মধুপুরের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীদের উচ্ছেদ পরিকল্পনার প্রতিবাদ

মধুপুরে জাতীয় উদ্যান ও সংরক্ষিত বনভূমির নামে ক্ষুদ্র নৃ–গোষ্ঠীদের ভূমি থেকে উচ্ছেদ ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে শাহবাগে জাদুঘরের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ
ছবি: প্রথম আলো

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়-সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ‘সংরক্ষিত বনভূমি দখলদারদের’ তালিকা তৈরি করে ৩০ জানুয়ারির মধ্যে তাদের উচ্ছেদের নোটিশ দিতে বলেছে। তালিকায় আছে টাঙ্গাইলের মধুপুর বনের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী। এর প্রতিক্রিয়ায় আজ বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে বিভিন্ন সংগঠন যৌথ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে।

কর্মসূচিতে মধুপুর বনের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীদের ‘ঐতিহ্যগত ও চিরায়ত’ ভূমির মালিকানার স্বীকৃতি দাবি করা হয়। বাংলাদেশের বনাঞ্চল ধ্বংসের জন্য বন বিভাগের কর্মকর্তাদের দায়ী করে তাঁদের শাস্তি চেয়েছেন বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিনিধিরা।

সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আজিজুর রহমান বলেন, মধুপুরের বনাঞ্চলে যাঁরা হাজার বছর ধরে বসবাস করে আসছেন, তাঁরাই ওই বনের রক্ষক। এখন তাঁদের নদী-খাল দখলকারী চোর-গুন্ডা-বদমাশদের সঙ্গে এক কাতারে ফেলা হচ্ছে। নাট্যব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ বলেন, বন থেকে গারোদের উচ্ছেদ করা হলে অবিলম্বে বনটি উজাড় হবে।

কর্মসূচি থেকে সরকারের কাছে সাত দফা দাবি জানানো হয়। এর মধ্যে আছে মধুপুর বনের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষের ঐতিহ্যগত ও চিরায়ত ভূমি চিহ্নিত করে মালিকানা দেওয়া, তাঁদের ভূমিতে সরকারি প্রকল্প বাতিল করা, আলোচনা ছাড়া এমন কোনো প্রকল্প না নেওয়া, তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা বন মামলাগুলো বাতিল করা, সমতলের ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীদের জন্য সরকার প্রতিশ্রুত পৃথক ভূমি কমিশন গঠন করা, সংখ্যালঘু কমিশন গঠন করা, জাতীয় সংলাপের মাধ্যমে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীদের মানবাধিকার নিশ্চিত করা।

বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন। তিনি বলেন, রাষ্ট্র বা সমাজ কতখানি উন্নত, গণতান্ত্রিক বা সভ্য, তা বোঝা যায় সেখানে সংখ্যালঘু মানুষেরা কেমন আছেন, তা বিচার করে।

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন সামাজিক আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য রোবায়েত ফেরদৌস, বাংলাদেশ খ্রিষ্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নির্মল রোজারিও, ঐক্য ন্যাপের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হারুন-অর-রশিদ ভূঁইয়া, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ প্রমুখ। কর্মসূচির আয়োজক সংগঠনগুলোর মধ্যে ছিল এএলআরডি, ব্লাস্ট, বেলা, নিজেরা করি, নাগরিক উদ্যোগ, জন উদ্যোগ, কাপেং ফাউন্ডেশন, জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদ, আরডিসি, জাতীয় হাজং সংগঠন, বানাই উন্নয়ন সংগঠন, আদিবাসী যুব ফোরাম, মাদল, এফ মাইনর, আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ, পিসিপি, বাগাছাস, গাসু, বাহাছাস, জিএসএফ প্রভৃতি।