক মামলায় ‘ভুয়া আগাম জামিন’ আদেশ তৈরির ঘটনায় বগুড়া সদর থানার আমিনুল ইসলাম, মো. আলিম, মো. আনোয়ার মণ্ডল, লিটন প্রমাণিক, মো. বাদলসহ ৩০ আসামিকে গ্রেপ্তারে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বগুড়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার প্রতি ওই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে ৩০ জনকে গ্রেপ্তারে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। বগুড়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে সার্বিক বিষয়টি তদারকি করতে বলা হয়েছে। নির্দেশনা বাস্তবায়ন বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের মাধ্যমে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

‘ভুয়া আগাম জামিন’ আদেশের বিষয়টি নজরে এলে বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বুধবার স্বতঃপ্রণোদিত রুলসহ এ আদেশ দেন। ভুয়া আদেশ তৈরি করায় তাঁদের বিরুদ্ধে (৩০ জন) কেন আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা রুলে জানতে চাওয়া হয়েছে।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সামিরা তারাননুম রাবেয়া শুনানিতে ছিলেন। উপস্থিত আইনজীবী শেখ আতিয়ার রহমানের বক্তব্যও শোনেন আদালত।

ভুয়া আগাম জামিন আদেশে বগুড়া সদর থানার এক মামলার নম্বর উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানান সামিরা তারাননুম রাবেয়া। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, কোন তারিখের মামলা, তা উল্লেখ নেই। হাইকোর্টের এই বেঞ্চ থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারি ৩০ আসামি ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন পেয়েছেন বলে ভুয়া আদেশ উল্লেখ করা হয়েছে। বগুড়ার এক ব্যক্তির অনুরোধে সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী ৩০ জনের জামিন সঠিক কি না, তা যাচাইয়ের জন্য ওই আদেশটি দেখান।

অসংগতি বিষয়ে রাষ্ট্রের এই আইন কর্মকর্তার বলেন, তথ্য যাচাই করে দেখা যায়, ১৪ ফেব্রুয়ারি এ ধরনের কোনো আদেশ দেননি ওই বেঞ্চ। এই বেঞ্চে আগাম জামিন আবেদনের শুনানিও হয়নি। ভুয়া আগাম জামিন আদেশে রাষ্ট্রপক্ষে তিনজন আইন কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। যাঁদের মধ্যে দুজন ২০১৯ সালে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় ত্যাগ করেছেন, আরেকজন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল।

জামিন আবেদনের নম্বর হলো ৪০, ৫৪২/২১। অথচ সংশ্লিষ্ট শাখায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২৪ ফেব্রুয়ারি সকাল পর্যন্ত দায়ের হওয়া আবেদনে নম্বর হচ্ছে ৯,২৩০/২১। এসব দিক বিবেচনায় নিয়ে আদালত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ওই আদেশ দেন।