ভূমধ্যসাগর থেকে উদ্ধার বাংলাদেশিসহ ১৭৮ অভিবাসী

ভূমধ্যসাগর থেকে উদ্ধার হওয়া একদল অভিবাসীকে তিউনিসিয়ার নৌবাহিনী গতকাল রোববার লিবিয়া সীমান্তবর্তী এল কাতেফ বন্দরে নিয়ে যায়।
ছবি: এএফপি

তিউনিসিয়ার নৌবাহিনী গতকাল রোববার ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার সময় দেশটির দক্ষিণ উপকূল থেকে বাংলাদেশিসহ ১৭৮ জন অভিবাসীকে উদ্ধার করেছে। উদ্ধার হওয়া লোকজন ভূমধ্যসাগর হয়ে ইউরোপ যেতে গত শুক্রবার লিবিয়া থেকে যাত্রা করেছিলেন।

তিউনিসিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।

লিবিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম কাউন্সেলর গাজী মো. আসাদুজ্জামান কবীর সোমবার রাতে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, গত শুক্র ও শনিবার ইউরোপ যাত্রার সময় ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে তিউনিসিয়ায় নৌবাহিনী রোববার যে ১৭৮ জন অভিবাসীকে ভূমধ্যসাগর থেকে উদ্ধার করেছেন তাদের মধ্যে বাংলাদেশের নাগরিক ৮৩ জন। এ ছাড়া রোববার লিবিয়ার কোস্ট গার্ড ভূমধ্যসাগর থেকে ৩১ বাংলাদেশিসহ ২৭১ অভিবাসীকে উদ্ধার করেছে।


তিউনিসিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, তিউনিসিয়ার দক্ষিণ উপকূলে উদ্ধার হওয়া ওই ২৭৮ জন অভিবাসী বাংলাদেশ, তিউনিসিয়া, সিরিয়া, মিসর, নাইজেরিয়া, মালি ও ইথিওপিয়ার নাগরিক। এ ছাড়া মৃত দুই অভিবাসীকেও নৌবাহিনী উদ্ধার করেছে। তবে তাঁরা কোন দেশের নাগরিক, সেটি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

অভিবাসীদের সবাই লিবিয়ার জুয়ারা বন্দর থেকে শুক্র ও শনিবার রাতে ইউরোপের উদ্দেশে নৌকায় চড়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার তিউনিসিয়ার কোস্ট গার্ড দেশটির উপকূল থেকে ভূমধ্যসাগরে ভাসমান একটি বিকল নৌযানের যাত্রী ২৬৪ বাংলাদেশিকে উদ্ধার করেছে। লিবিয়া থেকে একটি নৌযানে চড়ে মিসরের তিন নাগরিকসহ ওই ২৬৪ জন বাংলাদেশি ইতালির পথে যাত্রা করেছিলেন।

প্রসঙ্গত, তিউনিসিয়ার কোস্টগার্ড মে ও জুন মাসে পাঁচ দফায় ভূমধ্যসাগর থেকে ৭০৭ জন বাংলাদেশিকে উদ্ধার করে। এঁদের সবাই এখন আফ্রিকার দেশটিতে অবস্থান করছেন।

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) তথ্য অনুযায়ী, জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২১ জুন পর্যন্ত ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে বিভিন্ন দেশের ১৯ হাজার ৬১ জন ইতালি পৌঁছেছেন। এই ছয় মাসে ১২ হাজার ৪৪০ জন অভিবাসী অবৈধভাবে ইতালি পৌঁছাতে লিবিয়া থেকে যাত্রা করেছিলেন। লিবিয়া থেকে ইতালি পৌঁছানো নাগরিকদের তালিকার শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশ। এই সময়ে বাংলাদেশের ২ হাজার ৬০৮ জন এ সময় ইউরোপের দেশটিতে পৌঁছেছেন। এ বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২১ জুন পর্যন্ত অবৈধভাবে ইউরোপ যাত্রার সময় অন্তত ৮১০ জন অভিবাসী প্রাণ হারিয়েছেন।