মহসেন জুট মিল বন্ধ ঘোষণা
খুলনা নগরের ফুলবাড়ী গেট এলাকার বেসরকারি মহসেন জুট মিলটি স্থায়ীভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গত বুধবার রাতে এক নোটিশে এই ঘোষণা দিয়েছে মিল কর্তৃপক্ষ।
মিলের নির্বাহী পরিচালক তাওহিদ-উল ইসলাম স্বাক্ষরিত ওই নোটিশে বলা হয়, শ্রম আইন অনুযায়ী ১৭ জুলাই সকাল ছয়টা থেকে মিলের ৬৩১ জন শ্রমিক ও ৩৬ জন কর্মচারীকে চাকরি হতে ছাঁটাই করা হলো। আর্থিক দুরবস্থা সত্ত্বেও তাঁদের আইনানুগ ক্ষতিপূণ, লে-অফ বেনিফিট, গ্র্যাচুইটির পাওয়ানাদি অর্থসংস্থান সাপেক্ষে পর্যায়ক্রমে পরিশোধ করা হবে।
মিলের কর্মকর্তা ও শ্রমিকেরা জানান, চলতি মূলধন ও কাঁচা পাটের অভাবে শ্রমিক-কর্মচারীদের মজুরি-বেতন দিতে না পারায় কর্তৃপক্ষ গত ২০১৩ সালের ১৯ জুলাই এক দাপ্তরিক আদেশের মাধ্যমে ২০১৩ সালের ২০ জুন থেকে চলতি বছরের ১৬ জুলাই পর্যন্ত মিল লে-অফ ঘোষণা করা হয়। লে-অফ শেষে গতকাল বৃহস্পতিবার মিলটি চালু হওয়ায় কথা ছিল। এর আগে বুধবার রাতে মিলের মূল ফটকে নোটিশ লাগিয়ে স্থায়ীভাবে বন্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়। গতকাল সকালে শ্রমিকেরা কাজে এলে নিরাপত্তারক্ষীরা শ্রমিকদের মিলে প্রবেশ করতে বাধা দেয়।
মিলের একাধিক শ্রমিক জানান, ঈদের আগে এভাবে মিলটি বন্ধ করায় তাঁরা বিপাকে পড়েছেন। লে-অফের সময় তাঁরা কিছু কিছু টাকা পাচ্ছিলেন। কিন্তু স্থায়ীভাবে বন্ধ হওয়ায় তাঁরা সম্পূর্ণরূপে বেকার হয়ে পড়লেন।
মিলের সিবিএ সাধারণ সম্পাদক শেখ আবদুর রশিদ প্রথম আলোকে বলেন, /গত ছয় মাসে শ্রমিকেরা কোনো টাকা পাননি। কর্তৃপক্ষ ঈদের পর মিল বিক্রি করে সব পাওনা পরিশোধের আশ্বাস দিয়েছে। যদি সব টাকা দিয়ে দেয় তবে আমাদের কোনো কথা নেই।’
মিলের মহাব্যবস্থাপক গোপাল কৃষ্ণ পাল প্রথম আলোকে বলেন, এই মিলের উৎপাদিত পণ্য আমেরিকা-ইউরোপের বাজারে যেত। সেখানকার দেশগুলো নেওয়া বন্ধ করলে ভারতে পাঠানো হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ডলারের দাম বাড়ায় তারাও নেওয়া বন্ধ করেছে। এদিকে মিলের দেনা বাড়ছে। এ অবস্থায় মিলটি বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শ্রমিকদের পাওনার বিষয়ে গোপাল কৃষ্ণ বলেন, ‘আমরা ২৪ তারিখের মধ্যে কিছু টাকা দেব, বাকি টাকা ঈদের পরে মিল বিক্রয় করে পরিশোধ করব।’