মাদক পাচারের সঙ্গে বিজিবি সদস্যদের সংশ্লিষ্টতা নেই

ঢাকার পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাহিনীর পরিচালক (অপারেশন) লে. কর্নেল ফয়জুর রহমান
প্রথম আলো

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) পরিচালক (অপারেশন) লে. কর্নেল ফয়জুর রহমান দাবি করেছেন, মাদক পাচারের সঙ্গে বিজিবি সদস্যদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। অত্যন্ত কঠোরভাবে তাঁরা তা দমন করতে পেরেছেন। এগুলো এখন ‘জিরো’।

সীমান্ত দিয়ে আসা মাদক বিজিবি সদস্যরা জব্দ করতে পারছেন বলে দাবি করেছেন ফয়জুর রহমান। তবে সেই মাদক দেশে ছড়িয়ে পড়ছে কীভাবে, সেই প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি তিনি।

আজ বুধবার ঢাকার পিলখানায় বিজিবি সদর দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
ফেব্রুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিজিবির অভিযানের সাফল্য তুলে ধরতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে সাংবাদিকেরা মাদক চোরাচালান, এর সঙ্গে বিজিবি সদস্যদের সম্পৃক্ততার অভিযোগ, সীমান্ত হত্যা, বিজিবির সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়া এবং বিজিবি সদস্যদের মধ্যে করোনা সংক্রমণ নিয়ে প্রশ্ন করেন।

সীমান্ত দিয়ে মাদক আসার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে লে. কর্নেল ফয়জুর রহমান বলেন, বিজিবি সদস্যরা ২৪ ঘণ্টাই ৪ হাজার ৪২৭ কিলোমিটার সীমান্তে টহল দিচ্ছেন। তাঁরা সার্বক্ষণিক মাঠে হাজির আছেন। এই পর্যন্ত সীমান্ত দিয়ে যা মাদক এসেছে, তাঁরা সেগুলো জব্দ করতে পেরেছেন এবং করছেন।

গোয়েন্দা পুলিশের কর্মকর্তারা মাদক নিয়ন্ত্রণে বিজিবি সদস্যদের আরও সক্রিয় হতে বলেছেন—সাংবাদিকেরা এমন প্রসঙ্গ টানলে ফয়জুর রহমান বলেন, কারও ব্যক্তিগত মত বা দর্শন থাকতেই পারে। পুলিশ সদর দপ্তরের সঙ্গে তাঁদের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে। সেখান থেকে তাঁরা এ ধরনের কোনো পরামর্শ পাননি। তাই এ বিষয়ে তিনি কোনো কথা বলবেন না।

মাদক পাচারে বিজিবি সদস্যদের সম্পৃক্ততার অভিযোগের বিষয়ে ফয়জুর রহমান বলেন, ‘আমাদের যে অপারেশনাল ভুলের কথা বলছেন, সেগুলো আমরা অত্যন্ত কঠোরভাবে দমন করেছি। এখন সীমান্তে যে যে সম্পৃক্ততার কথা বলছেন সেগুলো নেই, জিরো। এ ধরনের কোনো জিনিস নেই। ২২৫ বছরের ইতিহাসে বিজিবি অনেকবার রিফর্ম হয়েছে। সবশেষ রিফর্ম অনুযায়ী বিজিবির কমান্ড চ্যানেল এবং কাঠামোয় চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স সিস্টেম একেবারেই লিক প্রুফ। নিজেরা নিজেদের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ায় নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হচ্ছি।’

গত ছয় মাসে বিএসএফের গুলিতে কতজন নিহত হয়েছেন এই প্রশ্নের জবাবে লে. কর্নেল ফয়জুর রহমান বলেন, ‘এই তথ্যগুলোও আপনাদের কাছে আছে। বিএসএফের গুলিতে নিহত হওয়ার বিষয়টা আপনারা সরাসরি বিএসএফের মহাপরিচালকের মতামতটাই পেয়েছেন। তারপরে তো আর কোনো ঘটনা ঘটেনি। এটা অবশ্যই পজিটিভ দিক।’

বিজিবি সদস্যদের মধ্যে করোনা সংক্রমণের বিষয়ে এই বিজিবি কর্মকর্তা বলেন, করোনায় আক্রান্ত হয়ে বিজিবির কেউ মারা যাননি। আক্রান্ত হয়েছেন ৫০-৬০ জন। দেশে সংক্রমণ শুরু হওয়ার আগেই বিশ্ব সংবাদ থেকে তাঁরা শিক্ষা নিয়েছেন এবং ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই সদস্যদের মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।