মাঘের শীতে গ্রীষ্মের তরমুজ

আগাম বলে কদরও বেশি, চড়া দামে বিক্রয় হচ্ছে তরমুজ। টেকনাফের হাটবাজারের বিভিন্ন স্থানে প্রচুর পরিমাণের তরমুজের স্তূপ করা হয়েছে।  গতকাল দুপুরে টেকনাফ পুরাতন বাসস্টেশনে।  প্রথম আলো
আগাম বলে কদরও বেশি, চড়া দামে বিক্রয় হচ্ছে তরমুজ। টেকনাফের হাটবাজারের বিভিন্ন স্থানে প্রচুর পরিমাণের তরমুজের স্তূপ করা হয়েছে। গতকাল দুপুরে টেকনাফ পুরাতন বাসস্টেশনে। প্রথম আলো

মাঘের শীতেও কক্সবাজারের টেকনাফের হাটবাজারে মিলছে গ্রীষ্মের ফল তরমুজ। টেকনাফের ফলের দোকানগুলোতে এখন রীতিমতো তরমুজের স্তূপ। আগাম এই তরমুজ চাষ করে চাষিরা লাভবান হচ্ছেন। দাম বেশি হলেও বাজারে ভালো বিক্রি হচ্ছে সুস্বাদু এই ফল।

গত বৃহস্পতিবার টেকনাফ পৌরসভার পুরোনো বাসস্টেশন, জিরো পয়েন্ট ও থানা মোড় এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পুরোনো বাসস্টেশনে এলাকায় কয়েক হাজার তরমুজ নিয়ে বসেছেন কয়েকজন বিক্রেতা। এদের মধ্যে আছেন পল্লানপাড়ার মোহাম্মদ আলম বলেন, তিনি নিজেই আগাম লাভের জন্য তরমুজ চাষ করেছেন। প্রতিদিন কয়েক শ তরমুজ বিক্রি করেন তিনি। ভালো লাভ পেয়ে খুশি মোহাম্মদ আলম।

মোহাম্মদ আলম আরও বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় তরমুজের ভালো ফলন হয়েছে। শীত কমে গেলে এই তরমুজ চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করবেন বলে জানালেন তিনি।

বাহারছড়া ইউনিয়নের শীলখালীর তরমুজচাষি হামিদুর রহমান (৩৫) বলেন, দেশের অন্যান্য স্থানের তুলনায় এক-দুই মাস আগে টেকনাফের চাষিরা তরমুজ চাষে নামেন। আগাম চাষ করে বাড়তি কিছু লাভ করাই তাঁদের উদ্দেশ্য।

ওই বাজারেই কথা হয় পাইকারি ব্যবসায়ী নুরুল ইসলামের (৪০) সঙ্গে। তিনি বলেন, এক শ তরমুজ নয় হাজার টাকা করে কিনেছেন। প্রতিটি তরমুজের দাম পড়েছে ৯০ টাকা। এই তরমুজই এখন ১৫০ থেকে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ গত বছর এ আকারের তরমুজ বিক্রি হয়েছিল ৩০-৭০ টাকায়। বর্তমানে এ দামে কোনো তরমুজ পাওয়া যাচ্ছে না।

পুরোনো বাসস্টেশনের ফলের দোকান থেকে তরমুজ কিনছিলেন ঢাকার মাহবুবুর রহমান (৪৮)। সমুদ্রসৈকতে বেড়াতে আসা এই পর্যটক বলেন, ‘এই সময় তরমুজ দেখে আর লোভ সামলাতে পারলাম না। তাই দেড় হাজার টাকায় পাঁচটি তরমুজ কিনে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছি।’

সাবরাং ইউনিয়নের নয়াপাড়ায় তরমুজ চাষ করেছেন কবির আহমদ (৪২)। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এরই মধ্যে তিনি খেতের ৯৭ হাজার টাকার তরমুজ বিক্রি করেছেন। খেতে যে পরিমাণের তরমুজ আছে সেগুলো বিক্রি করলে আরও প্রায় দুই লাখের বেশি টাকা পাওয়া যাবে।

জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, চলতি মৌসুমে টেকনাফের ৪৯০ জন চাষি ১২৩ একর জমিতে তরমুজের চাষ করেছেন। এতে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২ হাজার ৭৫ মেট্রিকটন। গত বছরের তুলনায় এবার ফলনও ভালো হয়েছে। স্থানীয়ভাবে চাহিদা থাকায় মাঠপর্যায়ের চাষিরা ভালো দাম পাচ্ছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা করছেন তিনি।