মতাদর্শের পার্থক্য থাকলেও অন্যকে সম্মান দেওয়া যায়

আজ শুক্রবার সাইবার বুলিং প্রতিরোধ দিবস। জুন মাসের তৃতীয় শুক্রবার বিশ্বব্যাপী দিবসটি পালিত হয়। বাংলাদেশে এর আগে সেভাবে পালন করা না হলেও এবার বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান দিবসটি পালন করছে। ‘স্টপ সাইবার বুলিং ডে’ ওয়েবসাইটের তথ্যমতে, বিশ্বে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ৬০ শতাংশ অনলাইন বুলিং বা হয়রানির শিকার হয়। বাংলাদেশেও দিন দিন বাড়ছে এর মাত্রা। কীভাবে অনলাইনে হয়রানি থেকে শিক্ষার্থীসহ সবাই সচেতন হতে পারে, সে বিষয়ে কথা বলেছেন এই বিশিষ্টজন।

তাহসান রহমান খান

যেকোনো মানুষের ওপর বুলিংয়ের নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। তারকাদের ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম ঘটে না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক তারকা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ছবি দিয়েছেন, সেখানে সেই তারকা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নিয়েও বাজে মন্তব্য করা হচ্ছে। কিছু মানুষ সব সময় তাঁদের চারপাশে নেতিবাচকতা ও ঘৃণা ছড়িয়ে দিতে পছন্দ করেন। এটা আসলে তাঁদের হীনম্মন্যতার প্রকাশ। তবে এটা শুধু বাংলাদেশ নয়, সব জায়গায় আছে। এটা একধরনের মানসিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে।

এখন আমাদের নতুন প্রজন্মকে জানাতে হবে, কাউকে বাজে কথা বলা বা খারাপ মন্তব্য করার মধ্যে বীরত্ব নেই। বিশ্বজুড়েই বেশির ভাগ তারকা নানা কারণে এ বিষয়ে অভিযোগ করেন না। আবার একই সঙ্গে এটাও সত্য, ধীরে ধীরে এ প্রবণতার পরিবর্তন ঘটছে। এখন তারকারাও সাইবার বুলিং বা অনলাইনে হয়রানির বিরুদ্ধে কথা বলছেন, প্রতিবাদে সোচ্চার হচ্ছেন; যা অনেক মানুষকে উৎসাহিত করছে এমন অপরাধের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে।

অনলাইন সচেতনতা বাড়াতে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন পরিচালনা করতে হবে। আমি গ্রামীণফোনের ‘জানতে হবে কোথায় থামতে হবে’ ক্যাম্পেইনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছি। মানুষকে সচেতন করে তুলতে এ ধরনের উদ্যোগ গ্রহণের বিকল্প নেই। বুলিং প্রতিরোধে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের শক্তিকেই আমরা ব্যবহার করতে পারি। আমাদের সবাইকে উপলব্ধি করতে হবে—ইন্টারনেটের সম্ভাবনা বাস্তবায়নের সুযোগ যেমন আমাদের হাতে, তেমনি এর অপব্যবহারও আমাদের মাধ্যমেই ঘটে। আমরা দায়িত্বশীল হলে সাইবার বুলিংও প্রতিরোধ করা সম্ভব। বুলিং প্রতিরোধে নতুন প্রজন্মকে বোঝাতে হবে, বাজে মন্তব্যের মাধ্যমে নিজের কুরুচিপূর্ণ মনোভাবের প্রকাশ ঘটে। মতাদর্শের পার্থক্য থাকলেও অন্যজনকে সম্মান দেওয়া যায়, কদর্য কথা বলার প্রয়োজন নেই। আমাদের ইতিবাচক অনুভূতির চর্চা করতে হবে। আমি সবাইকে অনুরোধ করব, আপনারা কোনো গুজবে বিশ্বাস করবেন না। আমাদের সবাইকে সম্মিলিতভাবে সাইবার বুলিংয়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।