মধ্যপৌষে দেশজুড়ে শীতের প্রকোপ
পৌষের মাঝামাঝি এসে সারা দেশে জেঁকে বসেছে তীব্র শীত। কোনো কোনো অঞ্চলে বইছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। যেখানে তাপমাত্রার হিসাবে শৈত্যপ্রবাহ নেই, সেখানেও শীতের প্রকোপ কম নয়। কারণ ঘন কুয়াশায় সূর্যের দেখা না পাওয়া, উত্তরের ঠান্ডা বাতাস এবং সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান কমে যাওয়া।
কারণ যা-ই হোক, শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি জনজীবনে কিছু অস্বস্তি ও অসুবিধা সৃষ্টি করে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্ক মানুষের কষ্ট বাড়ে। সর্দি-কাশি, হাঁপানি, নিউমোনিয়া প্রভৃতি রোগব্যাধির প্রকোপ বাড়ে। দরিদ্র কর্মজীবীদের, বিশেষ করে কৃষি খাত ও শহরের বাস্তুহীন মানুষের জন্য দুর্ভোগের কারণ হয় তীব্র শীত।
আবহাওয়া অফিস বলছে, আবহাওয়ার বর্তমান অবস্থা আরও দুই দিন চলতে পারে। এই পর্যায়ে তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা কম। কুয়াশা কমে গিয়ে রোদ উঠলেই শীতের তীব্রতা কমবে। গতকাল শুক্রবার দেশজুড়ে যে ঘন কুয়াশার বিস্তার ঘটেছিল তার কারণ শ্রীলঙ্কার কাছে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট একটি লঘুচাপ। ওই লঘুচাপের ফলে প্রচুর জলীয় বাষ্প এসে কুয়াশার সৃষ্টি করেছে।
তবে আবহাওয়া অফিসের দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে জানুয়ারিতে একাধিক শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এগুলো হতে পারে মাঝারি ও তীব্র মাত্রার শৈত্যপ্রবাহ।
আবহাওয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গতকাল মৃদু শৈত্যপ্রবাহ (তাপমাত্রা ১০ থেকে আট ডিগ্রি সেলসিয়াস) বইছিল পাবনা, যশোর ও কুষ্টিয়া অঞ্চলের ওপর দিয়ে। রাজশাহীতেও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা সাড়ে ১০ ডিগ্রিতে নেমেছিল। অন্যান্য বিভাগীয় শহরের মধ্যে ঢাকায় সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল যথাক্রমে সাড়ে ১৬ ও ১৩ দশমিক চার ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান এতটা কমে যাওয়ায় ঢাকায় গতকাল শীতের অনুভূতি ছিল এ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি।
অন্যান্য বিভাগীয় শহরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা যেমন রাজশাহীর তুলনায় বেশি ছিল, তেমনি সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধানও বেশি ছিল। চট্টগ্রামে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল যথাক্রমে ২৮ ও ১৫ দশমিক আট ডিগ্রি। খুলনায় সাড়ে ২১ ও ১১ ডিগ্রি। সিলেটে ২৮ দশমিক এক ও ১৩ দশমিক ২ ডিগ্রি এবং বরিশালে ২২ দশমিক সাত ও ১২ দশমিক চার ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এমনিতে এ বছর শীত মৌসুম স্বল্পস্থায়ী ও শীতের প্রকোপ কম হওয়ার কথা। কারণ বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার (ডব্লিউএমও) পূর্বাভাস হচ্ছে ২০১৪ সাল পৃথিবীর জানা ইতিহাসের উষ্ণতম বছর হতে পারে। যদি তা নাও হয়, এটি পৃথিবীর উষ্ণতম বছরগুলোর একটি যে হবে তা নিশ্চিত করেই বলেছে ডব্লিউএমও। এখন পর্যন্ত পৃথিবীর উষ্ণতম বছর হিসেবে রেকর্ড বইয়ে আছে ১৯৩৪ সালটি। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ১৯৯৮ সাল।