মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্র-গোলাবারুদের ঘাটতি নিয়ে চিন্তা

একাত্তরে প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধি হিসেবে ভারত সরকারের উচ্চপর্যায়ের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেন মঈদুল হাসান। পরবর্তী সময়ে তিনি লিখেছেন মূলধারা ’৭১ এবং উপধারা একাত্তর, মার্চ-এপ্রিল নামে দুটি বই। বিভিন্ন দেশে অবমুক্ত হওয়া মুক্তিযুদ্ধের দলিলপত্র ঘেঁটে ও তাঁর নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে তিনি লিখছেন আরও একটি বই। তাঁর প্রকাশিতব্য সেই বইয়ের ত্রয়োদশ অধ্যায়ের দ্বিতীয় কিস্তি প্রকাশিত হলো আজ।

মঈদুল হাসান

সবাই জানতেন দেশের অভ্যন্তরে, এমনকি সীমান্ত এলাকায় দু-একটি ব্যতিক্রম বাদে মুক্তিযোদ্ধারা তখনো প্রত্যাশিত ভূমিকা পালন করে উঠতে পারছেন না। মোটামুটি এ কথাও তাঁরা জানতেন, এর প্রধান কারণ মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্রশস্ত্রের নিদারুণ স্বল্পতা এবং গোলাবারুদের অভাব। তাঁরা ধরেই নিতেন, এই করুণ অবস্থার জন্য দায়ী ভারত সরকারের অনুদার সরবরাহের নীতি। এই অভিযোগ জোরালোভাবে উত্থাপিত হয়েছিল জনপ্রতিনিধিদের সম্মেলন শুরু হওয়ার পর। সম্মেলন শুরু হওয়ার ঠিক আগমুহূতে৴ নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় পরিষদ সদস্য মিজানুর রহমান চৌধুরী ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলামকে ১৪ পৃষ্ঠার দীর্ঘ এক চিঠি পাঠান। মিজান চৌধুরী বাংলাদেশ মন্ত্রিসভা বা অন্য কোনো সরকারি দায়িত্বে নিযুক্ত ছিলেন না। ষাটের দশকে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদে আওয়ামী লীগদলীয় সুবক্তা হিসেবে যথেষ্ট সুনাম পেয়েছিলেন। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে ১৯৭১ সালের মার্চে ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে সেই উচ্চপর্যায়ের আলোচনায় আওয়ামী লীগ প্রধানের সঙ্গে কোনো দায়িত্বশীল কাজে তিনি নিযুক্ত হতে পারেননি। উপদেষ্টা হিসেবে কোনো স্থান না পাওয়ায় তিনি প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রিসভার কেউ ছিলেন না।

মিজান চৌধুরী চিঠিতে লেখেন: ‘আমাদের বন্ধুরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে আমাদের যোদ্ধাদের প্রয়োজনীয় সবকিছু তাঁরা সরবরাহ করবেন। কিন্তু নিরেট সত্য কথা হলো, আমাদের যোদ্ধারা কখনো তা পায়নি। আমি সমস্যাগুলো লে. কনে৴ল রবের সঙ্গে আলোচনা করে জানতে পেরেছি, আমাদের যোদ্ধাদের প্রয়োজন দায়সারাভাবে দেখা হয়েছে।...সবচেয়ে খামখেয়ালির সঙ্গে দেখা হচ্ছে যোদ্ধাদের সমরাস্ত্র ও গোলাগুলি সরবরাহের বিষয়টি। গোলাগুলি সরবরাহের ব্যাপারে তাদের কাপ৴ণ৵ অবিশ্বাস্য।
মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ। ১ এপ্রিল ১৯৭১
ছবি: আনন্দবাজার পত্রিকা

ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতিকে লিখিত সেই চিঠিতে মিজান চৌধুরী জানান যে জুন মাসের কয়েক সপ্তাহ তিনি ত্রিপুরা, মেঘালয় ও আসামের কয়েকটি অঞ্চল সফর করে মুক্তিযোদ্ধাদের দুরবস্থা প্রত্যক্ষ করেছেন। তিনি সর্বত্র অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং সামরিক অভিযানের জন্য অত্যাবশ্যক সব সামগ্রীর তীব্র অভাব দেখেছেন। ফলে সমগ্র পূর্বাঞ্চলে মুক্তিযোদ্ধারা লড়াই করার উদ্যম হারিয়ে ফেলেছেন।

ভারতের ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্তৃপক্ষের কাছে পেশ করা এই রিপোটে৴ বলা হয়, ‘এসব এলাকায় মুক্তিফৌজের প্রশিক্ষিত সৈনে৵র কোনো স্বল্পতা নেই, কিন্তু অস্ত্রশস্ত্রের সরবরাহে ঘাটতির অভিযোগ সবখানেই রয়েছে। আমাদের বলা হয়, সরবরাহের এই ঘাটতি কীভাবে ঘটছে, তা নিণ৴য় করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এখনো অপরাগ।...

