মা-তিন মেয়েকে পুড়িয়ে হত্যা: গ্রেপ্তার হননি এজাহারের ৫ আসামি
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে মা ও তিন মেয়েসহ চারজনের হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার লোকজনের মধ্যে আটজন জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। গ্রেপ্তার হননি এজাহারভুক্ত পাঁচ আসামি। মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া এবং বিচার শুরু হওয়া নিয়ে বাদী মোফাজ্জল হোসেন তাই সন্দিহান।
মেয়েকে বিয়ে দিতে রাজি না হওয়ায় মির্জাপুর উপজেলার সোহাগপাড়া গ্রামে গত বছরের ৬ অক্টোবর পবিত্র ঈদুল আজহার রাতে ওই গ্রামের মালয়েশিয়াপ্রবাসী মজিবর রহমানের স্ত্রী হাসনা বেগম (৩৫) এবং তিন মেয়ে উপজেলার গোড়াই উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী মনিরা আক্তার (১৪), বাকপ্রতিবন্ধী মীম আক্তার (১০) ও ব্র্যাক স্কুলের নার্সারি শ্রেণির শিক্ষার্থী মলি আক্তারকে (৭) ঘুমন্ত অবস্থায় পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় পরদিন ওই গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমকে প্রধান আসামি করে ১০ জনের বিরুদ্ধে মির্জাপুর থানায় মামলা করেন মজিবরের শ্যালক মোফাজ্জল হোসেন।
মামলার প্রধান আসামিকে ধরিয়ে দিতে গত বছরের ১১ অক্টোবর পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি এস এম মাহফুজুল হক নুরুজ্জামান এক লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেন।
গত ২২ নভেম্বর মামলার প্রধান আসামি জাহাঙ্গীর আলমকে (২৬) পুলিশ তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। তিনি টাঙ্গাইলের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবিন্দ দেন। এ ছাড়া বিভিন্ন সময় মামলার এজাহারভুক্ত আসামিসহ পুলিশ ১৯ জনকে গ্রেপ্তার করে।
আজ শনিবার খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জামিনে যাঁরা ছাড়া পেয়েছেন তাঁদের মধ্যে পেট্রল বিক্রির অভিযোগে গ্রেপ্তার মির্জাপুরের মাছরাঙ্গা ফিলিং স্টেশনের চার কর্মচারী মীর আজাদুল ইসলাম, আবুল বাশার, ওয়াসিম মিয়া ও মো. আবদুল মান্নান এবং সন্দেজনক হিসেবে গ্রেপ্তার জাহাঙ্গীরের আত্মীয় আাসিফ ও আবু কাউছার স্বপন রয়েছেন। জাহাঙ্গীর গ্রেপ্তারের পর তাঁর তথ্যের ভিত্তিতে মামলার বাদীর প্রতিবেশী ইসমাইল হোসেন ও ছামাদ মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়; তবে এ দুজনও জামিনে ছাড়া পেয়েছেন।
মামলার বাদী মোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘এজাহারভুক্ত আসামি ছাড়া পেয়েছেন। এ কারণে অভিযোগপত্র কী ধরনের হবে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।’ বিষয়টি পুলিশের ওপর নির্ভর করছে উল্লেখ করে তিনি মামলার বিচারকাজ দ্রুত শুরুর দাবি জানান।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মির্জাপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শ্যামল কুমার দত্ত বলেন, অভিযোগপত্র দেওয়ার বিষয়টি পুলিশের পর্যবেক্ষণ সেলে রয়েছে। মামলার অগ্রগতি ও সেলের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্রুততম সময়ে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে। এজাহারভুক্ত জড়িত আসামিদের মধ্যে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের সংশ্লিষ্টতা নেই বললেই চলে, বলে তিনি উল্লেখ করেন।