ভূমধ্যসাগরে মারা যাওয়ার ১১ মাস পর যুবকের মরদেহ দেশে ফিরল

অজ্ঞাত মৃতদেহ। প্রতীকী ছবি
অজ্ঞাত মৃতদেহ। প্রতীকী ছবি

লিবিয়া থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি যাওয়ার পথে তিউনিসিয়ার উপকূলে অভিবাসীবাহী নৌকায় মারা যাওয়া ইমরান খান (৩৩) না‌মের এক যুবকের মর‌দেহ পৌঁছেছে পরিবারের সদস্যদের কা‌ছে। আজ রোববার সকাল ৯টার দি‌কে শরীয়তপুরের ন‌ড়িয়া উপ‌জেলার কেদারপু‌র গ্রামে আনা হয় মর‌দেহ‌টি।

ইমরান খান উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়‌নের কেদারপুর গ্রামের আবদুল মান্নান খানের ছেলে। লিবিয়া হয়ে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি যাওয়ার পথে গত বছরের আগস্টে তাঁর মৃত্যু হয়।

ইমরান খানের ছোট ভাই শোভন খান জানান, ২০১৮ সা‌লের মার্চ মা‌সে দালালের প্রলোভনে সুদা‌নে পা‌ড়ি জমান ইমরান। প‌রে সেখান থে‌কে তিনি ‌লি‌বিয়া যান। এর ছয় মাস পর গত ২৯ আগস্ট লি‌বিয়া থে‌কে অভিবাসীবাহী নৌকায় ইতালি যাওয়ার সময় তিউনিসিয়ার উপকূলে পৌঁছালে নৌকার তেল, সঙ্গে থাকা পানি ও খাবার ফুরিয়ে যায়। দুদিন পর অন্যদের সঙ্গে ইমরানও খাবার না পে‌য়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। প‌রে নৌকাতেই মারা যান ইমরান। পরবর্তী সময়ে তাঁদের বহনকারী নৌকাটি ইউরোপের দক্ষিণাঞ্চলীয় দেশ মাল্টায় পৌঁছালে মৃত ও জীবিত থাকা শ্রমিকদের উদ্ধার করেন দেশটির কোস্টগার্ডের সদস্যরা। প‌রে ইমরানের লাশ মাল্টার মর্গে রাখা হয়। এর তিন মাস পর পরিবারের কাছে ইমরা‌নের মৃত্যুর খবর আসে। ন‌ড়িয়ার ইতা‌লিপ্রবাসীরা ইমরা‌নের মর‌দেহ‌ শনাক্ত ক‌রেন।

পু‌লিশ ও পা‌রিবা‌রিক সূত্রে জানা গেছে, ইমরানের মরদেহ দেশে আনা ব্যয়বহুল জেনে স্বজনরা শুরুতে অনীহা প্রকাশ করেছিলেন। শেষে ১১ মাস ম‌র্গে থাকার পর ইতালিপ্রবাসী সহায়তায় মাল্টার মর্গ থে‌কে ইমরানের মরদেহ শুক্রবার বাংলাদেশে পাঠানো হয়। শনিবার রাত ১১টা ২০ মি‌নি‌টের দিকে ইমরা‌নের মর‌দেহ শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দ‌রে পৌঁছায়। প‌রে রোববার সকালে শরীয়তপু‌রের গ্রা‌মের বা‌ড়ি‌তে ইমরা‌নের মর‌দেহ নি‌য়ে আসেন স্বজনেরা। বেলা ২টার দি‌কে জানাজা শে‌ষে ন‌ড়িয়া মুলফতগঞ্জ মাদ্রাসাসংলগ্ন কবরস্থা‌নে তাঁর দাফন সম্পন্ন হয়।

ইমরানের ভাই শোভন খান ব‌লেন, ‘যারা ইমরান ভাইকে প্রলোভন দেখিয়ে ইতা‌লি পাঠানোর নাম করে নৌকায় তুলেছে, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হতে হবে।’ তবে তিনি কোনো দালালের নাম বলতে পারেননি।

নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুরুল হক আকন্দ প্রথম আলোকে বলেন, ইমরানের লাশ তাঁর পরিবার দাফন করেছে। তাঁরা এ বিষয়ে কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেননি। তিনি কোন দালালের মাধ্যমে লিবিয়া গেছেন, তাও জানা সম্ভব হয়নি।