মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিনজনকে খালাসের রায় স্থগিত

হাইকোর্ট
ফাইল ছবি

কক্সবাজারে অপহরণের পর শিশু হৃদয়কে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিনজনকে খালাস দিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায় আট সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছেন চেম্বার আদালত। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ বুধবার চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী এ আদেশ দেন।

ওই মামলায় মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে আসামিদের আপিল ও ডেথরেফারেন্সের (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) ওপর শুনানি শেষে ৭ ডিসেম্বর হাইকোর্ট তিনজনকে খালাস দিয়ে রায় দিয়েছিলেন। তাঁরা হলেন মিয়ানমারের নাগরিক মো. আবদুল খালেক, আবদুস শুক্কুর ও চট্টগ্রামের চান্দানাইশের মো. বাহাদুর মিয়া।

ওই মামলায় দুই আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবাবন্দি দিয়ে হৃদয়কে হত্যার পুরো বর্ণনা করেছেন। যে ফোন দিয়ে চাঁদা দাবি ও হুমকি দেওয়া হয়, সেই ফোন ও সিমকার্ড অন্য আসামি শুক্করের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। হৃদয়কে স্কুল থেকে ফুঁসলিয়ে ওই তিনজনকে নিতে দেখেছেন একজন সাক্ষী।

হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে ১৭ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ পৃথক তিনটি আবেদন করে, যা আজ চেম্বার আদালতে শুনানির জন্য ওঠে। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যার্টনি জেনারেল মো. বশির উল্লাহ।

পরে ডেপুটি অ্যার্টনি জেনারেল মো. বশির উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, হাইকোর্টের রায় স্থগিত হওয়ায় তিন আসামিকে আপাতত কনডেমড সেলে থাকতে হচ্ছে। হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায়ের অনুলিপি পাওয়ার পর রাষ্ট্রপক্ষ নিয়মিত লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করবে।

প্রাপ্ত তথ্যমতে, ২০১৩ সালের ৪ জুলাই কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছটার বাসিন্দা নুরুল হকের ছেলে হৃদয়কে (৬) অপহরণ করে তিন লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়।

পরদিন পুলিশ সমুদ্রসৈকতের সুগন্ধা পয়েন্ট থেকে শিশুর লাশ উদ্ধার করে। ওই ঘটনায় ২০১৩ সালের ৬ জুলাই নুরুল হক বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় মামলা করেন। মামলায় ২০১৪ সালের ২০ এপ্রিল হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে আবদুল খালেক, বাহাদুর মিয়া, আবদুস শুক্কুর ও জসিমের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। ওই মামলায় ২০১৫ সালের ৭ জুন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. সাদিকুল ইসলাম তালুকদার রায় দেন।

রায়ে জসিমকে খালাস দিয়ে অন্য তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। আসামিদের মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য ডেথরেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। অন্যদিকে দণ্ডিত আসামিরা জেল আপিল ও নিয়মিত আপিল করেন। এসবের ওপর একসঙ্গে শুনানি নিয়ে ৭ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রায় দেন।

ডেপুটি অ্যার্টনি জেনারেল মো. বশির উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ওই মামলায় দুই আসামি স্বীকারোক্তিমূলক জবাবন্দি দিয়ে হৃদয়কে হত্যার পুরো বর্ণনা করেছেন। যে ফোন দিয়ে চাঁদা দাবি ও হুমকি দেওয়া হয়, সেই ফোন ও সিমকার্ড অন্য আসামি শুক্করের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। হৃদয়কে স্কুল থেকে ফুঁসলিয়ে ওই তিনজনকে নিতে দেখেছেন একজন সাক্ষী। এসব যুক্তিতে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে পৃথক তিনটি আবেদন করা হয়।