মানুষের এমন চলাচলে সংক্রমণ আবার বাড়বে

মোজাহেরুল হক

ঈদের সময় মানুষ ঘরমুখী হবে, এটা সবাই জানত। গত বছরও তা-ই হয়েছে। এবারও যে একই ঘটনা ঘটবে, তা কারও অনুমানের বাইরে ছিল না। এমন পরিস্থিতিতে উচিত ছিল, জনসাধারণের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি করা। পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিতসংখ্যক যাত্রী নিয়ে যাতে যানবাহন চলাচল করে, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে নজরদারির প্রয়োজন ছিল।

বাস্তবে দূরপাল্লার গণপরিবহন ছাড়া বাকি সবকিছুই চলছে। এ অবস্থায় করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা এমনিতেই রয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি না মেনে বহু মানুষ একসঙ্গে চলাচল করেছে। এই পুরো যাত্রাতেই সংক্রমণের ঝুঁকি আছে এবং তা সামনে আরও বাড়াবে। বলা যায়, সংক্রমণ এখন শহর থেকে গ্রাম পর্যায়ে ছড়াবে।

গত কয়েক দিনে মানুষের যে চলাচল দেখা গেল তাতে নিশ্চিতভাবে বলা যায়, সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা শতভাগ। দেশব্যাপী মানুষ চলাচল করেছে। মানুষকে সচেতন করতে হবে যেন কোনো রকম লক্ষণ দেখা মাত্রই অ্যান্টিজেন (নমুনা পরীক্ষার ফল দ্রুত পাওয়া যায়, তবে উপসর্গ না থাকলে নির্ভুল ফল আসে না) পরীক্ষা করে এবং করোনার চিকিৎসা নেয়।

বিশ্বে করোনার নতুন নতুন ধরন দেখা যাচ্ছে। এর মধ্যে কিছু ভেরিয়েন্ট (ধরন) বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। বিশেষ করে ভারতের ভেরিয়েন্ট খুব দ্রুত ফুসফুসের সংক্রমণ ঘটিয়ে মৃত্যুঝুঁকি তৈরি করে। এই ভেরিয়েন্ট আমাদের দেশে পাওয়া গেছে। যেহেতু এটা দ্রুত ফুসফুসে ছড়ায়, তাই তাড়াতাড়ি চিকিৎসা নিতে হবে। লক্ষণ দেখা মাত্রই পরীক্ষা করাতে হবে। করোনার নমুনা পরীক্ষার জন্য আরটিপিসিআরের (এই যন্ত্রের মাধ্যমে নমুনা পরীক্ষার ফল পেতে একটু সময় লাগলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে প্রায় নির্ভুল ফল আসে) অপেক্ষা না করে অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করতে হবে। ভারত থেকে বাংলাদেশে যে কেউ ঢোকামাত্রই তার করোনা পরীক্ষা করাতে হবে।

মোজাহেরুল হক: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের সাবেক উপদেষ্টা