মির্জাপুরে আটিয়া বন অধ্যাদেশ বাতিল দাবি

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার গায়রাবেতিল উচ্চবিদ্যালয় মাঠে ​আটিয়া বন অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে গতকাল এলাকাবাসী সমাবেশ করেন l ছবি: প্রথম আলো
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার গায়রাবেতিল উচ্চবিদ্যালয় মাঠে ​আটিয়া বন অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে গতকাল এলাকাবাসী সমাবেশ করেন l ছবি: প্রথম আলো

আটিয়া বন অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার পাহাড়ি অঞ্চলের সহস্রাধিক নারী-পুরুষ সমাবেশ করেছেন। গতকাল শুক্রবার বিকেলে উপজেলার বাঁশতৈল ইউনিয়নের গায়রাবেতিল উচ্চবিদ্যালয় মাঠে এই সমাবেশ হয়।
এলাকাবাসী ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, টাঙ্গাইলসহ আশপাশের কয়েকটি এলাকার জমি ১৯২০ সালে সেটেলমেন্ট রেকর্ডভুক্ত হওয়ার পর তৎকালীন সরকার ১৯২৭-২৮ সালে গেজেট মূলে মির্জাপুরসহ আশপাশের কয়েকটি অঞ্চলের জায়গা বন বিভাগের কাছে ন্যস্ত করে। সরকার ১৯৮২ সালে আটিয়া অধ্যাদেশ জারি করে। বসতবাড়িসহ সাধারণ মানুষের ১৯৬২ সালের রেকর্ডভুক্ত জমিও এই অধ্যাদেশের আওতায় আনা হয়। এই অধ্যাদেশের আওতায় বর্তমানে প্রায় ৪৫ হাজার একর জমি রয়েছে।
উপজেলার বাঁশতৈল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বাঁশতৈল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শামসুল আলম, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম, গায়রাবেতিল উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোশারফ হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সুনীল সারথি বর্মণ, উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক সেলিম সিকদার, যুগ্ম আহ্বায়ক আজাহারুল ইসলাম, বাঁশতৈল ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি জাকির হোসেন প্রমুখ। বেলা তিনটার দিকে শুরু হয়ে সমাবেশ চলে পৌনে ছয়টা পর্যন্ত।
এর আগে ২৭ জানুয়ারি গায়রাবেতিল গ্রামে বন বিভাগের জায়গায় বিল্লাল হোসেন নামের এক ব্যক্তির নির্মাণাধীন ভবন উচ্ছেদ অভিযানের প্রেক্ষাপটে গ্রামবাসী ও বন বিভাগের কর্মচারীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা হয়। এরপর এলাকাবাসী বাঁশতৈল রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. ফরিদ আহমেদ ভূঁইয়ার প্রত্যাহার দাবিতে মির্জাপুরের গোড়াই-সখীপুর সড়ক অবরোধ করেন। পরে ফরিদ আহমেদকে প্রত্যাহারের বিষয়ে স্থানীয় সাংসদ একাব্বর হোসেনের আশ্বাস পেয়ে এলাকাবাসী অবরোধ তুলে নেন। তবে রেঞ্জ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার না করার প্রতিবাদে এবং তাঁদের বসতভিটায় নির্বিঘ্নে বসবাসের জন্য গতকাল এলাকাবাসী আটিয়া বন অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে এই প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দেন।
সমাবেশে অংশ নেওয়া পাঁচগাঁও গ্রামের বাসিন্দা শেখ ফজলুল করিম বলেন, যুগ যুগ ধরে বসত করে আসা তাঁদের পৈতৃক ভিটা থেকে সরকার ‘কালো’ আইনের মাধ্যমে উচ্ছেদের চেষ্টা করছে। গায়রাবেতিল গ্রামের এছাক মিয়া ও সাইদুর রহমান বলেন, এই অধ্যাদেশের কথা বলে বন বিভাগের লোকজন তাঁর ঘর ভেঙে দিয়েছে।
বাঁশতৈল রেঞ্জ কর্মকর্তা ফরিদ আহমেদ বলেন, সমাবেশের কথা তিনি শুনেছেন। তবে যাঁরা সরকারি জায়গা দখলের চেষ্টা করবেন তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।