মিজান চৌধুরী চিঠিতে লেখেন: ‘আমাদের বন্ধুরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে আমাদের যোদ্ধাদের প্রয়োজনীয় সবকিছু তাঁরা সরবরাহ করবেন। কিন্তু নিরেট সত্য কথা হলো, আমাদের যোদ্ধারা কখনো তা পায়নি। আমি সমস্যাগুলো লে. কনে৴ল রবের সঙ্গে আলোচনা করে জানতে পেরেছি, আমাদের যোদ্ধাদের প্রয়োজন দায়সারাভাবে দেখা হয়েছে।...সবচেয়ে খামখেয়ালির সঙ্গে দেখা হচ্ছে যোদ্ধাদের সমরাস্ত্র ও গোলাগুলি সরবরাহের বিষয়টি। গোলাগুলি সরবরাহের ব্যাপারে তাদের কাপ৴ণ৵ অবিশ্বাস্য। বিশ্বাস করুন বা না করুন, আমাদের মুক্তিফৌজের একজন যোদ্ধাকে প্রতিদিনের জন্য দেওয়া হয় ১০ রাউন্ড গুলি। আমি জানি না কীভাবে যান্ত্রিকভাবে সুসজ্জিত সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমাদের মুক্তিফৌজের যোদ্ধাদের সারা দিনের জন্য ১০টি মাত্র গুলি বরাদ্দ করা হচ্ছে। আমি জানি না একটি শৌখিন শিকারির জন্য দিনে ১০টি গুলির বরাদ্দ পর্যাপ্ত কি না।...আমাকে বলা হয়েছে—আমাদের ছেলেরা যারা গেরিলাযোদ্ধা হিসেবে ট্রেনিং পেয়েছে, তাদের অধিকৃত এলাকায় শত্রুপক্ষের ৫ থেকে ১০ জনের একটি গ্রুপে সংঘবদ্ধ করে, একটি বা দুটি গ্রেনেড এবং একটি বা দুটি পুরোনো বাতিল হওয়ার যোগ্য সাবেক আমলের অস্ত্র তাদের হাতে দিয়ে শত্রু অধিকৃত এলাকায় পাঠানো হয়। ওই অবস্থায় তাদের অধিকাংশই শত্রুর অসহায় শিকারে পরিণত হয়। সাধারণ যোদ্ধাদের কথা না হয় বাদই দেওয়া হলো, তাদের অধিনায়কদের হাতেও সামান্য অস্ত্রশস্ত্র থাকে।...অস্ত্র সহায়তা লাভে আমাদের কী ব্যবস্থা করা হয়েছে তা বিশদভাবে আমি জানি না। কিন্তু মাতৃভূমি মুক্ত করাই যদি আমাদের লক্ষ্য হয়ে থাকে, তবে আর সময় নষ্ট না করে কী ধরনের অস্ত্র সহায়তা আমাদের প্রয়োজন, তা এই মুহূর্তেই প্রকাশ করা দরকার। আমাদের অবশ্যই জানাতে হবে, বর্তমান যুদ্ধে জয়লাভের জন্য পর্যাপ্ত অস্ত্রের সহায়তা কি আমরা পেতে চলেছি, না বিদেশ থেকে এই অস্ত্র আমদানি করার প্রয়োজন হবে।’

ভারতের প্রতিবেদন

সম্মেলন শুরু হওয়ার দুই দিন আগে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতিকে দেওয়া এই ‘গোপনীয়’ চিঠি কীভাবে সম্মেলনে যোগদানকারীদের মধে৵ এমনভাবে রাষ্ট্র করা হয়েছিল এবং এর ফলে তাঁদের মধে৵ কী প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছিল, তা আলোচনার প্রয়োজন নেই। তবে মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থা যে ভারত সরকারের অজানা ছিল না বা তা জেনেও তারা যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা থেকে বিরত ছিল, ঘটনা ঠিক তেমনও ছিল না। বস্তুত, ৬ থেকে ১৬ জুনের মধে৵ ত্রিপুরা, মেঘালয় ও আসামে এ বিষয়ে বিরাজমান বাস্তব অবস্থা সরেজমিন দেখার পর ভারত সরকারের গঠিত একটি তদন্ত কমিটিও তাদের সরকারকে একটি রিপোর্ট প্রদান করে। এই কমিটি গঠিত হয় ওই সব এলাকার কর্মরত ভারতীয় সামরিক কর্মকর্তাদের নিয়ে। তাঁরা তথ্য সংগ্রহের জন্য আলোচনা করেছেন ওই সব অঞ্চলে বাংলাদেশের সেক্টর কমান্ডারদের সঙ্গে।

