মীর কাসেমের সঙ্গে ছেলে-আইনজীবীদের সাক্ষাৎ

মীর কাসেম আলী
মীর কাসেম আলী

মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-২-এ বন্দী জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর সঙ্গে তাঁর ছেলে ও দুই আইনজীবী সাক্ষাৎ করেছেন। আজ বুধবার তাঁরা মীর কাসেম আলীর সঙ্গে দেখা করেন।
কাশিমপুর কারাগার পার্ট-২-এর জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বণিক প্রথম আলোকে বলেন, আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মীর কাসেম আলীর ছেলে মীর আহমেদ বিন কাসেম, আইনজীবী মতিউর রহমান আকন্দ ও এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিক তাঁর (মীর কাসেম আলী) সঙ্গে দেখা করতে কারাগারে আসেন। প্রায় আধা ঘণ্টা তাঁরা কারাগারে একটি কক্ষে মীর কাসেম আলীর সঙ্গে কথা বলেন।
মীর কাসেম আলী কাশিমপুর কারাগার পার্ট-২-এর ফাঁসির কনডেম সেলে বন্দী আছেন।
মুক্তিযুদ্ধকালের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ২০১৪ সালের ২ নভেম্বর মীর কাসেমকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২। ট্রাইব্যুনালের ওই রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরের ৩০ নভেম্বর সর্বোচ্চ আদালতে আপিল করেন মীর কাসেম। আপিল শুনানি শেষে দেশের সর্বোচ্চ আদালতও ফাঁসির দণ্ড বহাল রাখেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী জামায়াত নেতা মীর কাসেম ছিলেন কুখ্যাত গুপ্তঘাতক আলবদর বাহিনীর চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রধান। তিনি ১৯৭০ সালে চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ শাখা ইসলামী ছাত্রসংঘের (জামায়াতের তৎকালীন ছাত্রসংগঠন) সভাপতি হন। একাত্তরের ২৫ মার্চ থেকে ৬ নভেম্বর পর্যন্ত তিনি চট্টগ্রাম শহর শাখা ছাত্রসংঘের সভাপতি ছিলেন। ৭ নভেম্বর তিনি পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রসংঘের সাধারণ সম্পাদক হন। স্বাধীনতার পর ১৯৭৭ সালে ইসলামী ছাত্রসংঘ নাম বদলে ইসলামী ছাত্রশিবির নামে আত্মপ্রকাশ করলে মীর কাসেম এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হন। ১৯৮০ সালে তিনি রাবেতা আল-আলম আল-ইসলামী নামের একটি বিদেশি বেসরকারি সংস্থার এদেশীয় পরিচালক হন। ১৯৮৫ সাল থেকে তিনি জামায়াতের শুরা সদস্য। তিনি দিগন্ত মিডিয়া করপোরেশনের চেয়ারম্যান। 

মীর কাসেমের নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনায় মুক্তিযুদ্ধকালে চট্টগ্রাম শহরের আন্দরকিল্লা এলাকার ডালিম হোটেলে স্থাপিত হয় আলবদর বাহিনীর ক্যাম্প ও নির্যাতনকেন্দ্র। একাত্তরে চট্টগ্রামে এই ডালিম হোটেলকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হতো সব ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধ, যার তত্ত্বাবধানে ছিলেন মীর কাসেম। এ কারণে ডালিম হোটেল মানুষের কাছে পরিচিতি পায় হত্যাপুরী হিসেবে। আর নৃশংসতার জন্য মীর কাসেমের পরিচয় হয় ‘বাঙালি খান’।