ভূমিমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ, সেই সংখ্যালঘু পরিবার ফিরে পেল বসতভিটা

চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলা চেয়ারম্যানের কক্ষে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়ি ফেরতের বিষয়ে সমঝোতা বৈঠক হয়। ছবি: প্রথম আলো
চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলা চেয়ারম্যানের কক্ষে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়ি ফেরতের বিষয়ে সমঝোতা বৈঠক হয়। ছবি: প্রথম আলো

চট্টগ্রামের আনোয়ারা সদরে সংখ্যালঘু যে পরিবারটির বসতভিটা জোর করে রেজিস্ট্রি করে নেওয়া হয়েছিল, সেই পরিবারটি তাদের বাড়ি ও কালীমন্দির ফেরত পেয়েছে। আজ মঙ্গলবার ওই জায়গা পুনরায় রেজিস্ট্রিও পায় পরিবারটি। স্থানীয় সাংসদ ও ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর হস্তক্ষেপে জায়গাটি ফেরত পায়।

অভিযোগ ওঠে, ১০ এপ্রিল বুধবার বিকেলে আনোয়ারার সাবরেজিস্ট্রার সালাহ উদ্দিন আহমেদকে নিয়ে উপজেলা সদরের জয়কালী বাজার এলাকার বয়োবৃদ্ধ শিক্ষক নিরঞ্জন চক্রবর্তীর ঘরে যান স্থানীয় কামরুল ইসলাম প্রকাশ হেলাল ও তাঁর লোকজন। ওই সময় তাঁরা নিরঞ্জনের কাছ থেকে জোর করে দলিলে স্বাক্ষর নিয়ে ঘর থেকে সবাইকে বের করে দিয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন। ওই সময় তাঁরা কালীমন্দিরেও তালা ঝুলিয়ে দেন।

এ বিষয়ে ‘চট্টগ্রামের আনোয়ারা: সংখ্যালঘু পরিবারের ভিটা দখলের অভিযোগ’ শিরোনামে ২৩ এপ্রিল প্রথম আলোতে প্রতিবেদন ছাপা হয়।

এ ঘটনায় ১৮ এপ্রিল হেলালসহ সাতজনকে আসামি করে আনোয়ারা থানায় মামলা করেন নিরঞ্জন চক্রবর্তীর পুত্র ও অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক প্রণব রঞ্জন চক্রবর্তী।

জোরপূর্বক বসতভিটা দখলের ঘটনায় কয়েক দিন ধরে চট্টগ্রামজুড়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছিল। পরে স্থানীয় হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতাদের সহায়তায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ভূমিমন্ত্রীকে পুরো ঘটনা জানালে তিনি উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনকে জমি ফেরত দিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। তারই আলোকে আজ সকালে সাবরেজিস্ট্রি অফিসে ওই জমি ফেরত দেন অভিযুক্ত কামরুল ইসলাম।

জমি ফেরতের পর দুপুরে আনোয়ারা উপজেলা চেয়ারাম্যান তৌহিদুল হক চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান মৃণাল কান্তি ধর, আনোয়ারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জোবায়ের আহামদ ও থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাহবুব মিলকির উপস্থিতিতে সমঝোতা বৈঠক হয়।
জানতে চাইলে নিরঞ্জন চক্রবর্তীর নাতনি পাপিয়া চক্রবর্তী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা জায়গা ফেরত পেয়েছি, রেজিস্ট্রিও সম্পন্ন হয়েছে। এ জন্য ভূমিমন্ত্রী, উপজেলা প্রশাসন ও সাংবাদিকদের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।’
আনোয়ারা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাহবুব মিলকি বলেন, ‘বাদীপক্ষ থেকে আমরা একটা আপসনামা পেয়েছি, তারা আর মামলা চালাবে না। এ কারণে আমরা এখন পরবর্তী প্রক্রিয়া শেষ করব।’

আনোয়ারা উপজেলা চেয়ারম্যান তৌহিদুল হক চৌধুরী বলেন, ভূমিমন্ত্রীর নির্দেশে অভিযুক্ত ব্যক্তি খরচসহ রেজিস্ট্রি করে জমি ফেরত দিয়েছেন।