মধ্যরাতে কুঁড়েঘরে ট্রাক ঢুকে ঘুমন্ত মা-মেয়ে নিহত
সারাদিন ভিক্ষা করে ইফতারের পর এক মুঠো খেয়ে জীর্ণ কুঁড়েঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন মা ও মেয়ে। মধ্যরাতে বালুবাহী ট্রাকের চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে ট্রাকটি উল্টে পড়ে সেই কুঁড়েঘরের ওপর। এতে ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে নিহত হয়েছেন ঘুমন্ত মা ও মেয়ে।
গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে নন্দীগ্রাম উপজেলার ওমরপুর এলাকায় বগুড়া-নাটোর মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত মা ও মেয়ে হলেন, ওমরপুর এলাকার মৃত কোরবান আলীর স্ত্রী আতেজান বেওয়া (৭০) ও তাঁর মেয়ে কাতলী বেগম (৪৫)।
নিহত মা–মেয়ে মহাসড়কের পাশে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের জায়গায় কুঁড়েঘর তুলে সেখানে বসবাস করতেন।
হাইওয়ে কুন্দারহাট থানা–পুলিশ জানিয়েছে, দিনাজপুর থেকে বালু বোঝাই একটি ট্রাক পাবনার রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে যাচ্ছিল। রাত আড়াইটার দিকে বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার ওমরপুর হাট এলাকায় ট্রাকটি মহাসড়কের পাশে কুঁড়েঘরের ওপর উল্টে পড়ে। এতে ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই মা-মেয়ে নিহত হন।
খবর পেয়ে হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা রেকার দিয়ে ট্রাক সরিয়ে মা-মেয়ের লাশ উদ্ধার করেন।
দুর্ঘটনার পর ট্রাক চালক পালিয়ে গেলেও চালকের সহকারী আলম হোসেনকে (৩০) আটক করেছে পুলিশ।
কুন্দারহাট হাইওয়ে থানার পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ট্রাকটি পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। এ ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি। ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
নন্দীগ্রাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল আশরাফ বলেন, মা ও মেয়ে দুজনই ভিক্ষা করতেন। মাথা গোঁজার ঠাঁই না থাকায় মহাসড়কের পাশে কুঁড়েঘর তুলে থাকতেন। গতকাল শুক্রবার রোজা রেখে ইফতারের পর একমুঠো খেয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন তাঁরা। সেহেরির আগেই ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে দুজনই প্রাণ হারিয়েছেন।