ভারতের ঊর্ধ্বতন সামরিক কর্তৃপক্ষের কাছে পেশ করা এই রিপোটে৴ বলা হয়, ‘এসব এলাকায় মুক্তিফৌজের প্রশিক্ষিত সৈনে৵র কোনো স্বল্পতা নেই, কিন্তু অস্ত্রশস্ত্রের সরবরাহে ঘাটতির অভিযোগ সবখানেই রয়েছে। আমাদের বলা হয়, সরবরাহের এই ঘাটতি কীভাবে ঘটছে, তা নিণ৴য় করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এখনো অপরাগ।...মুক্তিফৌজের সেক্টর কমান্ডারদের অধিকাংশেরই পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অংশ হিসেবে ১৯৬৫ সালের পশ্চিম অঞ্চলের রণাঙ্গনে যুদ্ধে অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতা রয়েছে। এই অভিজ্ঞ লোকেরাই অস্ত্রপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে অপ্রতুলতার অভিযোগ তুলেছেন। তাঁরা সবাই বলেন, কোনো যুদ্ধে যোদ্ধাদের কাছ থেকে প্রতিপক্ষ যে অস্ত্র ছিনিয়ে নিতে পারবে না, এমন নিশ্চয়তা দেওয়া সম্ভব নয়। প্রতিপক্ষ অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার ফলে ভারত সরকারকে যদি অসুবিধা ও বিড়ম্বনার মধে৵ পড়তে হয়, তাহলে ভারতের বাইরে অন্য যেকোনো দেশ থেকে তাদের জন্য অস্ত্র সংগ্রহের ব্যবস্থা করা দরকার।’ (এযাবৎ মুক্তিফৌজ যে সব লড়াই করছে, তা সবই করছে পাকিস্তান থেকে ছিনিয়ে আনা অস্ত্র দিয়ে।)

অর্থাৎ ইতিপূবে৴ ৭ মে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ মন্ত্রিসভাকে ভারতীয় মার্কাযুক্ত অস্ত্র বাংলাদেশের যোদ্ধাদের সরবরাহ করার ক্ষেত্রে যে অসুবিধার কথা বলেছিলেন, পাঁচ সপ্তাহ পরও তার কোনো সুরাহা ঘটেনি। বিদেশ থেকে অস্ত্র আমদানির সম্ভাবনা, যা সেই সময় অনুমোদিত হয়েছিল, তা-ও তখন পর্যন্ত কার্যকর করা হয়নি সেগুলোর মহার্ঘের কারণে। প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব তহবিল ছিল অতি সামান্য। অন্যদিকে ভারত সরকার ক্রমবর্ধমান শরণার্থী ফেরত পাঠানোর পক্ষে যদিও আপসহীন, তবু তা করার জন্য পৃথিবীর বৃহৎ শক্তিগুলোর মিলিত উদ্যোগে এই সংকটের কূটনৈতিক সমাধানের সম্ভাবনা একেবারে নেই, এমন সিদ্ধান্তেও তারা পৌঁছায়নি। কাজেই বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য অমন ব্যয়বহুল আমদানির দিকে তারাও এর মধে৵ এগিয়ে যায়নি। ‘মুক্তিফৌজ’, অর্থাৎ সাবেক ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট এবং ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলসের সমন্বয়ে গঠিত বাংলাদেশ ফোসে৴সের সেনাসংখ্যা তখন ১৫ হাজার অথবা তার কাছাকাছি। তাদের অধিকাংশই যুদ্ধে অভিজ্ঞ ও পারদর্শী যোদ্ধা। অথচ তাঁরাই অস্ত্র এবং তাঁদের সঙ্গে আনা স্বল্পসংখ্যক চীনা সমরাস্ত্রের পর্যাপ্ত গোলাবারুদের অভাবে যুদ্ধকমে৴ তাঁরা অপারগ। এর বাইরে প্রতি মাসে পাঁচ হাজার ছাত্র ও যুবক এক মাসব্যাপী অস্ত্রবিদ্যার ট্রেনিং নিয়ে ‘মুক্তিযোদ্ধা’ হতে শুরু করেছেন, তাঁদের হাতেও অস্ত্র দেওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। কাজেই সেখানেও অবস্থা ছিল নৈরাশ্যজনক।

