মামলার সর্বশেষ অবস্থা জানা যাবে অ্যাপসে

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, ‘বিচারপ্রার্থী জনগণের বিচারে প্রবেশাধিকারসহ ন্যায়বিচার নিশ্চিত ও বিচারপ্রক্রিয়ায় সর্বস্তরে স্বচ্ছতা আনয়নের জন্য সুপ্রিম কোর্ট বদ্ধপরিকর। তথ্যপ্রযুক্তির বিপ্লবের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত হতে হলে ডিজিটাল প্রযুক্তির দক্ষতা অর্জনের বিকল্প নেই।’

সুপ্রিম কোর্ট অব বাংলাদেশ কজলিস্ট অ্যাপসের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আজ সোমবার বিকেলে প্রধান বিচারপতি এসব কথা বলেন। জুম অ্যাপসের মাধ্যমে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে অ্যাপসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন তিনি।

প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, অ্যাপসটি ব্যবহার করে বিচারপতি, আইনজীবী, আদালতের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সাধারণ ব্যবহারকারী, সর্বোপরি বিচারপ্রার্থী জনগণ সহজে অনলাইনে সুপ্রিম কোর্টের (আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগ) কার্যতালিকা ও মামলার সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানতে পারবেন। অ্যাপসটি বর্তমানে গুগল প্লে স্টোরে উন্মুক্ত করা হয়েছে।

এই অ্যাপসের মাধ্যমে বিচারপ্রার্থী সাধারণ জনগণ ঢাকায় না এসে তাঁর মামলা সার্চ করে মামলার হালনাগাদ এবং ফলাফলসহ সর্বশেষ তথ্যাদি তাৎক্ষণিকভাবে জানতে পারবেন।

প্রধান বিচারপতি বলেন, ভিশন ২০২১–এর অন্যতম প্রধান অংশ ডিজিটাল বাংলাদেশের মূল লক্ষ্য, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার রক্ষার পাশাপাশি মানুষের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিয়ে জীবনধারার মান উন্নত করা। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে বিচারপ্রার্থী জনগণের দোরগোড়ায় তথ্য ও সেবা পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্ট অনেক দূর এগিয়েছে।

বর্তমানে আপিল বিভাগে দুটি বেঞ্চ, চেম্বার আদালত এবং হাইকোর্ট বিভাগের ১৯টি দ্বৈত বেঞ্চ এবং ১৪টি একক বেঞ্চে ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতিতে বিচারকাজ পরিচালিত হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেন, কিশোরগঞ্জের নদী, হাওর অঞ্চল এবং বিদেশে অবস্থান করেও আইনজীবীরা ভার্চ্যুয়াল পদ্ধতিতে সুপ্রিম কোর্টে শুনানিতে অংশগ্রহণ করছেন। এই অ্যাপসের মাধ্যমে বিচারপ্রার্থী সাধারণ জনগণ ঢাকায় না এসে তাঁর মামলা সার্চ করে মামলার হালনাগাদ এবং ফলাফলসহ সর্বশেষ তথ্যাদি তাৎক্ষণিকভাবে জানতে পারবেন। এতে সুপ্রিম কোর্টে বিচারকাজ আরও স্বচ্ছ ও গতিশীল হবে। একটি আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর বিচার বিভাগের অগ্রযাত্রায় এটি একটি নতুন সংযোজন।

অ্যাপসটি চালুর জন্য সবাইকে অভিনন্দন জানিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘১৯৯৬ সালে প্রথমবার সরকার গঠন করার পরই জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের দ্বার উন্মোচন করেন। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে আজ ডিজিটালাইজেশনের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। আজকের এ আয়োজন প্রমাণ করে যে বিচার বিভাগও পিছিয়ে নেই।’

অ্যাটর্নি জেনারেল ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘অ্যাপস উদ্বোধনের মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশে গড়ার দিকে আরও একধাপ এগিয়ে গেলাম। এই অ্যাপস ব্যবহার করে বিচারপ্রার্থী জনগণের দোরগোড়ায় তথ্য পৌঁছে দেওয়ার সুযোগ হলো। এখন দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে মানুষ সুপ্রিম কোর্টে যেকোনো মামলার বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে পারবেন।’

সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. আলী আকবরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগের বিচারপতি, আইনজীবী সমিতির সম্পাদকসহ কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য, সুপ্রিম কোর্টের কর্মকর্তা ও আইনজীবীরা যুক্ত ছিলেন।