মিজানুরের মুখের হাসির আড়ালে মনে শঙ্কা

মিজানুর রহমান

লালমনিরহাট সদর উপজেলার কুলাঘাট ইউনিয়নের ধরলা নদীপাড়ের গ্রাম চরকুলাঘাট। গ্রামের অনেকের মুখেই এখন মিজানুর রহমানের নাম। মিজানুর মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় (এমবিবিএস) ১ হাজার ৯৭৩তম হিসেবে উত্তীর্ণ হয়েছেন। ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে। এ খবর মিজানুরের পাশাপাশি গ্রামের বাসিন্দাদের মুখে হাসি ফোটালেও বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে অর্থসংকট।

টাকার অভাবে ভর্তির সুযোগ মিলবে কি না, সে শঙ্কা মিজানুরের মনেও। গত সোমবার বিকেলে চরকুলাঘাট গ্রামে গিয়ে জানা যায়, মিজানুরের বাবা ২০১২ সালে মারা যান। মা জোবেদা বেগম স্বামীর রেখে যাওয়া কয়েক শতক জমির ওপর নির্ভর করে সংসার চালান। বড় তিন ভাই বিয়ে করে আলাদা হয়েছেন। বোনেরও বিয়ে হয়েছে। তাঁদের কারও পক্ষেই মিজানুরের ডাক্তারি পড়াশোনার খরচ চালানো সম্ভব নয়।

মিজানুর রহমানের মা জোবেদা বেগম বলেন, ‘মিজানক (মিজানুর) ছোট থুইয়া ওর বাপ মইরা গেল। আমি পাঁচ ছেলে আর এক মেয়ে নিয়া দুঃখের সাগরে ভাসছি। সামান্য কয়েক শতক জমি আর হাঁস–মুরগির ডিম বেচে ও মুষ্টির চাল জমায়ে কোনো রকমে সংসার চালাইছি। এখন মিজান ডাক্তারি পড়ার সুযোগ পাইল, টাকাপয়সা জমা নাই, কেমনে কী হবো?’

মিজানুর রহমান বলেন, নবম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় টিউশনি করতেন। সে টাকায় পড়ার খরচের পাশাপাশি সংসারে দিতেন। ভর্তি ও এরপর বরিশালে থেকে ডাক্তারি পড়তে যে টাকা খরচ হবে প্রতি মাসে, তা জোগাড় করা তাঁর পক্ষে কঠিন।