মাশরাফি নির্বাচনী প্রচারণায় ছিলেন 'অতুলনীয়'

মাশরাফি বিন মুর্তজা
মাশরাফি বিন মুর্তজা

নির্বাচন মানেই আচরণবিধি লঙ্ঘন, ভোটে জিততে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় ও প্রতিপক্ষের ওপর হামলা–সংঘর্ষ ইত্যাদি। তবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারণায় এর অনেকটাই ব্যতিক্রমী ছিলেন ক্রিকেট তারকা ও নড়াইল-২ (লোহাগড়া-সদরের একাংশ) আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাশরাফি বিন মুর্তজা। অর্থ দিয়ে কিংবা প্রতিপক্ষকে আঘাত করে নয়, ভালোবাসা আর যোগ্যতা দিয়েই সাধারণ মানুষের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন এবং ভোট চেয়েছেন তিনি। আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মী ও উপজেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে গতানুগতিক নির্বাচনী পরিবেশ থেকে মাশরাফির বেরিয়ে আসার এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

কয়েকটি সূত্রে জানা গেছে, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর নির্বাচনী খরচ বাবদ প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ের কথা মাশরাফিকে ধারণা দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা। তিনি তখন সাফ জানিয়ে দেন, ‘টাকার বিনিময়ে কেন ভোট হবে? আমাকে যোগ্য মনে করলে লোকে ভোট দেবে। যোগ্য মনে না করলে ভোট দেবে না।’

নির্বাচনী প্রচারণাতেও বারবার মাশরাফি বলেছেন, ‘আমাকে যোগ্য মনে করলে বিবেচনা করবেন।’

এ বিষয়ে লোহাগড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক ও ইতনা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ সিহানুক রহমান বলেন, ‘মাশরাফি এ পর্যন্ত নির্বাচনসংক্রান্ত কোনো টাকা খরচ করেননি। আমরা আওয়ামী লীগ নেতারা প্রত্যেকে যার যার এলাকার দায়িত্ব নিয়ে নির্বাচন চালাচ্ছি।’

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং লোহাগড়া ইউপি চেয়ারম্যান শিকদার নজরুল ইসলাম বলেন, ‘মাশরাফির পরিবার থেকে এক কাপ চাও খাইনি। টাকা ছাড়া যে নির্বাচন হয়, তা এই প্রথম দেখলাম। তবে মাশরাফির প্রতি সাধারণ জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত আগ্রহ থাকার কারণে এটি সম্ভব হচ্ছে।’

নির্বাচনী প্রচারণার জন্য মাশরাফি ২২ ডিসেম্বর নড়াইলে আসেন। পথসভা ও মতবিনিময় মিলে এ পর্যন্ত প্রায় ১৫০ বার বক্তব্য দিয়েছেন। সব জায়গায় এক থেকে দেড় মিনিটের মধ্যে ছিল তাঁর বক্তব্য। এসব বক্তব্যে তিনি প্রতিপক্ষ দল বা প্রার্থীদের কারও প্রতি বিষোদ্‌গার করেননি।

নির্বাচনী প্রচারণায় আচরণবিধি লঙ্ঘন হয় এমন কাজ মাশরাফি করেননি। মাশরাফির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ধানের শীষের প্রার্থী ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপির) চেয়ারম্যান এ জেড এম ফরিদুজ্জামান। নির্বাচনী প্রচার নিয়ে এনপিপির জেলা আহ্বায়ক বেলাল আহমদ বলেছেন, মাশরাফি খুবই ভালো মানুষ। প্রতিপক্ষকে সম্মান দিয়ে তিনি নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছেন।

সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মুকুল কুমার মৈত্র বলেন, মাশরাফির বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের কোনো অভিযোগ এ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।