মুক্তিযোদ্ধাদের দক্ষতা ও আগ্রহের প্রশংসা

ভারতের মাঠপর্যায়ের তদন্ত কমিটি অস্ত্র সরবরাহের এই নৈরাশ্যজনক অবস্থা পরিবর্তনের কোনো সুপারিশ করতে পারেনি। কিন্তু ‘মুক্তিফৌজের’ নিয়মিত সেনাদের ও যুদ্ধ করার দক্ষতা ও আগ্রহের প্রশংসা করেন এভাবে:

‘এ দেশে বিদ্যমান ধারণা হলো, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আক্রমণ যখন গ্রামাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে, তখনই মুক্তিফৌজ সম্পূর্ণ ভেঙে যায়। এ ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। আমাদের কাছে নির্দিষ্ট প্রমাণ আছে যে পাকিস্তানি সেনারা তাদের ভারী কামান ও বিমান থেকে আক্রমণ চালানো সত্ত্বেও অধিকাংশ স্থানেই তারা তীব্র প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়। যেমন কুমিল্লা জেলার ফেনীতে পাকিস্তানি বাহিনী প্রায় দুই মাস আগে আক্রমণ শুরু করলেও অবশেষে ১০ মে তারা যে মুক্তিফৌজের প্রতিরোধ ভাঙতে সক্ষম হয়েছে, তা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। সমান তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হলো, যে কথা ভারতীয় অফিসাররাও সমর্থন করেন, পাকিস্তানি সেনাদের মনোবলই বরং এর ফলে হ্রাস পায়। এখনো তারা সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণের ভয়ে নিজেদের ক্যাম্পের মধে৵ই থাকে।

‘সামরিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থান যা মুক্তিফৌজ দখল করে ছিল, তা উদ্ধার করার জন্য পাকিস্তান দুই সেনা ব্রিগেড নিয়োগ করে। এই আক্রমণ প্রতিহত করার জন্য বাংলাদেশ সেক্টর কমান্ডার মরিয়া এক বার্তায় (এসওএস) আরও কিছু অস্ত্র পাঠানোর অনুরোধ জানান। আমরা জানতে পারি, তাঁদের এর আগে মাত্র ১৭ রাউন্ড করে গুলি দেওয়া হয়েছিল। এই সাহায্য যে কতখানি অপ্রতুল তা উপলব্ধির জন্য উল্লেখ করা যেতে পারে যে আমাদের দেশে একটি ছাত্র বিক্ষোভ ছত্রভঙ্গ করার জন৵ও ৩০ থেকে ৪০ রাউন্ড গুলি দেওয়া হয়ে থাকে।

শোনা যায়, মুক্তিযোদ্ধাদের ক্ষতস্থানে লবণ ছিটানোর মতো করে বিএসএফ মুক্তিফৌজকে সম্পূর্ণ নিরস্ত্র করে এবং তারা যাতে কোনো রকম আক্রমণে না যেতে পারে, তার সম্পূর্ণ ব্যবস্থা নেয়, এবং তারা তা করে এই যুক্তিতে যে পাকিস্তানি সেনারা যাতে ভারত অভিমুখে কোনো পাল্টা অভিযান না চালায়।…আমরা জানতে পেরেছি, করিমগঞ্জের জকিগঞ্জ এলাকায় পাকিস্তানি সেনাদের একটি অবস্থান আক্রমণ করার জন্য বিএসএফ মুক্তিযোদ্ধাদের নিশ্চয়তা দিয়েছিল, দুর্ভাগে৵র বিষয় মুক্তিফৌজকে পাকিস্তানি সেনারা যখন পাল্টা-আক্রমণ শুরু করে, বিএসএফ তখন সেই সহায়তা না দিয়ে তাদের নিজেদের ঘাঁটি, গোলাবারুদ, যানবাহন ফেলে রেখে গভীর ভারতীয় অঞ্চলে পশ্চাদপসরণ করে। পাকিস্তানি সেনারা চার-পাঁচ দিন ভারতীয় এলাকায় ঘাঁটিতে অবস্থান করে নিজেদের ঘাঁটিতে ফিরে যায়।’

(চলবে)