মনে হচ্ছে ষড়যন্ত্রে পড়ে গেছি, বললেন সম্রাটের স্ত্রী

আজ বিকেলে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বেরিয়ে যাচ্ছেন ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের স্ত্রী শারমিন চৌধুরী।
ছবি: প্রথম আলো

ক্যাসিনো কাণ্ডের আলোচিত ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের স্ত্রী শারমিন চৌধুরী দাবি করেছেন, তাঁর পরিবার ষড়যন্ত্রের শিকার। কিন্তু কারা ষড়যন্ত্র করেছে, সে বিষয়ে তিনি কিছু বলেননি।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় শারমিন চৌধুরী সাংবাদিকদের কাছে এ দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘আসলে আমরা ষড়যন্ত্রে পড়ে গেছি, সম্রাটের সঙ্গে সঙ্গে পুরো ফ্যামেলিটা।’
সাংবাদিকেরা জানতে চান, সম্রাট কী আসলেই ষড়যন্ত্রের শিকার? জবাবে শারমিন চৌধুরী বলেন, হ্যাঁ, মনে হচ্ছে।

কারা ষড়যন্ত্র করছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে সম্রাটের স্ত্রী বলেন, ‘আসলে কারা ষড়যন্ত্র করছে, তা আমি বলতে পারব না।’

ষড়যন্ত্র হলে পুলিশ যে ক্যাসিনো বিরোধী অভিযানে অবৈধ জিনিসপত্র উদ্ধার করল, সেটা কী। দুদক কেন সম্রাটের বিরুদ্ধে তিন কোটি টাকার অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের মামলা দিল? জবাবে শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘এটা তো তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার। ব্যক্তিগত ব্যাপারের সঙ্গে কেন যে রাজনীতিকে জড়াচ্ছে, এটা আমি বুঝতে পারছি না।’

সম্রাটের বিরুদ্ধে দুদকের দায়ের করা মামলায় সকাল ১০টা থেকে বেলা দুইটা পর্যন্ত শারমিন চৌধুরী ও ভাই ফরিদ আহমেদ চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন কমিশনের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে তিন সদস্যের অনুসন্ধানকারী দল।
দুদক কেন এলেন, কী বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে— সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘আইনের প্রতি আমার খুব শ্রদ্ধা। আমাকে ডাকা হয়েছিল, আমি এসেছি।’

সম্রাটের অবৈধ সম্পদ আপনার কাছে, এমন অভিযোগ সম্পর্কে শারমিন বলে, ‘না, এমন কোনো কথা বলা হয়নি। আমিও জানি না।’

সম্রাটের অবৈধ সম্পদ রয়েছে, সে বিষয়ে বলেন, ‘এটা তারাই (দুদক) বলতে পারবেন।’
সম্রাটের অবৈধ টাকায় তাঁর নামে সম্পদ গড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে সম্রাটের স্ত্রী শারমিন চৌধুরী বলেন, ‘সম্রাট ও আমিসহ পরিবারের সদস্যরা ষড়যন্ত্রের শিকার।’

পরে শারমিন চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে দুদক সচিব দিলোয়ার বখত্‌ সাংবাদিকদের বলেন, ‘অবৈধভাবে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০১৯ সালের নভেম্বরে সম্রাটের বিরুদ্ধে দুদক মামলা করেছে। এই মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা সংশ্লিষ্টদের জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। সম্রাটের আরও অবৈধ সম্পদ আছে কি না, তা খোঁজা হচ্ছে। সম্রাটকে যারা দুর্নীতি করতে সহায়তা করছে তাদেরও খোঁজা হবে।’

তবে সম্রাটের ভাই ও স্ত্রীর কাছ থেকে কী ধরনের তথ্য পাওয়া গেছে, সে বিষয়ে তিনি কিছু বলেননি।

এর আগে গত মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

সম্রাটের বিরুদ্ধে দুদকের মামলার অভিযোগে বলা হয়, অসৎ উদ্দেশে বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসা ও অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে নিজ নামে দুই কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের কথা বলা হয়েছে। এই মামলার তদন্তের অংশ হিসেবে তাদের (সম্রাটের স্ত্রী ও ভাই) জিজ্ঞাসাবাদ করা হলো।

ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে গত বছরের ৬ অক্টোবর কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। তাঁর বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ক্যাসিনো পরিচালনা করে বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জনের অভিযোগ রয়েছে।