ভয়াবহ জঙ্গি হামলার সেই দিন আজ

রাজধানীর গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে ছয় বছর আগে এই দিনে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছিল। এই হামলাকে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় জঙ্গি হামলা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

২০১৬ সালের এই দিনে রেস্তোরাঁয় অস্ত্রের মুখে জঙ্গিরা দেশি–বিদেশি নাগরিকদের জিম্মি করে। সেদিন তাদের হামলায় দুই পুলিশ সদস্যসহ দেশি–বিদেশি ২০ জন নিহত হন। তাঁদের মধ্যে নয়জন ইতালীয়, সাতজন জাপানি, তিনজন বাংলাদেশি ও একজন ভারতীয় ছিলেন। সেই জঙ্গি হামলায় স্তম্ভিত হয়ে পড়ে পুরো দেশ।

হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে সেনা কমান্ডোদের অভিযান ‘অপারেশন থান্ডারবোল্ট’। ২০১৬ সালের ২ জুলাই।
ফাইল ছবি

এর বাইরে জিম্মিদের মুক্ত করতে অভিযান চালাতে গিয়ে পুলিশের দুই কর্মকর্তা নিহত হন। পুলিশ বলছে, ওই হামলার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অব্যাহত অভিযানে দেশে জঙ্গি তৎপরতা কমে এসেছে। এখন দেশে কোনো ধরনের হামলা চালানোর সক্ষমতা নেই জঙ্গিদের।

হোলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ধারাবাহিক অভিযান এবং তৎপরতার কারণে জঙ্গি কার্যক্রম স্তিমিত হয়ে এসেছে।
মো. আসাদুজ্জামান, পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান
আরও পড়ুন

২০১৬ সালের ১ জুলাই রাতে জঙ্গিরা রেস্তোরাঁয় প্রবেশের পরপরই ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। প্রথম দফায় জিম্মি নাগরিকদের মুক্ত করতে অভিযান চালাতে গিয়ে দুজন পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হন। হামলার ভয়াবহতা ও পরিস্থিতি বিবেচনায় সেখানে পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব, বিজিবি, নেভি কমান্ডো ও সেনাবাহিনী যুক্ত হয়।

আরও পড়ুন

রাতভর জঙ্গিরা গুলি করে ও কুপিয়ে রেস্তোরাঁয় আসা গর্ভবতী নারী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, উন্নয়ন সহযোগী বিদেশি নাগরিকদের হত্যা করে। সেনাবাহিনীর কমান্ডো অভিযানের মধ্য দিয়ে পরদিন সকালে শেষ হয় ১২ ঘণ্টার শ্বাসরুদ্ধকর জিম্মিদশার।

অভিযানে সরাসরি হামলায় জড়িত পাঁচ জঙ্গি নিহত হন। তাঁরা হলেন রোহান ইমতিয়াজ, সামিউল মোবাশ্বির, নিবরাস ইসলাম, শফিকুল ইসলাম ও খায়রুল ইসলাম। তাঁদের মধ্যে প্রথম তিনজন উচ্চ ও উচ্চমধ্যবিত্ত শিক্ষিত পরিবারের সন্তান।

আরও পড়ুন

ভয়াবহ এই জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছিল পবিত্র রমজান মাসে ঈদুল ফিতরের কয়েক দিন আগে। এই হামলার দায় স্বীকার করে বিবৃতি দেয় মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)। হামলাকারী পাঁচজনকে তাদের ‘সৈনিক’ বলেও দাবি করে জঙ্গি সংগঠনটি। তবে সরকার আইএসের এই দাবিকে নাকচ করে দিয়ে বলেছে, দেশীয় জঙ্গি সংগঠন নব্য জেএমবি এই হামলার জন্য দায়ী।

পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মো. আসাদুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, হোলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ধারাবাহিক অভিযান এবং তৎপরতার কারণে জঙ্গি কার্যক্রম স্তিমিত হয়ে এসেছে। এখন কোনো ধরনের হামলা চালানোর সক্ষমতা তাদের নেই।

আরও পড়ুন